আমাদের বিশ্বাস যে আকীদার ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহর হুবুহ অনুসরণ এবং সাহাবী, তাবেয়ী, প্রসিদ্ধ চার ইমামের মতের বাইরে না যাওয়াই নাজাত ও প্রশান্তির পথ। প্রথম তিন মুবারাক যুগে যেসকল হাদিস পাওয়া যায় এবং যেসব হাদিস প্রসিদ্ধ আর হাদিস বিশারদদের দ্বারা সহীহ হিসেবে সাভ্যস্ত হয়েছে সেসবই বিশুদ্ধ আকীদার ক্ষেত্রে দলীলের মানদন্ড হওয়া উচিত। বাংলা ভাষার সাধারণ পাঠককের যারা ইসলামী আকীদার বিষয়ে জানতে আগ্রহী তাদের জন্য সহজ সাবলীলভাবে পাঠযোগ্য কিতাবের সংখ্যা খুব কমই বলা চলে। এক্ষেত্রে দেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের লেখা এই কিতাব এক অনন্য সংযোজন। কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে এই কিতাবে ইসলামী আকীদাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যা সর্ব মহলে সমাদৃত। আশা করি তা বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদেরকেও তাদের আকীদা বিষয়ক জিজ্ঞাসার উপযুক্ত জবাব আঞ্জাম দিতে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ্।
Copyright © 2024 Seanpublication.com
Shahriar Mohammad Aqib –
আকীদা বলতে মূলত ধর্মবিশ্বাস বুঝানো হয়।সত্য ও পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা ইসলামে আকীদার গুরুত্ব অপরিসীম।আকীদা শুদ্ধ থাকা আমল কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত।কালের পরিক্রমায় ইসলামী আকীদার মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি প্রবেশ করেছে।দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার জন্য এসকল বিভ্রান্তি থেকে বেঁচে বিশুদ্ধ আকীদা লালন করা একজন মুসলিমের জন্য একান্ত জরুরি। আর এক্ষেত্রে “কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা” একটি চমৎকার বই।ইসলামী আকীদার ৬টি প্রধান বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে।সমাজে বিদ্যমান বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর আকীদার খন্ডন করা হয়েছে।আমাদের পূর্ববর্তী ইহূদী খ্রিস্টান জাতি ও আরবের মুশরিকদের বিভ্রান্তির কারণ ও প্রতিকার চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।মুসলিম উম্মাহর বিভিন্ন বিভ্রান্ত ফিরকা ও তাদের বিভ্রান্তির কারণ তুলে ধরা হয়েছে।কী কী কারণে শিরক কুফর হয়, মুসলিম সমাজে কীভাবে শিরকের অণুপ্রবেশ ঘটে, এগুলো থেকে বাঁচার উপায়, সুন্নতের গুরুত্ব, বিদআত কেন বর্জনীয় -এসকল বিষয় ব্যক্ত করা হয়েছে সহজ ও সুখপাঠ্য ভাষায়।কুরান সুন্নাহর দলিলের আলোকে প্রতিটি বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে।আকীদার ক্ষেত্রে কুরআন,সুন্নাহ, সাহাবী তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ী ও চার ইমামের মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন।কিছু ক্ষেত্রে আলোচনা আরেকটু সংক্ষিপ্ত হলেও চলতো বলে মনে হয়েছে।তবে বিজ্ঞ লেখক প্রয়োজনীয়তার আলোকে এমনটি করেছেন বলে মনে হয়।পরিশেষে, শুদ্ধ আকীদার জন্য শুদ্ধ জ্ঞান অর্জন করা আবশ্যিক। এক্ষেত্রে “কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা” বইটি খুবই উপকারী ও উপযোগী।আসুন আমরা সকলে বিশুদ্ধ আকীদা শিখি, গ্রহণ করি, ধারণ করি ও লালন করি
nayeem_sharder –
বই- ইসলামী আকীদা
উম্মাতের মধ্যে আকীদার ক্ষেত্রে অনেক বিতর্ক ও মতভেদ রয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। প্রথম তিন শতাব্দীর আলিমদের লেখা এবং ৭ম শতকের আলিমদের আকীদা বিষয়ক লেখা বই পত্রে অনেক পার্থক্য লক্ষণীয়। এদিকে সাধারণ মানুষদের জন্য সহিহ আকীদা নিয়ে বেধে গেলো বিপত্তি।
তাই আমাদের বর্জন করতে হবে সকল প্রকার অপ্রসিদ্ধ হাদীসগুলো। কুরআন ও হাদীদের ব্যাখার জন্য সাহাবী, তাবিয়ী, ও ঈমামগনদের মতামতের উপর নির্ভর করতে হবে। আর মহান আল্লাহর রহমত ও তাওফিকই আমাদের একমাত্র সম্বল।
কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা বইটির আলোচ্য বিষয় ৬টি অধ্যায়ে বিভক্ত আধ্যায়ে করা হয়েছে। এই অধ্যায়গুলোর মধ্যেই আকীদার সকল প্রকার খুটিনাটি বিষয়গুলো আনা হয়ছে। যেমন- আকীদার উৎস, গুরুত্ব, বিভ্রান্ত দিকগুলো, রিসারাতের প্রতি ঈমান, শিরক, কুফুর, নিফাক, বিদ’য়াত ইত্যাদি। প্রতিটা বিষয়েই মোটামুটি বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যে কেউ খুব সহজেই পড়ে বুঝতে পারবে সেই উপযোগী করেই লেখা।
আমাদের সমাজে এমন অনেক বিষয়ই আছে যা ঈমান বিধ্বংসী। কিন্তু ইসলাম বিষয়ে আমাদের অজ্ঞতার কারণে আমরা অনেকেই আমাদের ঈমানকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছি।এই বইটি আমাদের কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে আমাদের সহিহ আকিদা এবং বিশ্বাস বুঝতে সাহায্য করবে ইনশা আল্লাহ।
Aliza anu –
আমাদেরকে এ জগতে সৃষ্টি করা হয়েছে যেন আমরা আল্লাহর এবাদত করি। আমরা দৈনন্দিন জীবনে বহু আমল করে থাকে শুধুই তার প্রশংসা অর্জনের জন্য, শুধুই তার রহমত এর আশায় রাতদিন এক করে আমরা তার এবাদতএ পড়ে থাকি। কিন্তু আমাদের এ আমল আসলেই কি সঠিক হয়।
বর্তমান যুগে আমাদের মাঝে অনেক বাতিল ফিরকা জন্ম নিয়েছে। তারাও আমাদের মত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমল করে যায়।
তারা এটাকে সঠিক বলে বিশ্বাস করে এবং মানুষের মাঝে তা ছড়িয়ে বেড়ায়। কিন্তু অনেক কিছু আমাদের না জানার কারণে আমরা তাদের মাধ্যমে বিভ্রান্ত হয়।
সুতরাং আমাদেরকে জানতে হবে কোনটা হক, কোনটা বাতিল।
আমাদেরকে বুঝতে হবে ইসলাম কাকে বলে, ঈমান কাকে বলে।
এইসব জানার জন্য আকিদা শাস্ত্র অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এ ব্যাপারে অনেক কিতাব রচিত হয়েছে। তার মধ্য থেকে একটি হল ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যারের এই ইসলামী আকীদা বইটি।
স্যারের এই বইটা আমাদের জন্য অনেক উপযোগী। খুবই সুন্দর সহজ ভাষায় তিনি আকিদার মতো কঠিন বিষয়কে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন।
এই বইটা পড়লে আমরা জানতে পারব
ঈমানের ভিত্তি কয়টি ও কি কি।
ইসলাম এবং ঈমানের মধ্যে পার্থক্য কোথায়,
বাতিল-ফিরকা কী অপব্যাখ্যার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে তাও জানা যাবে।
আকিদার বিষয়টা পুরাটাই ওহীর উপরে নির্ভরশীল। এতে মানবীয় বুদ্ধির কোন স্থান নেই তা তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলে গিয়েছেন। কিন্তু অনেকেই মানবীয় বুদ্ধির মাধ্যমে আকিদার ব্যাখ্যা করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়েছে। এই বিষয়েও তিনি আলোচনা করেছেন।
প্রতিটা লাইনে অনেক অজানা তথ্য রয়েছে যা আমাদের প্রত্যেকের জানা আবশ্যক।
আমরা জানতে পারব কিভাবে আমাদের ঈমান ধ্বংস হয়ে যাবে,কিভাবে তা বৃদ্ধি পাবে।
শিরক কাকে বলে,বিভ্রান্তি কাকে বলে, কিভাবে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে যায়, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস এর অর্থ কি, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এর অর্থ কি, রাসূলের প্রতি ঈমান এর অর্থ কি, আল্লাহর গ্রন্থসমূহে বিশ্বাস এর মানে কী,
এগুলো সবই আমরা জানতে পারবো।
তিনি আমাদেরকে জানিয়েছেন আরো অনেক অজানা তথ্য।যেগুলো না জানলে আমাদের ঈমান-ইসলামের উপরে থাকাটা কষ্টকর হয়ে যাবে। বহিঃশত্রু সুযোগ পেয়ে যাবে আমাদেরকে ইসলাম থেকে দূরে সরাতে।
আজ আমাদের না জানার কারণে আমরা বহিঃশত্রুর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়ে।
এ কারণে আমাদের ঈমান বাঁচানোর জন্য অবশ্যই আমাদেরকে আকিদা সম্পর্কে জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং এর উপরে আমল করতে হবে।তবেই আমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের উপর চলতে পারবো।নিজেদের জীবনকে সফল করতে পারবো
Rehmatullah Sojol –
কথা বলবো ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ এর রচিত ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ বইটি নিয়ে। বইটি প্রকাশ করেছে আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন। বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪০ আর গায়ের দাম ৪০০ টাকা।
.
[রিভিউ]
ছোটবেলায় হুজুরকে পড়া দেওয়ার তাগিদে মুখস্ত করেছিলাম ঈমানে মুফাসসাল। আমানতু বিল্লাহি ওয়া মালাইকাতিহী ওয়া কুতুবিহী ওয়া রুসুলিহী ওয়াল ইয়াওমিল আখিরি ওয়াল ক্বদরী খইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তা’আলা ওয়াল বা’সি বা’দাল মাওত।
.
যার অর্থ করলে দাঁড়ায়, আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাসমূহের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগনের প্রতি, তাকদীদের ভালো-মন্দ সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায় হয় – এর প্রতি এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত হওয়ার প্রতি।
.
ঈমানে মুফাসসালে যেই বিশ্বাসগুলোর কথা বলা আছে, সেগুলো হচ্ছে আরকানুল ঈমান (ঈমানের খুঁটিসমূহ)। একজন মানুষকে মু’মিন হতে হলে অবশ্যই আন্তরিকভাবে উপরের ছয়টি বিশ্বাস নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে।
.
কিন্তু ঈমানে মুফাসসাল তো শুধু মুখস্ত করে রাখলেই হবেনা। আমি যে বললাম, ‘আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলাম’ এই বিশ্বাস স্থাপনের স্বরুপ কি? এই কথা দ্বারা মূলত কি বোঝায়? ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস দ্বারা কি বোঝায়? কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাসের দ্বারা কি বোঝায়? রাসূলগনের প্রতি বিশ্বাস দ্বারা কি বোঝায়? আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস দ্বারাই বা কি বোঝায়? তাকদীরের স্বরুপ কি আসলে? মৃত্যুর পরে পুনরুত্থিত হওয়ার মানে কি? এগুলোর স্বরুপ অন্বেষণ করাটাই মূলত ঈমানের দাবী।
.
তো, এগুলোর স্বরুপ সন্ধান করতে, এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইসলামী আকীদার উপরে নির্ভরযোগ্য বই খোঁজা শুরু করলাম। সন্ধান পেয়ে গেলাম ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহিমাহুল্লাহ রচিত ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ বইটির। স্যারের নাম দেখেই কিনে নিলাম। এরপর যখন বইটি পড়তে লাগলাম তখন নতুন এক নিজেকে আবিস্কার করলাম। ভাবতে লাগলাম, ইসলামী আকীদার এত বিস্তৃত ভান্ডার সম্পর্কে দেখি একেবারেই অজ্ঞ ছিলাম আমি!
.
তো, কি আছে বইটির ভেতর?
বইটির ভেতর প্রথমেই আপনি পাবেন ঈমান, আকীদা ও এধরণের টার্ম দ্বারা আসলে কি বোঝায় সে সম্পর্কে আলোচনা। তারপর আলোচনা এসেছে ইসলামী আকীদার উৎস ও এর গুরুত্ব নিয়ে। তারপর ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা এসেছে উপরে উল্লেখিত আরকানুল ঈমানসমূহ নিয়ে।
.
