একদিন স্বল্পকালীন এই জীবনের সমাপ্তি শেষ হয়ে শুরু হবে ওপারের জীবন৷ বুকের মাঝে লালিত স্বপ্নগুলো পূর্ণতা পাবে ঠিক সেদিন, যেদিন মুমিনরা জান্নাতে পা রাখবে৷ অব্যক্ত দুঃখগুলো সব উঁবে যাবে জান্নাতের নিলুয়া বাতাসে৷ অশ্রুসিক্ত নিনাদগুলো পূর্ণতা পাবে, জান্নাতের মৃদুমন্ধ বাতাসের প্রথম স্পর্শে৷ জান্নাতে মন ভাঙার কোনো গল্প নেই৷ জান্নাতে কখনো কারো মন খারাপ হবে না৷ সেখানে না পাওয়ার কোনো দুঃখ নেই৷ আবার পেয়েও হারানোর কোনো কষ্ট নেই৷ সেখানে থাকবে না কোনো পিছু টান৷ থাকবে না কোনো বারণ৷ থাকবে শুধু সুখ আর সুখ৷ যে সুখে মুমিনরা হাবুডুবু খাবে জনম জনম৷
Copyright © 2024 Seanpublication.com
সিরাজাম বিনতে কামাল –
❀ ওপারের সুখগুলো ❀
📚প্রারম্ভিকা:
——————-
‘রঙের দুনিয়া ছেড়ে যখন জান্নাতে তুই যাবি,
ওপারেতে অনেক সুখ শুধু-রে তুই পাবি।’
রামধনুর সবগুলো রঙের মিশ্রণে জামা হলে কেমন লাগবে বলো তো দেখি!
নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো শাদা মেঘ কোথায় গেলে ছুঁয়ে দেখতে পারবো!
কোথায় গেলে দেখতে পাবো প্রজাপতির মিলনমেলা! যেখানে রঙ বেরঙের হাজার প্রজাপতি উড়াউড়ি করে। কোথায় গিয়ে হাত বাড়ালেই উড়ে আসবে একটা রঙিন প্রজাপতি!
কোথায় গেলে শুনতে পাবো ঝর্ণার কুলুকুলু ধ্বনি!
এরকম কতশত খায়েশ আমাদের মনে জন্ম নেয়। আমি বেশি ভাবতে পারি না। তন্ময় হয়ে নিজেই নিজেকে বলি,’ ইন শা আল্লাহ! জান্নাতে একদিন সব হবে। আমি যা চাই তা হবে, আমি যা কল্পনা করতে পারিনা তাও হবে। আমার কল্পনার সৌন্দর্য যেখানে গিয়ে শেষ হয়, জান্নাতের সৌন্দর্য সেখান থেকেই শুরু হয়৷’
কুরআনে তো উল্লেখ আছে, ❝কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্যে কি কি নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুকায়িত রয়েছে।❞ || সুরা সাজদা: ১৭ ||
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
❝জান্নাতে এমন নিয়ামত বিদ্যমান রয়েছে, যা কোন চক্ষু দর্শন করেনি, কোন কান শ্রবণ করেনি এবং কোন মানুষের মনে তার ধারণার উদ্রেকও হয়নি।❞
|| আস-সুনান,ইবনু মাজাহ: ৪৩৩২; আস সহিহ,
ইবনু হিব্বান: ২৬২ ||
📚রিভিউ কথন:
———————-
দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। একদিন আমাদের সকলকেই এ’দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। গন্তব্য চিরস্থায়ী জান্নাত বা জাহান্নাম।
এ দুনিয়ার স্বল্পকালীন জীবন শেষ হবে একদিন। শুরু হবে ওপারের জীবন। বুকে লালিত করা স্বপ্নগুলো পূর্ণতা পাবে একদিন। যেদিন মুমিনরা জান্নাতে পা রাখবে। সেদিন অব্যক্ত সব দুঃখগুলো কর্পূরের ন্যায় উবে যাবে জান্নাতের নিলুয়া বাতাসে। অশ্রুসিক্ত নিনাদগুলো পূর্ণতা পাবে, জান্নাতের মৃদুমন্দ বাতাসের প্রথম স্পর্শে।
