ইসলামি সভ্যতা ও পাশ্চাত্য সভ্যতা পরস্পর বিপরীতমুখী দুটি বিষয়। পাশ্চাত্য সভ্যতার মূল ভিত্তি হলো সেক্যুলারিজম, গনতন্ত্র, বিবর্তনবাদ, বস্তুবাদ ইত্যাদি । যে সভ্যতা স্রষ্টাহীন, এখানে ধর্মের কোনো জায়গা নেই। এই সভ্যতা প্রধাণত টিকে আছে নেতৃত্ব ও কতৃত্বের উপর ভর করে।
এর বিপরীতে রয়েছে মুসলিম সভ্যতা। ইসলামের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে যার উৎপত্তি। ইসলাম এমন এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা মানুষকে উপহার দিয়েছে যেখানে জন্ম থেকে মৃত্য পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় কর্মসমূহ আলোচিত হয়েছে।
এরপরেও বর্তমান প্রজন্মের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তারা পাশ্চাত্য সভ্যতার মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে আকড়ে রাখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না। তাই পাশ্চাত্য সভ্যতার ইতিহাস ও সংস্কৃতির স্বরুপ তুলে ধরার পাশাপাশি গৌরবময় ইসলামি সভ্যতাকে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রখ্যাত লেখক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান রচনা করেছেন এক ভিন্নধর্মী বই। যার নাম “সভ্যতার এপিঠ ওপিঠ”।
Copyright © 2024 Seanpublication.com
আব্দুর রহমান –
ইসলামি সভ্যতা ও পাশ্চাত্য সভ্যতা পরস্পর বিপরীতমুখী দুটি বিষয়। পাশ্চাত্য সভ্যতার মূল ভিত্তি হলো সেক্যুলারিজম, গনতন্ত্র, বিবর্তনবাদ, বস্তুবাদ ইত্যাদি । যে সভ্যতা স্রষ্টাহীন, এখানে ধর্মের কোনো জায়গা নেই। এই সভ্যতা প্রধাণত টিকে আছে নেতৃত্ব ও কতৃত্বের উপর ভর করে।
এর বিপরীতে রয়েছে মুসলিম সভ্যতা। ইসলামের আবির্ভাবের মধ্য দিয়ে যার উৎপত্তি। ইসলাম এমন এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও সমাজব্যবস্থা মানুষকে উপহার দিয়েছে যেখানে জন্ম থেকে মৃত্য পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় কর্মসমূহ আলোচিত হয়েছে।
এরপরেও বর্তমান প্রজন্মের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় তারা পাশ্চাত্য সভ্যতার মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকে আকড়ে রাখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না। তাই পাশ্চাত্য সভ্যতার ইতিহাস ও সংস্কৃতির স্বরুপ তুলে ধরার পাশাপাশি গৌরবময় ইসলামি সভ্যতাকে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রখ্যাত লেখক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান রচনা করেছেন এক ভিন্নধর্মী বই। যার নাম “সভ্যতার এপিঠ ওপিঠ”।
.
➤ সার-সংক্ষেপ:-
বইটিকে প্রখ্যাত লেখক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান বইটিকে পাচটি পর্বে বিভক্ত করে আলোচনা করেছেন। এক্ষনে আমি বইয়ে দেয়া অধ্যায় গুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দিতে চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। যাতে বইটি সম্পর্কে পাঠক কিছুটা হলেও ধারণা লাভ করতে পারেন।
১। প্রথম পর্ব:-
এখানে লেখক শুরুতেই সভ্যতা কি সে সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। এছাড়াও সভ্যতা ও সংস্কৃতি যে এক বিষয় নয় এসম্পর্কেও আলোচনা এসেছে।
২। দ্বিতীয় পর্ব:-
এ অধ্যায়ে পশ্চিমা সভ্যতার কেন্দ্রবিন্দু ও উপমহাদেশে ইসলামি সভ্যতার বিপর্যয় কিভাবে হয়েছে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
৩। তৃতীয় পর্ব:-
এখানে লেখক ইসলামি সভ্যতা ও পাশ্চাত্য সভ্যতার স্বরুপ তুলে ধরেছেন।
৪। চতুর্থ পর্ব:-
এখানে পাশ্চাত্য সভ্যতার উৎপত্তি ও ধ্বংসলীলা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে মুসলমানগণ কেন পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুসারী সে সম্পর্কেও আলোচনা এসেছে।
৫। পঞ্চম পর্ব:-
এই অধ্যায়ে লেখক পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ও ইসলামি সংস্কৃতি সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করেছেন।
.
➤ বইটি কেন পড়বেন:-
আপনি যদি পাশ্চাত্য সভ্যতা ও ইসলামি সভ্যতার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে বইটি আপনার জন্যই। এছাড়াও বইতে পাবেন পাশ্চাত্য সভ্যতা কিভাবে মুসলমানদের উন্নয়ন ও অগ্রগতি তরান্বিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আরো জানতে পারবেন ইসলামি সংস্কৃতি সম্পর্কে যা এমন এক সংস্কৃতি যা কোন দেশ, ভাষা কিংবা বর্ণে সীমাবদ্ধ নয়।
.
➤ বইয়ের গুনগত মান:-
বইটি অনেক যত্ন সহকারে সাজানো হয়েছে। প্রচ্ছদটা ও পেজের কোয়ালিটি থেকে শুরু করে বাইন্ডিং সব কিছুতেই সর্বোচ্চ মান বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই বইটি হার্ডকভারে আনলে ভালো হতো।
.
➤ ব্যক্তিগত অনূভুতি:-
ব্যক্তিগত অনূভুতি যদি বলতে হয় তাহলে বলবো আমার পড়া অন্যতম সেরা একটি বই হলো “সভ্যতার এপিঠ ওপিঠ”। বইতে লেখক শুধুমাত্র পাশ্চাত্য সভ্যতার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেই থামেনি, বরং এর বিপরীতে ইসলামি সভ্যতার বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও আলোচনা করেছেন। বইতে হয়তো খুব বেশি রেফারেন্স এর সমাহার নেই কিন্তু বইয়ের সহজ সরল বর্ণনা পড়ে যেকোনো পাঠক মুগ্ধ হবেন। তাই সকলের নিকট অনুরোধ বইটি একবার হলেও পড়ুন। সেই সাথে অন্যকেও পড়তে দিন। কেননা শুধুমাত্র আপনি একা নয় বস্তুবাদী পাশ্চাত্য সভ্যতার ভয়াল থাবায় জর্জরিত পুরো সমাজ। তাই এসবের বিরুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাড়ানোর চেষ্টা করুন। আর বেরিয়ে আসুন বস্তুবাদী সভ্যতার দাসত্বের শেকল থেকে।
.
➤ সমালোচনা:-
বইতে সমালোচনা করার মত তেমন কিছু নেই। প্রথম সংস্করণ হিসেবে বানান বিভ্রাট বা মুদ্রণত্রুটি খুব বেশি চোখে পড়েনি। এদিক থেকে প্রকাশনী প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। তবে বইয়ের কভারে বইটির নাম এক জায়গায় বইটির নাম সভ্যতার এপিঠ ওপিঠ না দিয়ে “সভ্যতার এপিট ওপিট” দেয়া হয়েছে।
.
➤ শেষ কথা:-
পরিশেষে বলতে হয় বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এত সুন্দর একটি বই লেখার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বইয়ের লেখক, প্রকাশক, পাঠক সহ সবাইকে কবুল করুন। দোয়া করি আল্লাহ লেখকের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে দ্বীনের পথে কবুল করুক।