Copyright © 2025 Seanpublication.com
তাওহিদের মূলনীতি—প্রথম খণ্ড (হার্ডকভার)
- লেখক : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল
- পাবলিকেশন : ইলমহাউস পাবলিকেশন
- বিষয় : ঈমান আকিদা ও বিশ্বাস, একুশে বইমেলা ২০২২, বিশ্বাস ও ধর্মতত্ত্ব, সকল প্রকাশক
Author : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল
Translator : ইলমহাউস অনুবাদক টিম
Publisher : ইলমহাউস পাবলিকেশন
Category : ঈমান আকিদা ও বিশ্বাস
৳360
তাওহিদের মূলনীতি—প্রথম খণ্ড (হার্ডকভার)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (1)
1 review for তাওহিদের মূলনীতি—প্রথম খণ্ড (হার্ডকভার)
Add a review Cancel reply
mahmud03 –
‘মানবজীবনের মূল উদ্দেশ্য কী’ দার্শনিকরা যুগে যুগে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন। কিন্তু আসমানি জ্ঞান থেকে বিচ্ছিন্ন হবার কারণে সত্যকে চিনতে পারেনি। তবে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে অল্প কিন্তু গভীর অর্থবোধক কথায় আমাদের তা জানিয়ে দিয়েছেন। এই সত্যকে নিয়েই “ইলমহাউস পাবলিকেশন” এর ‘তাওহিদের মূলনীতি’ বইটি।
.
বই ও লেখক সম্পর্কেঃ
বইটি মূলত শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল হাফিযাহুল্লাহ-এর ‘শারহুল উসুল আস-সালাসাহ’ নামের লেকচার সিরিজটির বাংলা অনুবাদ। ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ)-এর রচিত পুস্তিকা ‘উসুল আস-সালাসাহ’ নিয়ে ব্যাখ্যামূলক আলোচনাকে শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল চারটি অধ্যায়ে ভাগ করেছেন। এই চারটি অধ্যায়ের প্রথমটি নিয়েই ‘তাওহিদের মূলনীতির’ এর প্রথম খণ্ড।
.
বিষয়বস্তুঃ
বইটিতে সর্বমোট ১৪টি দারসের আলোচনা তুলে আনা হয়েছে। সবগুলো আলোচনা মূলত ‘সুরা আসর’ এর শেষ আয়াতটিকে কেন্দ্র করেই। সুরা ‘আসর’-এ আল্লাহ তায়ালা সময়ের শপথ করে বলেছেন “নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত”। এবং শেষ আয়াতে বলেছেন- “কিন্তু তারা নয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়।”
.
এই চারটি বুনিয়াদি বিষয়কেই বিস্তারিত আলোচনা করেছেন শায়খ মুসা জিবরিল। বইটি শুরু করা হয়েছে ইলম অর্জনের পদ্ধতি ও সালাফদের ইলম অর্জনের পদ্ধতি বাতলে দেওয়ার মাধ্যমে। দারসের প্রথমেই এসেছে বিসমিল্লাহ বলার ফজিলত, আল্লাহর কিছু গুণবাচক নাম ও এর মাঝে নিহিত তাওহিদের বর্ণনা। ৩য় দারস সম্পূর্ণটা ছিল ইলম নিয়ে আলোচনা- ইলমের স্তর, গুরুত্ব, মর্যাদা এবিং বেশ কিছু সাহাবি (রাঃ) ও সালাফে সালেহিনের ইলম অন্বেষণের ঘটনা। এরপরেই আলোকপাত করা হয়েছে ইলমের ক্ষেত্রে ফারযুল আইন কোনগুলো এবং কোনগুলোই বা ফারযুল কিফায়াহ। সর্বপ্রথম কোন কোন বিষয়ের উপর ইলম অর্জন করা অত্যাবশ্যক তাও বলে দেওয়া হয়েছে।
.
এরপর পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হয়েছে ইলম অর্জনের পর তার প্রয়োগের গুরুত্ব, ইলম অনুযায়ী আমল না করার ভয়াবহতা, অপ্রয়োজনীয় ইলম ও ইলম নাযিলের উদ্দেশ্য নিয়ে। আবার পরক্ষণেই তুলে ধরা হয়েছে জবাবদিহিতার ভয়ে ইলম অর্জন থেকে বিরত থাকলে কি পরিণাম হবে। দাওয়াহ’র ক্ষেত্রে ইলম অনুযায়ী আমল করা কতটুকু তাৎপর্যপূর্ণ এবং ইবনুল জাওযী (রহঃ) এবং তাঁর শায়খদের নিয়েও সামান্য আলোচনা করা হয়েছে।
.
অতঃপর দাওয়াহ’র পদ্ধতি ও গুরুত্ব নিয়ে বিশদ আলোচনা এসেছে। সালাফদের কিছু ঘটনার দ্বারা দাওয়াহ’র পদ্ধতি ও দাওয়াহ’র বিভিন্ন দিকের বাস্তবিক প্রয়োগ তুলে ধরা হয়েছে, যাতে আমরাও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারি। সর্বশেষ বুনিয়াদি বিষয় হিসেবে সবরের আদ্যপ্রান্ত তুলে ধরা হয়েছে। এরপরেই ইলম অর্জন, আমল ও দাওয়াহ’র ক্ষেত্রে পরীক্ষার সম্মুখীন হলে কি কি করণীয় তাও বাতলে দেওয়া হয়েছে।
.
