দিন আর রাত—দিবসের দুটি পর্যায়। সূর্যের আলোপূর্ণ অংশ দিন; আলোহীন অংশ রাত। দিনের পরে রাত আসে, রাতের পরে দিন। দিন-রাতের এমন পর্যায়ক্রম, এমন বিভাজনের মতো আমাদের জীবনেরও দুটি ভাগ আছে, দুটি বাঁক আছে। জীবনের একটি বাঁকে থাকে অন্ধকার। সেখানে কখনো সূর্য উদিত হয় না। নিবিড়, ঘন কালো অন্ধকারে মজে থাকে জীবনের এই অংশ। জীবনের এই পর্যায়ে আমরা কখনো আলোর দেখা পাই না। প্রভাতের অরুণোদয়ের অনুপস্থিতি আমাদের জীবনকে ডুবিয়ে রাখে এক মহাভ্রান্তির সমুদ্রে। এই অন্ধকার কুরে কুরে খায় আমাদের। অন্ধকার, অনিয়ম আর অসততার সাথে আমরা এতই ঋদ্ধ হয়ে পড়ি যে, সেই সমুদ্র থেকে কিনারায় ওঠার কথা একসময় বেমালুম ভুলে যাই।
এরপর, একদিন সৌভাগ্যবশত আমরা পেয়ে যাই আলোর দেখা। প্রভাতী কিরণের অত্যুজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে আমাদের মনের উঠোন। হৃদয়কোণে এত দিন ধরে জমতে থাকা শ্যাওলা আর অস্বচ্ছ জলের জায়গা ভরে ওঠে স্বচ্ছতায়। নবীন এক আগমনী গানের ঝংকারে প্রতিধ্বনিত হয়ে ওঠে হৃদয়ের অন্দরমহল। সেই পবিত্র সুর আর ঝংকারে আমরা ঝেড়ে ফেলি জীর্ণতা, ছেড়ে আসি শীর্ণতা। অন্ধকারের মাঝে এক টুকরো আলো এসে আমাদের দেখিয়ে যায় মহাকালের শুভ্র পথ। সেই যাত্রা অনন্ত… অসীম।
শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম হাফিজাহুল্লাহ কর্তৃক লিখিত আয-যামান আল-কাদ্বিম ঠিক এমন একটি বই। অন্ধকারে ডুবে থাকা একদল মানুষের আলোর জগতে ফিরে আসার কাহিনিগুলোকে তিনি গল্পে রূপ দান করেছেন। সেই অন্ধকার গহ্বরে কীভাবে পৌঁছাল আলোর রশ্মি, কীভাবে পাথরের মতো পাষাণ হৃদয়ে হিদায়াতের ফল্গুধারা নেমে এল, কোন জিনিশটি আলো হয়ে এসে ভরে দিয়ে গেছে মনের উঠোন—পরিবর্তনের পেছনে এমনসব নিয়ামকগুলো নিয়ে তিনি গল্প সাজিয়েছেন। এই গল্পগুলোতে কখনো তিনি পাঠকদের কাঁদিয়েছেন, কখনো ভাবিয়েছেন। মনের সামনে ঝুলতে থাকা অন্ধকার পর্দা সরাতে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন কিছু চরিত্রের। সেই চরিত্রগুলো প্রতিনিধিত্ব করেছে আমার, আপনার এবং আমাদের। আমাদের ভুলে থাকা মন, বিস্মৃত অন্তরকে জাগিয়ে তুলতে লেখক চেষ্টা করেছেন গল্পগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা আর কাহিনির সন্নিবেশ করতে এবং লেখক তার কাজে যথেষ্টই সফল হয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। লেখকের এই বই আরব বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় এবং বহুল পঠিত একটি গল্পগ্রন্থ।
Khadijatul kubra –
এই বইটার অনুবাদ এতোই প্রাঞ্জল, মনে হয় যেনো মৌলিক লেখাই পড়ছি।
অন্ধকারে ডুবে থাকা মানুষের আলোর জগতে ফিরে আসার কাহিনীগুলোকে গল্পে রূপ দিয়েছেন। গল্পগুলো এতোটাই ছুঁয়ে যাবে,আসলেই লেখক রচিত গল্প না কারো জীবন উপাখ্যান লিখে গেছেন কলমের আঁচড়ে পার্থক্য করা মুশকিল। অন্ধকারে কিভাবে পৌঁছালো আলোর রশ্মি, পাথরের মতো কঠিন হৃদয়ে হিদায়াতের ফল্গুধারা নেমে এলো—পরিবর্তনের পেছনে এমনসব নিয়ামকগুলো নিয়ে সাজিয়েছেন গল্প। লেখক কখনো পাঠকদের কাঁদিয়েছেন, কখনো ভাবিয়েছেন। মনের সামনে ঝুলতে থাকা অন্ধকার পর্দা সরাতে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন কিছু চরিত্রের। সেই চরিত্রগুলো প্রতিনিধিত্ব করেছে আমার, আপনার এবং আমাদের। যে গল্প গুলো পড়লেই হৃদয়ে জমে থাকা কষ্ট অশ্রু হয়ে ঝরে; আমাদের ভুলে থাকা মন, বিস্মৃত অন্তরকে জাগিয়ে তুলে।
Najmul Hasan Sajib –
#অনুভূতির_প্রকাশক
বইয়ের প্রথম গল্প “বিদায়” যখন শেষ হল তখন মনে শুধু মৃত্যুর চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল। কি করছি দুনিয়ার মোহে ডুবে থেকে? অহরহ মনে একই প্রশ্ন বিরাজ করছিল। অনেক সময় নিয়ে পড়েছি বইটা। প্রত্যেকদিন ২টা করে ১৫দিনে শেষ করছি ৩০গল্প । বইটাই বিশেষ করে মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে সফলভাবে। আলহামদুলিল্লাহ
ধৈর্যধারণ,প্রত্যাবর্তনের কথা,ন্যায়পরায়ণ জীবনসঙ্গীর মর্ম,জীবনে সততা-অসততা, কুরআন হিফয, হিদায়াত, সাদাকার ফজিলত, কিয়ামতের কঠিনতম দিন ইত্যাদি বিষয়ের মেসেজগুলো আপনাকে সাহায্য করবে জীবনের স্রোতধারায় চলার জন্য।
লেখক প্রত্যেকটা গল্পের শেষে একটা মেসেজ রেখে গেছেন যা আপনাকে গভীরভাবে ভাবনায় ডুবাবে কিংবা মনে অনুশোচনা জাগ্রত করবে। আর দুনিয়ার এ পার্থিব জীবন যে মায়া বা মোহ ছাড়া কিছুই নয় তা উপলব্ধি করতে পারবেন বইটা পড়ার মাধ্যমে।
পরিশেষে,
গল্পগুলো পড়ুন + মূল মেসেজ হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করুন + জীবনে উচ্চতর দক্ষতায় প্রয়োগ করুন।
বইটা পড়ে স্বয়ং নিজেকে বিচার করুন
অনুবাদ বই –সেইসব দিনরাত্রি
মূল লেখক –শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম
অনুবাদক–আব্দুল্লাহ মজুমদার
প্রকাশনী –সমকালীন প্রকাশন