জান্নাতে মন ভাঙার গল্প থাকবে না, বিষাদের কালো মেঘে কখনো মন ছেয়ে যাবে না, সেখানে নেই না পাওয়ার বেদনা, নেই কিছু হারানোর কষ্ট, নেই অভাব-অনটন, দুঃশ্চিন্তা। থাকবে না কোন পিছুটান। জান্নাত! পরম প্রাপ্তির স্থান। সেখানে কেবল সুখ আর সুখ।
কেমন হবে ‘ওপারের সুখগুলো’! কী এমন পুরস্কার দিবেন রব, যে মুমিনরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়ে যাবে। তারা দুনিয়ায় সব দুঃখ কষ্ট ভুলে যাবে।
ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া রাহি. রচিত ‘সিফাতুল জান্নাহ’ গ্রন্থের অনুবাদ হলো- ‘ওপারের সুখগুলো’ বইটি।
বইটাতে আলোচনা করা হয়েছে জান্নাতের সব নিয়ামত সম্পর্কে। যারা রব্বকে খুশি করার জন্য, রব্বের বিধান মেনে চলার জন্য নফসকে হারানোর সংগ্রাম করে, নফসকে হারিয়ে দেয়। তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত পুরস্কারসমূহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সবিস্তারে।
বইয়ে একুশ’টি পাঠে ছোট ছোট টপিকের মাধ্যমে জান্নাতের আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়েছে। জান্নাতী খাবার, জান্নাতী পানাহার, জান্নাতী বস্ত্র, জান্নাতী অট্টালিকা, জান্নাতী মাটি, জান্নাতী বৃক্ষ, জান্নাতী বাজার, জান্নাতী গানবাজনা, জান্নাতী অলংকার। জান্নাতের একটা চিত্র ফুটে উঠেছে এই বইয়ে।
সূচিপত্র থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু পাঠের নাম:
☘️ জান্নাতের বর্ণনা
☘️ জান্নাতু আদনে’র নিয়ামাহ
☘️ সুমিষ্ট পানি হাউজে কাউসার
☘️ রবের সাথে সাক্ষাত
☘️ জান্নাতীদের স্তরসমূহ
☘️ জান্নাতীদের পরস্পরে সাক্ষাত-নিকেতন
☘️ হুরেইন: জুড়িয়ে দিবে জীবন
☘️ হুরেইনের গুণাগুণ
📚পাঠ্যভিমত:
———————
সত্যি বলতে গেলে, বইটা পড়া শুরু করলেই মনের সব হতাশা, না পাওয়া সব অভিযোগ মন থেকে মুছে যায়। হৃদপ্রকোষ্ঠ থেকে একটাই বাক্য বের হয়ে আসে, ‘ইন শা আল্লাহ! একদিন সব হবে।’
বইটা পড়ে যত সামনে যাবেন ততই আপনার মন খুশিতে ভরে উঠবে। গুনাহের কাজ ছেড়ে নেকী কুড়ানোর প্রতি উৎসাহী হবেন। জান্নাতের পুরস্কারগুলো সম্পর্কে যত জানবেন ততই আপনি আনন্দে উদ্বেলিত হবেন। রব্বের বিধান মানার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবেন, ইন শা আল্লাহ!
প্রথমবারের মত পড়ার পর, আমার মনে হয়েছে এ’বইটা আমার মন খারাপের সঙ্গী হিসেবে কাজ করবে ইন শা আল্লাহ! পছন্দের বইয়ের তালিকায় এ’বইটাও যুক্ত হলো আলহামদুলিল্লাহ!
পাঠক প্রকাশনীর অন্যান্য বইয়ের মত এই বইয়ের ভাষা ব্যবহারও বেশ সহজবোধ্য হয়েছে। ফুটনোটে রেফারেন্স যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বর্ণিত হাদীসসমূহ আরবিসহ উল্লেখ করা হয়েছে।
বইয়ের টপিক এতটাই হৃদয়গ্রাহী যে টপিকই পাঠককে বইয়ের ভেতরে টেনে নিয়ে যাবে। আশা করি, বইটা খুব সহজেই আমার মত অন্যান্য পাঠকেরও মন জয় করে নিবে, ইন শা আল্লাহ!