বইটিতে যে শুধুমাত্র আরকানুল ঈমান নিয়ে আলোচনা এসেছে তা কিন্তু নয়। এই আরকানুল ঈমান নিয়ে মুসলিম সমাজে যে ভ্রান্ত বিশ্বাসগুলো আছে বা পূর্বে ছিল লেখক সেগুলোও তুলে ধরেছেন। সেই ভ্রান্ত বিশ্বাসগুলোর বেশিরভাগই রাসূল সা. কে ঘিরে। সেগুলোর অন্যতম হলো, রাসূল সা. ইলমুল গায়েব জানেন, রাসূল সা. ইন্তেকাল করেননি, রাসূল সা. এর সব জায়গায় হাজির-নাযির হওয়া ইত্যাদি ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়েও স্যার রাহি. আলোচনা করেছেন।
.
এরপর স্যার রাহিমাহুল্লাহ কুফর, শিরক ও বিদ’আত নিয়ে বেশ চমৎকার ও কম্প্রিহেন্সিভ আলোচনা নিয়ে এসেছেন।
.
সবশেষে শাইখ রাহিমাহুল্লাহ আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের সাথে। তারপর সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেছেন বাতিল ফিরকাগুলির পরিচয় ও বিভ্রান্তিগুলো নিয়ে।
.
বইটির ব্যাপারে একটু দৃষ্টিকটু লেগেছে, বইটির বাইন্ডিং মান। তবে এতো ভালো না হলেও তা এভারেজ মানের। আর কিছু টাইপিং মিস্টেক চোখে পড়েছে, যা এতো বড় কলেবরের বইতে থাকাটা অনেক স্বাভাবিক।
.
তো সব মিলিয়ে যারা বইটা পড়েননি তাদের উদ্দেশ্যে এটা বলতে চাই, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকীদা জানতে এবং এ ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য স্যারের এই বইটি অবশ্যপাঠ্য। আল্লাহ তা’আলা স্যারের কবরে রহমতের বারিধারা বর্ষণ করুন।
Farzana Ashrafi –
নিখাদ ঈমাণ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। আমরা আমাদের আমল-ইবাদাত শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার নিমিত্তে করলেও অজ্ঞতা আর ভ্রান্ত বিশ্বাসের কবলে পড়ে অনেক সময়ই লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়ি। ঈমাণে খাদ ঢুকে পড়ে। ঈমাণের আরকান তথা আকীদা সম্বন্ধে সুস্পষ্ট জ্ঞান না থাকায় এমনটা হয়ে থাকে। আমাদেরকে এহেন পরিস্থিতি থেকে উত্তরনে সাহায্য করার নিয়তে ড. খোন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. লিখেছিলেন ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ বইটি।
৬৪০ পৃষ্ঠার এই বইটি ৬টি অধ্যায়ে বিস্তৃত। মূল আলোচনায় প্রবেশের পূর্বে প্রথমেই সুন্দর একটি ভূমিকার মাধ্যমে শাইখ (রহ.) আকীদা সম্পর্কে জানার গুরুত্ব, প্রয়োজনীতা এবং নিজের অনুসরণীয় আকীদা সম্পর্কে আমাদের জানিয়েছেন। তারপর মূল আলোচনা এগিয়েছে….
