তাকওয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ, বেঁচে থাকা, দূরে থাকা, পরহেজ করা, নিজেকে বাঁচানো ইত্যাদি। পরিভাষায় এটি আল্লাহকে ভয় করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ আল্লাহর শাস্তি ও তাঁর আজাবের ভয়ে গুনাহ ও অবাধ্যতা থেকে মুক্ত থাকার নামই হল তাকওয়া। জাহান্নামের আজাবের ভয়ে গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে বেঁচে থাকা।
ইমাম রাগেব ইসফাহানি বলেন, ‘তাকওয়া বলা হয় নফসকে সেসব জিনিস থেকে বাঁচানো যেগুলোর ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করা হয়। তাকওয়ার এই অর্থই সঠিক ও যথার্থ।
মুত্তাকি মানে হলো পরহেজগার ব্যক্তি; যিনি তাকওয়া অবলম্বন করেন। তাকওয়ার বিভিন্ন স্তর রয়েছে। যথা:-
১। সাধারণ তাকওয়া। যেমন, কুফর থেকে বেঁচে থাকা।
২। বিশেষ তাকওয়া। যেমন, সন্দেহ-সংশয়মূলক জিনিস বা বিষয় থেকে হারাম হয়ে যাওয়ার ভয়ে বেঁচে থাকা।
৩। সর্বোচ্চ পর্যায়ের তাকওয়া। যেমন, মুবাহ এবং সন্দেহমূলক জিনিস থেকে বেঁচে থাকা।
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলদের আদেশ তাকওয়া অবলম্বন করো—
মহান আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল মানুষকে তাকওয়া অবলম্বন করার আদেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন— ‘তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি তাদেরকে আদেশ করেছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো।’ (সুরা নিসা: ১৩১)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, ‘সুতরাং সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।’ (সূরা বাকারা: ২৪)
অন্য জায়গায় আরো বলেন, ‘আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারো সামান্য উপকারে আসবে না।’ (সূরা বাকারা: ৪৮)
এক হাদীসে এসেছে, হযরত আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ জিনিসের বদৌলতে বেশিরভাগ লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। তিনি বলেনঃ তাক্বওয়া ও সচ্চরিত্রের বদৌলতে। তাকে আরও জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ জিনিসের কারণে অধিকাংশ লোক জাহান্নামে যাবে? তিনি বলেনঃ দু’টি অংগ- মুখ ও লজ্জাস্থান। [৩৫৭৮]
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৪২৪৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস)
তাকওয়ার স্থান হল হৃদয়। নীরবে নিভৃতে, একাকী সর্বদা অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকার নামই হল তাকওয়া। প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রে বান্দার নিয়ত খালেস হওয়া শর্ত। যদি বান্দার নিয়ত থাকে প্রসিদ্ধি অর্জন এবং লোক দেখানো তাহলে তাকওয়া সামান্যও অর্জিত হবে না। তাকওয়া অবলম্বন করা ব্যতীত প্রকৃত মুমিন হওয়া অসম্ভব। জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে হলে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে হলে আবশ্যিকভাবে তাকওয়া অর্জন করতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তা জানেন যা তোমাদের অন্তরে রয়েছে।’
(সূরা মায়িদা: ৭)
তাকওয়া তথা খোদাভীতির ফায়দা ও উপকারিতা এবং আবশ্যকীয়তা সহ মুত্তাকিদের ঘটনা এবং তাদের উত্তম পরিসমাপ্তির ব্যাপারে জানতে হলে পড়ুন ‘তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন’ ।
Amit Hasan –
■ বই রিভিউ- তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
■ শুরুর কথা-
“যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করে, আল্লাহ তার জন্য(উওরণের)পথ করে দেবেন।”
[সূরা আত তালাক-০২]
তাকওয়া মানে আল্লাহকে ভয় করা আর আল্লাহকে ভয় করলেই আমরা যেকোনো গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারবো। গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা মানেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। যা আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনে সফলতার দ্বার উন্মোচনে সাহায্য করবে।তাকওয়া হলো ইসলামের অন্যতম একটি ভিত্তি।যার ওপর নির্ভর করবে আমাদের সফলতার পথ। যে তাকওয়াবান তাকে বলা হয় মুত্তাকী। ইসলামে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