📚লেখক পরিচিতি:
—————————
সুন্দর এ’বইটা আমাদের উপহার দিয়েছেন ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া রাহি.। তিনি ২০৮ হিজরিতে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। বাগদাদে বড় বড় শাইখদের কাছে তিনি ইলম ও আদব শিক্ষা করেন। তাঁর উস্তাদের সংখ্যা অনেক, প্রায় ১২০জন হবে। তাঁর শাগরেদ সংখ্যাও অনেক। অনেক বিজ্ঞ আলিম তাঁর কাছ থেকে ইলম ও আদব শিক্ষা অর্জন করেছেন।
তিনি অনেক কিতাবাদী রচনা করেছেন। প্রত্যেক বিষয়ে তাঁর সমান পদার্পণ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, তাঁর লিখিত কিতাব সংখ্যা প্রায় ১৬২টি।
আল ইখলাস ওয়ান নিয়্যাহ, ইসলাহুল মাল, আত তাওবা, আত তাওয়াক্কুল, যাম্মুদ দুনিয়া, আশ শোকর, আয যুহুদ, আল ইখলাস, যাম্মুল গিবাহ ইত্যাদি তাঁর কয়েকটি প্রসিদ্ধ রচনাবলী।
তিনি ২৮১ হিজরি সনে জুমাদাল উলা মাসে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন। ‘শাওনিযিয়্যাহ’ নামক স্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
📚অবশেষে:
——————–
একদিন হৃদয় জুড়ে হতাশার কালো মেঘ থাকবে না। হৃদপ্রকোষ্ঠে জমে থাকা অব্যক্ত দুঃখেরা নিমিষেই মিলিয়ে যাবে। হৃদয়ের দেয়ালে টানিয়ে রাখা না পাওয়ার শত লিস্ট ঠিক সেদিন পূর্নতা পাবে। প্রাপ্তিতে ভরে উঠবে আমাদের সকল শূন্যতা। সেদিন প্রিয় রব্ব আমাদেরকে জান্নাতে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে বলবেন,
❝হে প্রশান্ত আত্মা! ফিরে চলো তোমার প্রভুর পানে, সন্তুষ্টচিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর প্রবেশ কর আমার বান্দাদের সাথে এবং প্রবেশ কর আমার জান্নাতে।❞ || সুরা ফজর: ২৭-৩০||
আমরা যেভাবে স্পষ্ট চাঁদ দেখি এবং দেখতে কোন সমস্যা হয় না, ঠিক তেমনিভাবে আমরা আমাদের প্রিয় রব্বকে দেখতে পারবো। আকাঙ্ক্ষিত সেই জান্নাতে।
Meherunnesha Khatun –
মুমিনরা জান্নাতে প্রথম পা রাখার সাথে সাথেই তাদের দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া ক্ষতবিক্ষত অন্তর থেকে শুরু করে অব্যক্ত অসহনীয় যন্ত্রণা, এবং সকল অনুচ্চার্য দুঃখ-কষ্ট নিমেষেই কর্পূরের মতো উবে যাবে জান্নাতের প্রথম মৃদুমন্দ বাতাসের আলিঙ্গনে। যেখানে নেই কোনো বারণ, নেই কোনো পিছুটান, নেই কোনো হৃদয় রক্তক্ষরণের গল্প, নেই কোনো অসুস্থতা, আর না আছে কোনো খাদ্য বা বিলাসিতার অভাব। সেখানে থাকবে না কোনো অশালীন কথাবার্তা, থাকবে না কোনো ‘হুমাযাহ’ কিংবা ‘লুমাঝাহ’, থাকবে না কোনো হিংসা বা শত্রুতা কিংবা বৈরিতা, থাকবে না কোনো বালিশ ভেজা নিদ্রাহীন রাতের অব্যক্ত বেদনার আবছা উপসংহার। যেখানে থাকবে কেবল আনন্দ আর আনন্দ, সুখে ভরপুর এক অসীম সাম্রাজ্য। যেখানে আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাবে প্রতিটি মুমিন বান্দা আল্লাহর রহমতের চাদরে।
জান্নাতের এই সমস্ত ছোট-বড়ো বর্ণনা গুলোকে সমবেত করে ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া (রহ.) এর রচিত ‘সিফাতুল জান্নাহ’ -গ্রন্থকে বাংলায় অনুবাদ করে পাঠকের সামনে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে উপস্থাপন করেছেন সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ। বইটির নাম ‘ওপারের সুখগুলো’, যা পথিক প্রকাশন থেকে সদ্য প্রকাশিত হয়েছে।
▪ বইটির বিষয়বস্তু :-
আলোচ্য বইটি ২১ টি মনোমুগ্ধকর অধ্যায়ে সজ্জিত। প্রতিটি অধ্যায় আবার অজস্র চিত্তাকর্ষক শিরোনামে বিন্যস্ত। বইটিতে মূলত জান্নাতের আঁতিপাঁতি বর্ণনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বইটির প্রথম থেকে দ্বিতীয় অধ্যায়ে মূলত জান্নাতের নিয়ামাহ থেকে শুরু করে নবিজি (সঃ) এর বর্ণনায় ‘জান্নাত কেমন’ – তা তুলে ধরা হয়েছে। জান্নাতের মাটি, জান্নাতিদের বিবরণ-বৈশিষ্ট্য-রূপ-লাবণ্য, জান্নাতের স্তর নিয়ে আলোচনা, জান্নাতীদের সেবক, স্নিগ্ধ-মনোরম বাতাস, সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তির পরিচয়, জান্নাতু আদনে’র বর্ণনা, জান্নাতুল ফিরদাউস ইত্যাদি আলোচনা করা আছে।
তৃতীয় থেকে নবম অধ্যায়ে জান্নাতের বৃক্ষ, শ্রুতিমধুর আওয়াজ, খেজুর বৃক্ষ, তুবা বৃক্ষ, বিভিন্ন ফলফলাদির বর্ণনা, হাউযে কাউসার, শারাবান তাহুরা, তাসনিমের পানি, বাইদাখ, জান্নাতীদের রং-বেরঙের পোষাক, বিছানা, বিশাল বিশাল প্রাসাদ, হীরার বাড়ি, সাদা প্রাসাদ, স্বর্ণ ও মুক্তার অট্টালিকা, জান্নাতের নহর ও বাসনপত্র, মাছের কলিজা থেকে পাখির ভূনা গোস্ত সহ বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার এবং পানি, মদ ও শরাবের সমূদ্র ইত্যাদি বর্ণিত আছে। আর জান্নাতের সবচেয়ে নয়ন প্রীতিকর সেরা উপহার হল আল্লাহর দর্শন লাভ।
বইটির দশম থেকে একাদশ তথা শেষ অধ্যায়ে জান্নাতের বিভিন্ন স্তরের ব্যাখ্যা ও অবস্থান, জান্নাতের সাওয়ারী, বালাখানা, ওসিলা নামক স্তর, জান্নাতের ফেরেস্তা, জান্নাতের সেবক ও খাদিমের বর্ণনা দেওয়া আছে। আরও উল্লেখ আছে জান্নাতীদের ভাষা, জান্নাতীদের অলংকার-সাজসজ্জা, এবং জান্নাতের বিভিন্ন দরজার নাম, দরজার প্রস্থ, এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের দূরত্ব ইত্যাদি নিয়ে বিশ্লেষণ করা আছে। এছাড়াও রয়েছে জান্নাতের বাজার, জান্নাতীদের পরস্পরের সাক্ষাতের বিবরণ, উড়ন্ত ঘোড়া, শহিদগণের মর্যাদা, হুর রমণীদের গান, হৃদয়কাড়া মৃদু আওয়াজ, ইসরাফিল (আঃ) এর কন্ঠে গান, হুর রমণীর সৌন্দর্য, দুনিয়ার নারীদের শ্রেষ্ঠত্ব, জান্নাতীদের বিয়ে ও সহবাস, রোমান্সের জায়গা, শূণ্য ময়দান, সমুদ্রের তীর, স্বপ্নের রাণী, হুর রমণীর চেহারার উজ্জলতা, তাদের মায়াবী মুখ, কাজল কালো ডাগর ডাগর চোখ, নজরকাড়া মুচকি হাসি, লাব নামক বিশেষ হুর, জান্নাতীদের উপহার এবং আরও অজস্র অজস্র অজানা জান্নাতী নিয়ামাহ ইত্যাদি বর্ণিত আছে বইটিতে।
▪ বইটির বিশেষত্ব :-
◑ সকলের বোঝার উপযোগী করে লেখা হয়েছে বইটি। কোনো পাঠকের বুঝতে কোনো অসুবিধাই হবে না।
◑ যেখানে মূল কিতাবে লেখক কোনো শিরোনাম ব্যবহার করেননি, সেখানে অনুবাদক পাঠকের সুবিধার্থে প্রতিটি অধ্যায়কে বিভিন্ন শিরোনামে বিন্যস্ত করেছেন।
◑ ভীষণ সহজ, সরল, সাবলীল অনুবাদ এবং উষসী শব্দভাণ্ডার বইটির ভাষাশৈলীকে আরও অলঙ্কৃত করেছে।
◑ জান্নাত সম্পর্কিত আলোচনা গুলো কুরআন ও সহীহ হাদিসের রেফারেন্সে সাজানো হয়েছে। কোনো বানোয়াট গল্প নেই এখানে।
◑ জান্নাত সংক্রান্ত কিছু আয়াতের তাফসিরও তুলে ধরে হয়েছে। সাথে মূল গ্রন্থের কিছু কবিতাও বর্ণিত আছে বইটিতে।
◑ জান্নাতের প্রতিটি বিষয় অত্যন্ত অত্যন্ত সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। পাঠক পড়ার সময় উপলব্ধি করবেন জান্নাতের উল্লেখিত মনোরম দৃশ্য গুলো যেন তাঁর অক্ষিকোটরে পর্যায়ক্রমে ভেসে উঠছে ছবির মতো।
▪ বইটি কাদের জন্য এবং কেন পড়বেন :-
◑ যাঁরা দাঁতে দাঁত চেপে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সবর ও শোকরের মাধ্যমে জীবন পার করছেন, তাঁদের জন্য এই বইটি অন্তরের খোরাক জোগাবে। তখন জান্নাতের সুমিষ্ট গন্ধে দুনিয়াবি কোনো কষ্টই আর কষ্ট মনে হবে না।
◑ যে সমস্ত বান্দা বেশি ইবাদত করতে পারেন না, অল্পতেই অলসতা ঘিরে ধরে, তাঁদের জন্য এই বইটি ভীষণ সহায়ক হবে। আরও বেশি ইবাদত করতে ইচ্ছে জাগবে। কারণ মনটা যখন জান্নাতের স্বপ্নে বিভোর থাকে তখন আল্লাহর কোন আনুগত্যই আর কঠিন মনে হয় না।
◑ যাঁরা মুসলিম কিন্তু প্র্যাকটিসিং নয়, তাঁদের জন্য ভীষণ উপকারী হবে বইটি। যতই তাঁরা পড়বেন ততই জান্নাত পাওয়ার লোভ বাড়তেই থাকবে। আল্লাহ চাইলে একসময় এই বই পড়ে তাঁরা জান্নাতের মোহে সকল গোনাহ ত্যাগ করে প্র্যাকটিসিং মুসলিমে পরিণত হবেন।
◑ সর্বোপরি সমস্ত ইমানদার নারী-পুরুষ, মুমিন নারী-পুরুষ, সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন, সকল উম্মতে মুহাম্মদি এবং সকলের জন্যই এই বইটি বারবার পড়া প্রয়োজন। যত বেশি এই বই পড়া হবে মনটা ততই দুনিয়া বিমুখ হয়ে আখিরাতমুখি হবে।
▪ পাঠ্যানুভূতি :-
অনিন্দ্য সুন্দর অট্টালিকা, পাহাড়ের গা বেয়ে ঝিরঝির করে বয়ে যাচ্ছে স্রোতস্বিনী ঝর্ণা, হাত বাড়ালেই ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ফল, সুস্বাদু খাবার, পরম করুণাময় রবের দিদার লাভ, জান্নাতের বাজারে আমাদের নবি (সঃ) সহ সমস্ত নবি,সাহাবি, সালাফদের সাথে খোস মেজাজে গল্পের আসর ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…….. সর্বক্ষণ যেন ছায়াছবির মতো ভেসে উঠছে চোখের দর্পণে। পড়তে পড়তে বারবার জান্নাতের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি। বইটির পাতায় পাতায় লেখক মুমিনদের উদ্দেশ্য করে যেন হাজার হাজার চিঠি পাঠিয়েছেন কৃষ্ণচূড়ার খামে। মনে হচ্ছে হাত বাড়ালেই জান্নাত….! শুধু প্রয়োজন একটু সবর আর শোকর। জান্নাত লাভের আশায় মনে যেন আবার বসন্তের রঙ লাগতে শুরু করলো………! আলহামদুলিল্লাহ।
বইটির বাইন্ডিং ভীষণ মজবুত, পেপার বেশ ভালো এবং বইটি হার্ডকভারের হওয়ায় এটি বইটিকে ভীষণ আকর্ষণীয় করেছে।
▪ পরিশিষ্ট :-
“কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য কি কি নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুক্বায়িত আছে।”
(সূরাঃ সাজদাহ- ১৭)
“যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউস।” (সূরাঃ আল কাহাফ- ১০৭)
একনজরে বই পরিচিতি :-
————————————
বই :- ওপারের সুখগুলো
লেখক :- ইমাম ইবনু আবিদ দুনিয়া (রহ.)
অনুবাদক :- সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
প্রকাশনী :- পথিক প্রকাশন
প্রচ্ছদ মূল্য :- ৩০০ টাকা
পৃষ্ঠা সংখ্যা :- ১৭১
বাইন্ডিং :- হার্ডকভার