প্রথম অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে আকীদা ও প্রাসঙ্গিক পরিভাষাগুলির পরিচিতি, ইসলামী আকীদার উৎস, গুরুত্ব এবং আকীদা বিষয়ক গ্রন্থাবলী সম্পর্কে।
দ্বিতীয় অধ্যায়ে আছে তাওহীদ ও তার প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা।
তৃতীয় অধ্যায়ে বলা হয়েছে রাসূল সা. সহ অন্যান্য নবী-রাসূল তথা রিসালাতের ওপর ঈমাণ আনা সম্বন্ধে।
চতুর্থ অধ্যায় বিস্তৃত আরকানুল ঈমাণ তথা ঈমাণে বিভিন্ন স্তম্ভ যেমন: ফেরেশতা, আসমানী কিতাব, আখিরাত, তাকদীর ইত্যাদির সমন্বয়ে।
পঞ্চম অধ্যায়ে আছে আকীদা বিষয়ে নানা অবিশ্বাস ও ভ্রান্তি সম্পর্কে আলোচনা।
সবশেষে, ষষ্ঠ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে আকীদা বিষয়ে উদ্ভাবিত বিদআত ও বিদআত ভিত্তিক ফিরকা, দল, উপদল এবং আহলুস সুন্নাত ও জামায়াতের পরিচিতি ও মূলনীতি বিষয়ে।
গুরুত্ব অনুসারে আলোচনা গুলোকে বিভিন্ন শিরোনাম,উপ-শিরোনামে বিন্যাস করা হয়েছে।
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
শাইখের লেখার ভঙ্গিও তাঁর কথার মতই সহজ-সরল। সহজেই হৃদয়ঙ্গম করা যায়।
ভাষার প্রাঞ্জলতা, সংক্ষিপ্ত অথচ নিখুঁত ডিটেইলিং এবং প্রচুর রেফারেন্স তাঁর লেখার প্রধান বৈশিষ্ট্য। আর যেহেতু বইটা একেবারেই সাধারণ মুসলিমদের উদ্দেশ্যে লিখিত তাই প্রত্যেকটা বিষয়ে স্পষ্ট এবং বিস্তৃত কিন্তু বাহুল্যবর্জিত আলোচনা করা হয়েছে।
আকীদার ত্বত্তীয় বিষয়গুলোর পাশাপাশি আমাদের মুসলিম সমাজে সুঁই হয়ে ঢোকা শির্ক এবং বিদআত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভ্রান্তিকর মতবাদ এবং ফিরকাগুলো সম্পর্কে জানাও আমাদের ঈমাণ রক্ষার জন্য ভীষণভাবে জরূরী। এটাও শাইখ খুব যত্নের সাথেই আলোচনা করেছেন।
পরিচিত মন্ডলের মানুষদের বিভ্রান্তি আর অপজ্ঞানের চর্চা দেখে এটা বলতে পারি, এই বইটা পড়া এদেশের সকল মুসলিমের জন্য ভীষণ জরুরী। ভ্রান্তি এবং অজ্ঞতা থেকে নিজের ঈমাণকে সুরক্ষা দিতে হলে আকীদা সম্পর্কে জানতেই হবে। আর তার জন্য ‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ চমৎকার একটি সহায়িকা।
Meher Afroz –
📘বুক রিভিউ📙
বইঃ ইসলামী আকীদা
লেখকঃ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর [র.]
ইসলামি পরিভাষায়— আকীদা বলা হয় নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন কর। এটা এমন কিছু বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করাকে বুঝায় যার কারণে বিশ্বাসী ব্যক্তিকে ‘মুমিন’ বিবেচিত করা হয়। আকীদার প্রকৃতি বা স্বরূপ সম্পর্কিত বিষয়াদি খুবই স্পর্শকাতর। কেননা এসব বিষয় ব্যাপারে কারো সন্দেহ থাকলে তাঁর কোন আমল গ্রহণযোগ্য হয় না। যেমন: আল্লাহ্কে স্রষ্টা, অদ্বিতীয়, স্ত্রী-সন্তানহীন, পালনকর্তা, নিরঙ্কুশ ক্ষমতার মালিক বলে বিশ্বাস রাখা। নবী-রাসূলকে মানা, প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ [সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে শেষ নবী মানা, আসমানী কিতাবগুলোকে মানা, ফেরেশতা -দের বিশ্বাস করা, পরকালের প্রতি অকাট্য বিশ্বাস, তকদীর বিশ্বাস ইত্যাদি বিষয়কে মনে প্রাণে বিশ্বাস করাই সঠিক আকীদার প্রমাণ। এছাড়া আরো যে সব বিষয় রয়েছে সেগুলোকেও মানা বিশুদ্ধ আকীদার পরিচয় বহন করে। আর এসব বিষয়ে সন্দেহাতীতভাবে জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজে আঈন। এই ফরজ জ্ঞান সকল পাঠকের দ্বারে পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘আস্- সুন্নাহ পাবলিকেশন’ প্রকাশ
করেছেন বিস্তারিত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘ ইসলামী আকীদা’ বইটি।
বইটিতে যা আছেঃ—
বইটির আলোচ্য বিষয় ৬টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে আকীদা ও প্রাসঙ্গিক পরিভাষাগুলির পরিচিতি, ইসলামী আকীদার গুরুত্ব, উৎস, ভিত্তি ও এ বিষয়ক বিভ্রান্তি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। দ্বিতীয় অধ্যায়ে তাওহীদ ও তার প্রকারভেদ আলোচনা করা । তৃতীয় অধ্যায়ে মুহাম্মাদ -এর রিসালাতের প্রতি ঈমানের অর্থ, প্রকৃতি, শর্ত ও দায়িত্বাবলি আলোচনা করেছি। চতুর্থ অধ্যায়ে আরকানুল ঈমানের অবশিষ্ট বিষয়গুলি আলোচনা করা হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়ে শিরক, কুফর, নিফাক, এগুলির প্রকারভেদ, কারণ, প্রেক্ষাপট, মুসলিম সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন প্রকারের শিরক, কুফর ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছি। এবং ষষ্ঠ অধ্যায়ে ইসলামী আকীদার বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে উদ্ভাবিত বিদ’আত ও বিদ‘আতভিত্তিক ফিরকা, দল, উপদল ও আহলুস সুন্নাত ও জামা’আতের পরিচিতি ও মূলনীতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
পাঠ্যানুভূতিঃ—
উম্মাহের এমন ক্রান্তিকালে এই বইটা সোনা- মাণিক্যের চাইতেও মূল্যবান বলে মনে করি।কারণ, মু’মিনের জীবনে প্রতিটি কাজের সাথে আকীদার সম্পর্ক রয়েছে।আর ঈমান-আকীদা শুদ্ধ না হলে নামায-রোযা সহ কোন ইবাদাত’ই আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় হবে না। যেমন কেউ যদি শিরকি আকীদা পোষণ করে তাহলে যত ইবাদতই করুক না কেন সব কিছুই বিফলে যাবে। তাই আমি মনে করি এই বইটি সকলের ঘরে থাকা অতিব জরুরি। এমনি নিজের নিজের আকীদাকে বিশুদ্ধ করার লক্ষ্যে নিয়মতি কম বেশি বইটা পড়া জরুরি।
আরেকটা বিষয় না বললেই নয়, ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার খুব সহজ ভাষায় আকীদা বিষয়ক বিভিন্ন মতপার্থক্য গুলো বর্ণনা করেছেন।যদিও প্রথম প্রথম মনে হতে পারে বিষয়গুলো খুব কঠিন।কিন্তু গভীরভাবে বুঝতে চেষ্টা করলে [ ইন শা আল্লাহ ]অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খুব সহজে জানা হয়ে যাবে।
লেখক উম্মাহর মাঝে বিশুদ্ধ জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে আজীবন কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন।আল্লাহ তাঁর পরিশ্রম নিশ্চয়ই কবুল করেছেন/ করবেন।ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ উনাকে সহ এ বইটার পেছনে শ্রম, অর্থ, মেধা বিনিয়োগকারী সকলকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।আমিন।
রিভিউদাতাঃ Meher Afroz
Umme Suraiya –
ইসলামী আকীদা
ড.খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
———————————————
“আকীদা”যার অর্থ হচ্ছে বিশ্বাসমালা।ইসলামের মৌলিক বিষয় গুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসকেই আকাইদ বলা হয়।
বইটিতে ইমান এবং ইসলাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ—
ইসলামের সঙ্গা:
———————–
الا سلام ان تشھد ان لااله الا الله وان محمدارسول الله وتقيمالصلاةوتوتی الز کاة وتصوم رمضان وتحخ البيت ان استطعت اليه سبيلا.
অর্থ:ইসলাম হলো-তুমি এক কথার সাক্ষ্য দেবে যে,আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই।আর মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। সালাত আদায় করবে, যাকাত প্রদান করবে,রমজানে রোজা পালন করবে এবং সামর্থ্য থাকলে বাইতুল্লাহর হজ পালন করবে।
ইমান:
———-
امنت بالله وملا ٸکته وکتبه ورسله واليوم الاخر والقدر خيره وشره من الله تعا لی والبعث بعد الموت.
অর্থ:আমি ইমান আনলাম আল্লাহর প্রতি,তার ফেরেশতাগনের প্রতি,তার কিতাব গুলোর প্রতি,তার রাসূলগনের প্রতি আখিরাতের প্রতি,তাকদিরের প্রতি যার ভালো মন্দ আল্লাহর নিকট থেকেই হয় এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের প্রতি।
একজন মানুষকে প্রকৃত মুসলিম হতে হলে যেসব বিষয়াদি জানতে হবে তা নিয়েই বইটি লখা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
রিভিউ দাতা :Umme Suraiya