■ বইটির আলোচ্য বিষয়-
বইটিতে তাকওয়ার পরিচয় থেকে শুরু করে, তাকওয়া অর্জনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, তাকওয়ার ফযীলত, তাকওয়ার জন্য আবশ্যকীয় বিষয়, তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি ও মাধ্যম, মুত্তাকির পরিচয়, যে সব বিষয় থেকে একজন মুসলিমের দূরে থাকা আবশ্যক, কীভাবে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হবে? ইসলামে ও মুসলমানদের তাকওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ, ইসলাম পন্থিদের তাকওয়ার বিশেষ গুরুত্বারোপ ইত্যাদি এমন ১৫ টি আলোচনা স্হান পেয়েছে।
■ পাঠ পরবর্তী পর্যালোচনা-
বইটির প্রতিটি আলোচনাই কুরআন ও হাদিসের সুমিষ্টতায় পরিপূর্ণ। অনুবাদ ও যথেষ্ট সাবলীল মনে হয়েছে। প্রতিটি আলোচনাতেই যথাযথ রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে। তেমন ভুলত্রুটি চোখে পড়েনি।
■ বইটি কেনো পড়া উচিত-
বইটি পাঠের মাধ্যমে একজন পাঠক বা পাঠিকা তাকওয়ার যাবতীয় পরিচয়, কুরআন হাদিসের আলোকে এর গুরুত্ব নিরূপণসহ সালাফদের অমিয় সুধা উপলব্ধি করে পরকালীন জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করতে পারবেন। সেই সাথে নিজেদের জীবনে মুত্তাকীর হওয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো প্রতিফলিত করে তাকওয়ার উপকারি দিকগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়িত করে মহান আল্লাহর গুণান্বিত বান্দা হওয়ার সুযোগ লাভ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। মূলত বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি আমাদের তাকওয়ার সাথে আরও গভীর ভাবে পরিচয় করে দেবে। তাকওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের অন্তরকে আরো সজাগ করবে আশা করা যায়।
■ বইটি কাদের জন্য-
তাকওয়া হলো একটি মহৎ গুণ। যে নিজেকে এই গুণে গুণান্বিত করতে সক্ষম হবে তার অন্তর হবে পরিশুদ্ধ। কারণ সে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত থাকবে। তার দ্বারা কোনো অপরাধ হতে পারে না। কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যায় মুসলিম হয়েও অনেকের দ্বারা অনেক হারাম কাজ হয়ে যায়। এর কারণ অন্তরে তাকওয়ার অভাব। অর্থাৎ তারা মুসলিম হয়েও তাদের অন্তরে তাকওয়ার বীজ বপণ করতে পারেনি। এরূপ সকল মুসলিমের জন্য বইটি কার্যকরী হবে আশা করি। এছাড়া প্রত্যেকটি মুসলিমের বইটি পাঠ করা উচিত যাতে করে তারা তাদের অন্তরে আল্লাহ ভীতি অর্থাৎ তাকওয়াকে আরো মজবুত তথা শক্তিশালী করতে পারে।
■ সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচিতি-
শাইখ উমর সুলাইমান আশকার রহি. ১৯৪০ সালে বর্তমান জেরুজালেমের নিকটবর্তী শহর নাবলুসে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে মদিনায় বেড়ে ওঠেন। শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ও মিশরের আল আজহার
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কর্মজীবনে ছিলেন জর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি আইন ফ্যাকাল্টির প্রফেসর। এছাড়া জর্দানের জারকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ফ্যাকাল্টির ডিন। তিনি ২০১২ সালে ইন্তেকাল করেন।
■ এক নজরে বই-
▪বই- তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
▪মূল: ড. উমর সুলাইমান আশকার রহি.
▪অনুবাদ: মুহিব্বুল্লাহ খন্দকার
▪সম্পাদনা: সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
▪মুদ্রিত মূল্য ৩২০৳
▪পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৯২
▪বাইন্ডিং- পেপারব্যাক
▪প্রকাশনায়: আয়ান প্রকাশন
Muhammad Rashed Ahmad –
বই : তাকওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
লেখক : ড. উমর সুলাইমান আশকার রহ.
