রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “কুরআনের ব্যাপারে নিছক মতের ভিত্তিতে তর্কবিতর্ক হলো কুফরি। তিনি এ কথাটি তিনবার বলেন, তোমরা (নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে) যা জান, তার ওপর আমল করো; আর যা জান না, তা এমন ব্যক্তির নিকট থেকে জেনে নাও যে তা জানে।”
উপরোক্ত হাদিসে আমরা দেখতে পাই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবা ও পরবর্তী প্রজন্মের সকল মুসলমানকে আন্দাজ-অনুমান ও প্রমাণবিহীন মতের ভিত্তিতে কুরআনের ব্যাখ্যা প্রদানের ব্যাপারে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করেছেন।
কারণ, কুরআন হলো ইসলামের মূল ভিত্তি; সুতরাং তা অবশ্যই বিশুদ্ধ ও অপরিবর্তিত থাকতে হবে। প্রত্যেক ব্যক্তিকে ইচ্ছেমতো কুরআন ব্যাখ্যার স্বাধীন ছাড়পত্র দেওয়া হলে এর মর্যাদা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং স্বয়ং ইসলামের ভিত্তিই দুর্বল হয়ে পড়বে। সুতরাং একমাত্র সেই তাফসিরই গ্রহণযোগ্য, যা নিম্নোক্ত ক্রমধারা মেনে চলে–
- কুরআন দ্বারা কুরআনের তাফসির;
- আল্লাহর রাসূলের সুন্নাহ দ্বারা তাফসির;
- সাহাবায়ে কেরামদের বক্তব্য দ্বারা তাফসির;
- ভাষাগত ব্যাখ্যার মাধ্যমে শর্তসাপেক্ষ তাফসির; এবং
- পরিশেষে মতামত ভিত্তিক তাফসির–যদি সে মতটি পূর্বের চারটি পদ্ধতির ভিত্তিতে হয় এবং সেগুলোর কোনো একটির সাথেও সাংঘর্ষিক প্রতীয়মান না হয়।
ড. বিলাল ফিলিপসের কুরআন বুঝার মূলনীতি বইটা খুব উঁচু স্তরের ইলমি কোনো গ্রন্থ নয়; তবে দ্বিনের পথে চলার জন্য ইলমের প্রয়োজনীয়তাটা হয়তো আপনাকে হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেবে। নিজের অজ্ঞতা মাপার জন্য আপনার হাতে একটা প্যারামিটার দেবে। আর এটা আজকাল আমাদের প্রয়োজন—খুবই প্রয়োজন।
Mahbuba Islam Disha –
ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। যার রয়েছে বিভিন্ন স্তর। প্রত্যেকটা স্তরের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মূলনীতি। যেসব মূলনীতি সম্পর্কে না জানলে ধর্মের ব্যাপারে বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ।
তাই কুরআন বোঝার জন্য ও রয়েছে বেশ কিছু মূলনীতি। যেগুলো সম্পর্কে সচ্ছ ধারণা না থাকলে কুরআনের অপব্যাখ্যা করা বা সংশয় থাকাটাই স্বাভাবিক। আর এই সংশয় কেবল মাত্র অমুসলিম আর নাস্তিকদের মাঝে নয় আমাদের মুসলিমদের মাঝেও বিদ্যমান।
তাই এই ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা রাখা আমদের সকলের প্রতি আবশ্যক।
সেই আবশ্যকতাকে উদ্দেশ্য করে ড.বিলাল ফিলিপস রচনা করেছেন “উসুল আত তাফসির” নামক গ্রন্থ।
গ্রন্থটির বাংলা অনুবাদ করেছেন সিয়ান পাবলিকেশন, বাংলা অনুবাদে নাম দেওয়া হয়েছে “কুরআন বোঝার মূলনীতি”।
পনেরোটা অধ্যায়ে সাজানো হয়েছে বইটা। অধ্যায় গুলোর নাম পর্যায়ক্রমে:
কুরআনের তাফসীর, তাফসীর গ্রন্থাবলী, কুরআনের অর্থের অনুবাদ, কুরআন: অনন্য কিতাব, ওহী: আসমানী প্রত্যাদেশ, কুরআন নাযিল, কুরআন সঙ্কলন, কুরআনের মূল পাঠ, আঞ্চলিক আরবি ও কুরআন, আসবাবুন নুযূল, মাক্কী ও মাদানী ওহী, নাসখ: রহিতকরণ ও প্রতিস্থাপন, মুহকাম ও মুতাশাবিহ, কুরআনের সাহিত্যশৈলী, কুরআনের ভাষাশৈলী।
অধ্যায় গুলোর নাম থেকেই বোঝা যায় বইটা কতখানি গুরুত্ব বহন করে।
প্রতিটা অধ্যায়ের রয়েছে বিস্তারিত বর্ননা।
তাছাড়া এই বইতে কিছু কিছু আরবি শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে আর এ কারণে আরো বেশি জমকালো মনে হয়।
যদিও তাতে পাঠকের পড়ার কোনো অসুবিধা হবে বলে মনে হয় না কারণ বইয়ের শেষে নয় পৃষ্ঠার শব্দকোষ দেওয়া আছে।
গ্রন্থটি পড়ে একজন পাঠক কুরআনের তাফসীরের মতো বিস্তর ইলমের ব্যাপারে কিছুটা হলেও ধারণা পাবে, ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ সুব হালাহু তায়ালা লেখক কে এবং প্রকাশনার কাজে যারা যারা শ্রম দিয়েছেন তাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন।