খাবারে ভেজাল কেউ পছন্দ করে না, কাপড় ময়লা হলে আমরা চট করে ধুয়ে ফেলি। কিন্তু এসবের মূল উৎসে যদি অপরিচ্ছন্নতা থেকে যায়? যা আমরা প্রতিদিন ভোগ করছি। আমাদের স্ত্রী-সন্তানদের খাওয়াচ্ছি। কীভাবে?
সম্পদের যাকাত না দিয়ে। কেন দিই না? সম্পদ কমে যাবে বলে? খোসা না ফেললে ফল খাওয়া যায় না। আঁশ না ছাড়ালে মাছ রান্না করা যায় না। সাদা চোখে অনেক কিছুকে ‘কমে’ যাওয়া মনে হলেও প্রকৃত চিত্রটি আসলে তা নয়। যাকাত দিলে আমরা ঠকি না; এতে সম্পদ কমে না, বরং বাড়ে। যাকাত আমাদের সম্পদ পবিত্র করে। বলেছেন সম্পদের স্রষ্টা, মালিক ও মহান দাতা আল্লাহ।
শয়তান আমাদের দারিদ্রের ভয় দেখায়; বলে সম্পদ জমাও, ভবিষ্যতটা নিশ্চিত করো। আল্লাহ আমাদের আশ্বাস দেন প্রবৃদ্ধির। যত দেবে তার চেয়ে অনেকগুণ বেশি পাবে। এটাই মুক্তি, এটাই স্বাধীনতা। দারিদ্র, অসচ্ছলতা, কৃপণতা ও সম্পদের ডান্ডা-বেড়ি থেকে। যাকাত এই মুক্তির হাতিয়ার। তাই যাকাত কী এবং কীভাবে দিতে হবে তা জানা জরুরী।
এটি যাকাত বিষয়ে ছোট্ট পুস্তিকা মাত্র। ব্যবসায় কত টাকা বিনিয়োগ আছে; কত টাকা বেতন, সংসার চালিয়ে উদ্বৃত্ত অর্থ, জমি-জমা, ফল-ফসল, গবাদি পশু থাকলে, খনিজ সম্পদ কিংবা কোনো গুপ্তধন পেয়ে গেলে ইত্যাদির যাকাতের অঙ্ক কীভাবে কষতে হবে – এসব বিষয়ে মৌলিক ধারণা রাখার জন্য বইটি একটি চমৎকার সংগ্রহ।
nayeem_sharder –
যাকাত কখনো কারো জন্য করুণার বিষয় নয় বরং এটা গরিবের অধিকার। দুনিয়ায় মানুষের মাঝে ফারাক আছে, কেউ ধনী কেউ গরিব। এই ফারাক কমানোর জন্য ইসলাম গরিবদের প্রতি ধনীদের কর্তব্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। ইসলামে গরিব মানুষের অধিকার বা হকগুলো ফরজরূপে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ হক “যাকাত” নিয়ে আমদের জ্ঞান একেবারে শূন্যের কোঠায়। বইটি সেই শূন্যতা পূরণে অনেক কার্যকরী। শুরুতেই আলোচনা করা হয়েছে যাকাতের বিধান নিয়ে। যাকাত অস্বীকারকারী কাফের হয়ে যায়। কারণ এটা ইসলামে ফরজ বিধান। এটা আদায়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরী।
কি পরিমান সম্পদে কতটুকু যাকাত? কি কি সম্পত্তির হিসাব করবো? যাকাতে কাদের প্রথমে প্রাধান্য দিবো? এরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে বইটিতে। বইয়ের প্রতিটি পয়েন্টের উপস্থাপন ছিলো খুবই চমৎকার। খুব সাধারণ পাঠকেরও বুঝতে কোন প্রকার বেগ পেতে হবে না।
আল্লাহ তা’লা ইরশাদ করেন, “তোমরা আল্লাহ তা’লার সন্তুষ্টির জন্য যাকাত আদায় করো। অত:পর তিনি তা দ্বীগুন করে দেবেন”।
আমাদের একটি কথা মনে রাখা উচিত, সম্পদ কারো একার নয়। কৃপন ব্যাক্তি আল্লাহ তা’লার শত্রু। দানশীল ব্যাক্তি আল্লাহর প্রিয়পাত্র। একটি শ্রেষ্ঠ ইবাদাত হলো যাকাত আদায়। এই ” যাকাত হ্যান্ডবুক” বইটি মুমিন বান্দা কে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে অনেক সহায়ক হবে/হচ্ছে বলে মনে করি।
Mahbuba Islam Disha –
যেই পাচঁটি স্তম্ভের ওপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত, তার তৃতীয়টি হলো যাকাত। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা পবিত্র কুরআনের বহু জায়গায় সলাত ও যাকাতকে পাশাপাশি উল্লেখ করেছেন, যাকাতের গুরুত্ব বোঝাতে।
আবু বাকর রাদিয়াল্লাহু আনহু খিলাফাহর দায়িত্ব গ্রহণের পর এক ঘটনার প্রেক্ষিতে বলেছিলেন- “আল্লাহর কসম! যারা যাকাত ও সলাতের মধ্যে পার্থক্য করবে, আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব”।
এসব জানার পর সহজেই অনুমান করা যায় যে যাকাত কতটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান।
অথচ এই যাকাতের ব্যাপারে আমরা বেশিরভাগই উদাসীন। আমরা অনেকেই আবার যাকাতকে গরীবের প্রতি করুণা মনে করি অথচ যাকাত তাদের অধিকার।
এই বইটি থেকে একজন পাঠক সহজেই জানতে পারবেন যাকাতের সংজ্ঞা, গুরুত্ব, যাকাত অস্বীকারকারীর বিধান, যেসব সম্পদের ওপর যাকাত ধার্য করা হয়, কোন সম্পদের নিসাব কত হলে যাকাত দিতে হবে, কাদের যাকাত দিতে পারবে এবং কাদের দিতে পারবে না। এছাড়াও আরো অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা একজন মুসলিমের অবশ্যই জানা প্রয়োজন।
বইটির বিষয়বস্তু যথেষ্ট সহজ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করা, সাধারণ পাঠকদের পড়তে তেমন কোনো অসুবিধা হবে না, ইনশাআল্লাহ।
যাকাতের মতো একটি ফরজ বিধান সুষ্ঠভাবে পালন করতে এবং এই ব্যাপারে অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে এই বইটি সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, ইনশাআল্লাহ।