অনুবাদক : মুহিব্বুল্লাহ খন্দকার
সম্পাদনা : সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
তাকওয়ার গল্প :
______________
হযরত উমর রাযি. তাঁর খেলাফতকালে লোকজনের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য রাতের বেলা মদিনা মুনাওয়ারায় টহল দিতেন। একদিন টহল দিতে বের হয়ে দেখতে পেলেন গভীর রাতেও একটি ঘরে আলো জ্বলছে। তিনি শব্দহীনভাবে হেঁটে ঘরের নিকটে এসে শুনতে পেলেন—মা তার মেয়েকে দুধে পানি মিশিয়ে বৃদ্ধি করতে বলছেন, যাতে লাভ বেশি হয়।
মেয়ে তখন উত্তরে বলল, ‘মা! আমিরুল মুমিনিন তো দুধের সাথে পানি মেশাতে নিষেধ করেছেন’ বৃদ্ধা বললেন, ‘আমিরুল মুমিনিন কী এখন আমাদের দেখছেন?
মেয়ে বলল, ‘মা, আমিরুল মুমিনিন এখানে নেই, তাই দেখছেন না; কিন্তু আল্লাহ তাআলা তো আছেন! তিনি তো দেখছেন! তাঁর কাছে আমরা কী জবাব দেব?’
পরবর্তী সময়ে তাকওয়াপূর্ণ এই মেয়েটি হযরত উমর রাযি. এর পুত্রবধূ হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। এই ঘরের তৃতীয় পুরুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করেন খলিফা উমর ইবনে আবদুল আযিয রহ.—যাকে পঞ্চম খলিফায়ে রাশেদ বলা হয়।
তাকওয়ার অর্থই হচ্ছে ‘আল্লাহ তাআলা সর্বক্ষণ সর্বাবস্থায় আমাকে দেখছেন’–এ অনুভূতি অন্তরে বদ্ধমূল রাখা। নফস ও শয়তান যেন কোনোভাবে আমাকে দিয়ে কোন গুনাহ না করায়, সে দিকে সর্বদা নেগরানি করা। কিন্তু তাকওয়া কী করে অর্জন হয়? কোন কোন গুনাহ বর্জন করলে আর কোন কোন নেক আমল করলে তাকওয়া বৃদ্ধি পাবে? তাকওয়ার স্তর কয়টি? আল্লাহ ও রাসুল তাকওয়ার ব্যাপারে কী কী আদেশ দিয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা নেই। তবে যাবতীয় এই বিষয়গুলোর পূর্ণ জবাব প্রকাশিতব্য বই ‘তাকওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন’-এ বিস্তারিতভাবে লেখক তুলে ধরেছেন।
বইয়ের ভেতর বাহির :
__________________
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে ইরশাদ করেছেন, ‘তাকওয়া হচ্ছে অন্তরে জিনিস।’
সুতরাং তাকওয়া কোনো পোশাকের নাম নয়, যে তা পরিধান করার পর তাকওয়া অর্জন হয়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম ইসলাম গ্রহণের পূর্বে হাজারো গুনাহ করেছেন; কিন্তু ইসলাম গ্রহণ করার পর তাদের জীবনের মোড় বদলে গেছে। তাঁরা দুনিয়াবি ক্ষুদ্র বিষয়েও আতংকিত থাকতেন, আল্লাহ যেন আমার এ কাজ দ্বারা নারাজ না হয়ে যান। এ গুণ অর্জন হয়েছিল নবীজির সাহচর্যের দ্বারা, নেক আমল করার দ্বারা।
ড. উমর সুলাইমান আশকার রহ.-এর ‘আত-তাকওয়া’ বইটি আয়ান প্রকাশন বাংলায় অনূদিত করেছে। লেখক বইটিতে সুবিন্যস্তভাবে আটটি অধ্যায়ে ‘তাকওয়া’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাকওয়ার পরিচয় থেকে শুরু করে তাকওয়ার ব্যাপারে কুরআন-হাদিসের বাণী, সালাফগণের উক্তি, এবং কোন কোন আমলের দ্বারা এ গুণ অন্তরে পয়দা হবে আর কোন কোন কাজ থেকে বিরত থাকলে তাকওয়া হেফাজতে থাকবে সে বিষয়েও সুসংহতভাবে বইটিতে আলোচনা আছে।