সর্বোপরি বইটিতে এসেছে সুরা আসরের বিস্তারিত আলোচনা। প্রতিটি আয়াতকে গভীরভাবে খণ্ডন করে করে বুঝানো হয়েছে। বইটির আনাচেকানাচে অনেক অনুপ্রেরণামূলক নাসীহাহও আছে, যেমন- গুনাহ থেকে পরিশুদ্ধির উপায়, নিয়তের গুরুত্ব, শয়তান কিভাবে আমাদের সময়ের অপচয় ঘটাতে ওয়াসওয়াসা দেয়, গীবতের ভয়ংকর পরিণতি ইত্যাদি।
.
ভালোলাগা – মন্দলাগাঃ
বইয়ে শুধু তাত্ত্বিকভাবে তাওহিদের শিক্ষাকে ব্যাখ্যা করা হয়নি, বরং এর বাস্তব প্রয়োগ এবং আমাদের বর্তমানের সাথে এর সম্পর্ককেও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি বিষয় সাহাবি ও সালাফদের মতাদর্শকে তুলে ধরে বিস্তারিতভাবে বুঝানো হয়েছে। বইটির প্রায় প্রতিটি পাতায় পাতায় রেফারেন্স, যা আমাকে মুগ্ধ করেছে। এত রেফারেন্স সমৃদ্ধ বই আমি আগে পড়িনি। প্রতিটি আলোচনার বাস্তবিক প্রয়োগ দেখিয়ে দিতে সালাফদের বিভিন্ন ঘটনাকে উল্লেখ করে আমাদেরও অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। বইটি পড়ে মনেই হয়নি আমি বই পড়ছি, বরং মনে হয়েছে যেন শায়খ আমাকে সরাসরি বিষয়গুলি বুঝিয়ে দিচ্ছেন। প্রচ্ছদ একদম সাদামাটা। বইটি হার্ডকভার এবং বাইন্ডিং কোয়ালিটি ভালো হওয়ায় পড়তে একটুও অসুবিধে হয় নি। সবচেয়ে বড় কথা এত্ত পৃষ্ঠাসংখ্যার বইয়ে তেমন কোনো বানান বিভ্রাট নজরেই পড়ে নি। বইটির কোনো খারাপ দিক আমি খুঁজে পাই নি।
.
বইটির প্রয়োজনীয়তাঃ
আমরা অনেকেই দ্বীনি ইলম অর্জন করতে গিয়ে প্রথমে কোন বিষয়টা জানা অত্যাবশ্যক, কোনটা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ফরজ তা না জেনেই বিক্ষিপ্ত বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানচর্চা শুরু করি। আবার অনেকেই ইলম অনুযায়ী আমল না করে, কেবল ইলম অর্জন করেই যাই। আবার কিছু কিছু এমনও রয়েছে যে নিজেদের মধ্যেই ইলমকে সীমাবদ্ধ রাখে, নিজেরাই আমল করে, অন্যকে দাওয়াহ দেয় না। এসকল কাজই ইসলাম পরিপন্থী। কিভাবে এসকল কাজকে সমন্বয়ে এনে, সেগুলোর উপর আমল করা যায় তা জানতেই বইটা পড়তে হবে। বইটিতে তাওহিদের সেই সকল বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে, যে বিষয়গুলোর সম্পর্কে জানা সময়ের দাবী এবং ফরজ ইলমের অন্তর্ভুক্ত। সুরা আসরে উল্লেখিত সেই ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে না দাঁড়াতে চাইলে বইটা পড়ে দেখা উচিত।
.
মন্তব্যঃ
বইটি যখন প্রথম হাতে পেয়েছিলাম, ভেবেছিলাম অন্যসব আকিদাহ’র বইয়ের মতো এই বইটিও জটিল সব ভাষা-শব্দ, অনেক অনেক আরবি-রেফারেন্সে ভরপুর হবে, যা আমাদের জেনারেল ছাত্রদের জন্য সুখপাঠ্য নয়। কিন্তু বইয়ের কিছু পাতায় পড়তেই ভালোলাগা বোধ কাজ করা শুরু করে বইটির প্রতি। এত সুন্দর করে উপস্থাপনা করা হয়েছে যে মনে হয় শায়খ প্রত্যক্ষভাবে আমাকে নাসীহাহ দিচ্ছেন। বইটিতে একজন মুমিনের মৌলিক কাজ নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যা আমরা অনেকেই করি না, কিন্তু এগুলোই সবার আগে করা উচিত। তাই কেউ যখন আমাকে কোনো বই রিকমেন্ড করতে বলে, তখন আমি সর্বপ্রথম এই বইয়েরই নাম বলি।