একমাত্র তাকওয়াপূর্ণ জিন্দেগীই আপনাকে জান্নাতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। নেক আমল বা দান-সদকা এগুলো তখনই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে, যখন নাকি আপনার অন্তরে আল্লাহভীতি থাকবে। তা নাহয় গুনাহর সাগরের স্রোতে আপনি ভেসে যাবেন। বঞ্চিত হবেন জীবনের মূল মাকসাদ এবং ইসলামের আসল প্রাণ থেকে।
বইটি পড়ার দ্বারা আপনি তাকওয়া বিষয়ের প্রায় আদ্যোপান্ত জানতে পারবেন। অনুবাদ যথেষ্ট সাবলীল ও প্রাঞ্জল হয়েছে। আশা করি আয়ান প্রকাশন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বই প্রকাশের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে।
সিরাজাম বিনতে কামাল –
▪️প্রারম্ভিকা:
____________________
❝অবশ্যই জালেমরা একে অপরের বন্ধু। আর আল্লাহ তা’আলা হলেন মুত্তাকীদের বন্ধু।❞
-সূরা জাছিয়াহ; আয়াত: ১৯
আর তারাই মুত্তাকী, যারা আল্লাহভীরু ও পরহেজগার। আল্লাহভীরু, পরহেজগার মানেই হলো তাকওয়াবান।
তাকওয়া এর শাব্দিক অর্থ হলো- নিজের নফসকে নেক আমলের মাধ্যমে গুনাহে লিপ্ত হওয়া ও আযাব থেকে বাঁচানো।
শরিয়ভাবে তাকওয়ার পূর্ণাঙ্গ সংঙ্গা হলো- আল্লাহর ইবাদত করার মাধ্যমে ও শরিয়তের অত্যাবশকীয়, মুস্তাহাব আমলসমূহ করা, শরিয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ ও অপছন্দীয় আমল পরিহার করা।
আয়ান প্রকাশনের এবারের প্রকাশিত বই তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। বইয়ের শিরোনাম স্পষ্টত’ই জানান দিচ্ছে বই অভ্যন্তরে কী থাকছে।
.
▪️বই অভ্যন্তরে:
____________________
তাকওয়ার মূল পরিচয়, একজন মুসলিমের জন্য তাকওয়াবান হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ, মুত্তাকীদের পরিচয়, কীভাবে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হবে, তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি ও মাধ্যম, তাকওয়ার জন্য আবশ্যকীয় বিষয়, ইসলাম ও মুসলমানদের তাকওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ, তাকওয়া সম্পর্কিত আল্লাহর তা’আলার আদেশ, নবীগণের স্ব স্ব উম্মতকে তাকওয়াবান হওয়ার আদেশ দেওয়া, এই উম্মতকে বেশি বেশি অসিয়ত করা তাকওয়া অবলম্বন করার ব্যাপারে, তাকওয়া সম্পর্কিত নবী সাঃ এর বাণী, সালাফগণের মন্তব্য ইত্যাদি।
অর্থাৎ একজন মুসলিম কীভাবে নিজেকে একজন মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তুলবে! কীভাবে আল্লাহর প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে পারবে! কীভাবে জান্নাত হাসিল করা সহজ হবে! আর কীভাবে ইহকাল, পরকাল উভয় জীবনে সফল হতে পারবে! তার সব কিছুই আলোচিত হয়েছে এ’বইয়ে। আর এ’সব কিছুই সম্ভব তাকওয়াবান হওয়ার মাধ্যমে।
.
▪ পাঠ্যভিমত:
____________________________________
কেউ কেউ নির্জনে নফসের খায়েশ মেটাতে পাপকাজে মগ্ন হয়। আর কেউ কেউ আল্লাহ সব দেখছেন, আল্লাহ সকল গোপন বিষয়ে অবগত, এই ভেবে নিজেকে নিবৃত্ত করেন। সে আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হওয়ার ভয় করে।
শর্ট পিডিএফে বইটির কিছু চুম্বকাংশ দেওয়া হয়েছে। ভূমিকা দেখে জানতে পারলাম বইটি ১৫টি আলোচনায় বিভক্ত। ১৫টি আলোচনায় তাকওয়ার আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বলা যায়, তাকওয়া সম্পর্কীয় এক তথ্য সমৃদ্ধ ভান্ডার এই বই।
.
▪️বইটির প্রয়োজনীয়তা:
_____________________________
সুরা বাকারায় বলা হয়েছে, ❝আর তোমরা পাথেয় সাথে নিয়ে যাও। নি:সন্দেহে সর্বোত্তম পাথেয় হচ্ছে আল্লাহর ভয়। হে বুদ্ধিমানগণ, আর আমাকে ভয় করতে থাক।❞ (আয়াত: ১৯৭)
উপরিউক্ত আয়াতখানি বলে দিচ্ছে বইটি আমাদের মানে মুসলিম সকলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চায় তাদের জন্য মাস্ট রিড একটি বই। আর যারা তাকওয়া সম্পর্কে কিছুই জানে না তাদের জন্যেও বইটি দরকারি।কারণ, মৃত্যু আমাদের বলে-কয়ে আসবে না। আর মৃত্যুর আগেই আল্লাহভীতির মাধ্যমে সকল খারাপ কাজের জন্য তাওবাহ করা উচিত।
তাকওয়া পরকালীন জীবনের জন্য সর্বোত্তম অবলম্বন। যে ব্যক্তি স্বচ্ছ ইমান, নেক আমল নিয়ে আসবে পরকালে সে-ই সফলকাম হবে। আর মুসলিমের গন্তব্য পরকাল। পরকালের সফলতার জন্য প্রত্যেকের উচিত তাকওয়াবান হওয়া।
.
▪️উপসংহার:
________________________
মহানবী সা: বর্ণিত একটি হাদীস পড়েছিলাম এমন, ❝যে ব্যক্তি যত বেশি তাকওয়াবান, সে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তত বেশি মর্যাদাবান।❞
আল্লাহ সবচে’ বেশী ভয় পাওয়ার যোগ্য। অন্য কেউ নয়। আমরা এখন দুনিয়াবি অনেক কিছুকে ভয় করলেও আল্লাহকে থোড়াই কেয়ার করি। আল্লাহুম্মাগফিরলি! আল্লাহ যেমন ক্ষমাশীল, দয়াবান, তেমনি শাস্তি দানেও কঠোর। কুরআনে উল্লেখ আছে, যারা না দেখে রব্বকে ভয় করে ও বিশ্বাস করে তাদের জন্য রয়েছে উত্তম প্রতিদান।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তাকওয়াবান হিসেবে কবুল করে নিক। তাকওয়ার মতো উত্তম গুণে গুনান্বিত করে দিক। আল্লাহর প্রিয়পাত্র হওয়ার তাওফিক দিক। আমিন।
Shahidul Islam –
📗 বই রিভিউ
নাম : তাকওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
✍️ প্রারম্ভিকা:
মুসলমানদের জীবনে তাকওয়া হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য। একজন মুসলিম পৃথিবীর যে প্রান্তে, যেখানেই থাকুক না কেন সে সবসময় সবক্ষেত্রে এক আল্লাহকে স্মরণ করবে এবং আল্লাহর ভয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিবে এর নামই হলো তাকওয়া। আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, তাকওয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বুঝতে পেরে নিজেদের জীবনকে সফলভাবে পরিচালনা করতে পারে, তাদেরকে বলা হয় মুত্তাকি। এইজন্য একজন মুমিন-মসলমানের জীবনে তাকওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। আর তাকওয়ার পরিচয়, গুরুত্বপূর্ণ, ফজিলত, তাৎপর্য ইত্যাদি নিয়ে ‘তাকওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন’ বইটি।
📗 বইয়ের বিষয়বস্তু:
পবিত্র কুরআনের শুরুতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাছে মুত্তাকিদের পরিচয় তুলে ধরেছেন এবং পবিত্র কুরআনকে মুত্তাকিদের জন্য হিদায়াতের পথনির্দেশিকা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, ঘোষণা দিয়েছেন। তাকওয়ার গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এখন আমাদের সমাজে তাকওয়ার গুরুত্ব নাই বললেই চলে। অধিকাংশ মানুষই লোক দেখানো ইবাদাত করে। সমাজের শোচনীয় এই অবস্থা পরিবর্তনে আয়ান প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন’ বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ইনশাআল্লাহ। বইটিতে তাকওয়ার পরিচয়, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে তাকওয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য, তাকওয়া বিহীন ইবাদাতের পরিণাম ইত্যাদি বিষয় সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে।
📗 বইটির বৈশিষ্ট্য:
যেকারণে বইটি একজন পাঠককে মুগ্ধ করবে-
✅ বইটিতে তাকওয়ার মৌলিক পরিচয়, পবিত্র কুরআনে মুত্তাকিদের জন্য আল্লাহ তায়ালার সমস্ত নির্দেশনা সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
✅ তাকওয়া অর্জনের জন্য কোন কোন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কোন কোন কাজ করলে তাকওয়া অর্জিত হবে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
✅ বইটিতে তাকওয়ার ব্যাপারে আকাবিরদের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
✅ সবকাজে একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকেই ভয় করতে হবে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে।
✅ তাকওয়ার ব্যাপারে কবিদের উপদেশাবলী আলোচনা করা হয়েছে।
📗 বইটি কেন পড়বেন :
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
عينان لا تمسها النار,عين بكت من خشية الله وعين باتت تحرس في سبيل الله
“কিয়ামতের দিন দুই চোখকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না-
১. যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে
২. যে চোখ আল্লাহর রাস্তায় পাহারারত অবস্থায় রাত্রিযাপন করে”। (সুনানে তিরমীজী)
এইজন্য নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে তাকওয়া হলো শ্রেষ্ঠ পাথেয়। আর তাকওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বইটি হবে আপনার অমূল্য সংগ্রহ ইনশাআল্লাহ।
📗 শর্ট পিডিএফ পড়ে অনুভূতি:
আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ে বুঝতে পারলাম বইটি বর্তমান সমাজ এবং সময়ের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ ও উপকারী ইনশাআল্লাহ। তবে বইটি পড়ার সময় বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ভুল আমার চোখে পড়েছে। আমি সেগুলো ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করছি-
১. বইয়ের ১৪০ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘আর এই পরিচিতি আল্লাহর অলি ও বন্ধুদের জন্য যার উপর আল্লাহর নস প্রমাণ করছে’ কথাটা কেমন যেন বেমানান লাগে। বরং এ জায়গায় যদি লেখা হয় ‘আর এই পরিচিতি আল্লাহর অলি ও বন্ধুদের জন্য যাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার আয়াত বা নির্দেশনা রয়েছে’ তাহলে আমার মনে হয় ভালো হয়।
২. একই পৃষ্ঠায় সূরা ইউনুসের ৬৩ নম্বর আয়াতের অনুবাদে লেখা হয়েছে ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং ভয় করতে রয়েছে’ কথাটা কেমন মানানসই হয় না, বিশেষ করে কুরআনের ক্ষেত্রে তো নয়-ই। বরং এখানে যদি লেখা হয় ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে’ তাহলে মানানসই হয় এবং ভালো শুনায়।
৩. একই পৃষ্ঠায় এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখা হয়েছে ‘ এটি আরো প্রমাণ করে যে, কতক মুসলিম ভ্রান্তদের ভ্রষ্টতার পরিধির ব্যাপারে’ এই কথাটাও ঠিক মিলছে না। বরং এখানে যদি লেখা হয় কতক মুসলমানদের ভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতার পরিধির ব্যাপারে’ তাহলে আমার মনে হয় কথাটা ঠিক থাকে।
এছাড়াও কয়েকটি শাব্দিক ভুল চোখে পড়েছে, যেগুলো উল্লেখের প্রয়োজন মনে করছি না। আশা করি পরবর্তী সংস্করণে আয়ান কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো খেয়াল করবে।
📗 সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচিতি :
ড. উমর সুলাইমান আল আশকার রহ. ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে ফিলিস্তিনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর খিদমাতে বিভিন্ন কাজ করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো-
* الصيام في ضوء الكتاب والسنة
* معالم الشخصية الاسلامية
* العقيدة في الله
* عالم الملائكة الابرار
* القضاء والقدر
তিনি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন।
📗 একনজরে বইটি:
নাম : তাকওয়া মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
লেখক : ড. উমর সুলাইমান আল আশকার রহ.
অনুবাদ : মুহিব্বুল্লাহ খন্দকার
সম্পাদনা : সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
প্রথম প্রকাশ : আগষ্ট ২০২১
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৯২
মুদ্রিত মূল্য : ৩২০
বাঁধাই : পেপারব্যাক
আল্লাহ তায়ালা বইটিকে কবুল করুন এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন।
নাফিসা ইয়াসমিন –
তাকওয়ার স্থান হল হৃদয়। নীরবে নিভৃতে, একাকী সর্বদা অন্তরে আল্লাহর ভয় থাকার নামই হল তাকওয়া।
তাকওয়া এমন এক সুতীব্র অনুভূতি যা সর্বদা অন্তরের নিভৃতে জাগ্রত রাখে, You are being watched by Allah Subhanahu taaala ‘আল্লাহ তাআলা সব সময় তোমাকে দেখছেন।’
তাকওয়া মুমিনের সম্বল, আখিরাতের সফরের গুরুত্বপূর্ণ পাথেয়। আল-কুরআনে সর্বাধিক উল্লিখিত এক মহৎ গুণ যা প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, কাছের অথবা দূরের সকল কল্যাণের আধার। অনুরূপভাবে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, কাছের অথবা দূরের সকল অন্যায় ও পাপাচারের বিরুদ্ধে তাকওয়া হলো মনের অতন্দ্র প্রহরী, প্রতোরোধক দুর্গ।
যার মাঝে তাকওয়া নেই, সে ভালো-মন্দের পার্থক্য করতে পারে না। কারণ, তাকওয়ার বদৌলতেই মানুষ ফুরকান (ভালো-মন্দের পার্থক্যকারী গুণ) লাভ করে।
তাকওয়া বা আল্লাহভীতিই মানুষকে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র গুনাহ থেকে বিরত রাখে যেমন তেমন ভালো কাজে উৎসাহী করে।
দুনিয়াবি চাকচিক্যময় ফিতনায় আবর্তিত আদম সন্তানের তালাবদ্ধ অন্তরকে তাকওয়ার পরশে জাগিয়ে তুলতে আয়ান প্রকাশনার অনবদ্য প্রয়াস “তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন” বইটি।এটির লেখক ড. উমর সুলাইমান আশকার রহি. এবং অনুবাদ: মুহিব্বুল্লাহ খন্দকার।
প্রিভিউ পর্যালোচনা
—————————-
বইটির স্বরূপ ধারণা করা যায় নামকরণ থেকে। বইটির বিষয়বস্তু সজ্জিত হয়েছে প্রায় আটটি অধ্যায়ে বিভিন্ন শিরোনামে, আবার প্রতিটি অধ্যায়ের অধীনে রয়েছে কয়েকটি ছোট ছোট পরিচ্ছেদ।
🍂সূচিপত্র থেকে একঝলক🍂
সূচনাতেই আলোচিত হয়েছে:
📚তাকওয়ার পরিচয়
📚তাকওয়া ও কুরআন মাজিদ
📚তাকওয়া: ইবাদতের মহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
📚 মুত্তাকীদের পরিচয়
📚 তাকওয়া পরকালের শ্রেষ্ঠ পাথেয়
📚 আল্লাহ কে ভয় করো
📚কালিমাতুত তাকওয়া
📚তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি ও মাধ্যম
📚 কীভাবে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হবে
📚ইসলামে ও মুসলমানদের তাকওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ
মূলত বইটির বিষয়বস্তু তাকওয়া অর্জনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, তাকওয়ার ফযীলত, তাকওয়া পরকালীন পাথেয় ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ।
তাকওয়ার জন্য আবশ্যকীয় বিষয়সমূহ ও তাকওয়া অর্জনের পদ্ধতি ও মাধ্যম প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা।
বইটির বিশেষত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
————————————————
⬛বর্তমান যুগ ফিতনা বিশৃঙ্খলার যুগ, যে যুগে বৃষ্টির ন্যায় ঝরে পড়ে ফিতনা। নফসের কুমন্ত্রণা, শয়তানের ওয়াসওয়াসা এবং দ্বীনহীন পরিবেশ মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে যার ফলে মানুষ প্রতিনিয়ত ডুবে যাচ্ছে ফিতনার সমুদ্রে। হারিয়ে ফেলছে পার্থিব শান্তি এবং আখেরাতের পাথেয়।
মানুষের চারিত্রিক অবক্ষয়ের কারণ অন্তরে তাকওয়ার শূন্যতা।
উম্মাহর ক্রান্তিকালে এমন একটি বই গাফেল হৃদয়কে জাগ্রত করে, আকুতি জানায় গাফিলতির চাদর ছেড়ে বেরিয়ে আসার। আমাদের পিপাসার্ত অন্তরে তাকওয়ার বীজ রোপণ করে সীরাতুল মুস্তাকিমের পথে অটুট রাখতে বইটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, ইন শা আল্লাহ।
⬛আলোচ্য বইটি তাকওয়ার মাহাত্ম নিয়েই রচিত যেখানে তাকওয়ার গুরুত্ব ও মাহাত্ম নিয়ে কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্য ও সালাফদের তাগিদ আলোচিত সুষ্পষ্ট ভাষায় রেফারেন্স ভিত্তিক আলোচিত হয়েছে।
⬛ বইটির হৃদয়গ্রাহী আলোচনা অন্তরে গভীর দাগ টানতে বাধ্য করে। মুমিন হৃদয়কে সতর্ক করে উপলব্ধি ঘটায় যে তাকওয়া মুত্তাকীদের বৈশিষ্ট্য জান্নাতের পাথেয় লাভের পথ। এই তাকওয়া মানুষকে জান্নাতের পথে পরিচালিত করে, জাহান্নামের পথ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে।
স্মরণ করিয়ে দেয় তাকওয়ার অপরিসীম তাৎপর্য। আল কুরআনে যেখানে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং বলেছেন,
“আর তোমরা নিজেদের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করো, কেননা তাকওয়াই শ্রেষ্ঠ পাথেয় । ”
(সূরা আল বাকারা; আয়াত ১৯৭)
তাকওয়ার মাধ্যমেই অর্জিত হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য। আদম সন্তানের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ। সুতরাং বক্ষ্যমাণ বইটি একটি সুষ্পষ্ট সতর্কীকরণ।
⬛প্রতিটি আমলের ক্ষেত্রে বান্দার নিয়ত খালেস হওয়া শর্ত। যদি বান্দার নিয়ত থাকে প্রসিদ্ধি অর্জন এবং লোক দেখানো তাহলে তাকওয়া সামান্যও অর্জিত হবে না। তাকওয়া অবলম্বন করা ব্যতীত প্রকৃত মুমিন হওয়া অসম্ভব। জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে হলে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে হলে আবশ্যিকভাবে তাকওয়া অর্জন করতে হবে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তা জানেন যা তোমাদের অন্তরে রয়েছে।’
(সূরা মায়িদা: ৭)
তাকওয়া তথা খোদাভীতির ফায়দা ও উপকারিতা এবং আবশ্যকীয়তা সহ মুত্তাকিদের ঘটনা এবং তাদের উত্তম পরিসমাপ্তির ব্যাপারে সুষ্পষ্ট ধারণা জোগান দেয় ‘তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন’ গ্রন্থটি।
⬛বইটির সহজ সাবলীল ঝড়ঝড়ে অনুবাদ এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপন পাঠকের হৃদয়কে মুগ্ধ করবে।
📚এক নজরে বই পরিচিতি
বই- তাকওয়া: মুমিনের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন
মূল: ড. উমর সুলাইমান আশকার রহি.
অনুবাদ: মুহিব্বুল্লাহ খন্দকার
সম্পাদনা: সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
মুদ্রিত মূল্য ৩২০৳
পৃষ্ঠা সংখ্যা- ১৯২
বাইন্ডিং- পেপারব্যাক
প্রকাশনায়: আয়ান প্রকাশন