Copyright © 2025 Seanpublication.com
নবী ইউসুফের আ. পাঠশালা
Author : শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল
Translator : ইলমহাউস অনুবাদক টিম
Publisher : ইলমহাউস পাবলিকেশন
Category : নবী-রাসুলদের ঘটনা/আকাবির-আসলাফ/নিপীড়ন-হত্যাযজ্ঞ
৳100
Out of stock
নবী ইউসুফের আ. পাঠশালা
Share This Book:
Farzana Ashrafi –
মানুষ কি মনে করে যে, তারা একথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে যে, আমরা বিশ্বাস করি এবং তাদেরকে পরীক্ষা করা হবে না? আমি তাদেরকেও পরীক্ষা করেছি, যারা তাদের পূর্বে ছিল। আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নেবেন মিথ্যুকদেরকে। [ সুরা আনকাবুত ২৯: ২,৩ ]
যুগে যুগে যারাই আল্লাহর ওপর ঈমাণ এনেছে, হক্কের ওপর অটল থেকেছে তাদেরকেই পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। রোগ, শোক, দারিদ্র্যের পাশাপাশি বাতিলের পক্ষ থেকে সীমাহীন নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সত্যের পথের পথিকদের জন্য এমনি এক পরীক্ষা ‘বন্দীত্ব’।
কারাগারে বন্দীত্ব কারো জন্য হয় আশীর্বাদ, কারো জন্য উন্মোচন করে ভ্রষ্টতার দরজা। কেউ কেউ কারাগারে ঈমাণ- আমল সব খুইয়ে আসে। আবার সেখানেই কারো ঈমাণ পূর্ণতা পায়।
বাতিলের কারাগারের বদ্ধ প্রকোষ্ঠ আল্লাহর জন্য যাদের অন্তরকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিল এমনই চারজন ব্যক্তির কারান্তরীন সময়ের অভিজ্ঞতার বর্ননা ‘নবী ইউসুফের (আ.) পাঠশালা’। শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল।’ধূলিমলিন উপহার: রামাদান’ এবং ‘ বিপদ যখন নিয়ামাত’ বইয়ের জন্য তিনি ইতোমধ্যে এদেশের ইসলাম প্রিয় মানুষের কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন, তার ‘University of Yusuf’ লেকচার সিরিজের বাংলা অনুবাদ এই বইটি। অনুবাদ করেছে ‘ইল্ম হাউস অনুবাদক টিম’। সম্পাদনা এবং টিকা সংযোজন করেছেন শাইখ মুনীরুল ইসলাম ইবনু যাকির।
বইটিতে ইউসুফ আ., ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ রহ., ইমাম আবু হানিফা রহ. এবং শাইখ নাসির আল- ফাহদ এর কারা অন্তরীণ সময়ের অভিজ্ঞতা বিবৃত হয়েছে। জালিমের সামনে সত্য উচ্চারণের কারণে তাঁরা কারাগারে বন্দী হয়েছিলেন কিন্তু তাদের অন্তরকে আল্লাহ ঈমাণের নূর দিয়ে আলোকিত করে দিয়েছিলেন। ইউসুফ আ. যেমন অন্যায় থেকে বাঁচতে নিজের জন্য কারাগারকে বেছে নিয়েছিলেন আর সেখানেই তাঁর নবুয়তির পূর্ণতা পেয়েছিল তেমনি বাকি তিনজনও তাঁদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় পার করেছেন কারাগারে। কারাগারের ভয়ানক যুলুম, নির্যাতন তাঁদের সত্য থেকে এক চুল পরিমাণও সরাতে তো পারেইনি বরং সে সময়ে তাঁরা অসংখ্যা কালজয়ী বই লিখেছেন, অসংখ্যা মানুষকে হক্কের পথে এনেছেন। সর্বোপরি কারাবন্দিত্ব তাঁদের ঈমাণকে আরো মজবুত করেছে।
বইটা পড়তে গিয়ে প্রথমেই যেটা মনে হলো তা হচ্ছে, যালিম এবং হক্কপন্থীদের কর্মপন্থা সব যুগেই একই রকম। শাইখ জিবরিল যে চারজনের কথা লিখেছেন তাঁদের জীবনকালের সময়ের মধ্যে বিস্তর ব্যাবধান ছিল কিন্তু তাঁরা একই পন্থায়, একই কারণে যুলুমের শিকার হয়েছেন। যালিম শাসকেরা তাদের সত্য প্রচার থেকে নিবৃত্ত করতে না পেরে মিথ্যা প্রচার,প্রোপাগান্ডা, নির্যাতনের আশ্রয় নিয়ে মানুষের সামনে তাঁদের অসম্মানিত করার সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়েছে। কিন্তু একইভাবে সত্যের ওপর অবিচল থেকে, আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে তাঁরা চিরস্মরণীয় হয়েছেন। মুক্ত জীবন, দুনিয়ার চাকচিক্যময়তা থেকে মৃত্যুকে শ্রেয় মনে করেছেন।
কথার ফাঁকে ফাঁকে প্রসঙ্গক্রমে শাইখ জিবরিলের নিজের কারাজীবনের বিভিন্ন ঘটনাও বর্ননা করেছেন। সেটা ছিল ভীষণ একটা দু:সময়, সবাই শাইখের পরিবারকে ত্যাগ করেছিল। স্বজাতির লোকেরাই হয়েছিল বিশ্বাসঘাতক। তারপরও তিনি, তার সহবন্দী বাবা বা তার পরিবার কেউ আল্লাহর রহমত নিরাশ হননি। কারাবন্দীত্ব তাদের জীবনের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। যুলুম,নির্যাতন,মিথ্যা অপবাদ, বন্দীত্ব মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া নয়, বরং দু:খ-কষ্টের আগুনে পুড়েই এসব মহান মানুষদের ঈমাণ এতটা দৃঢ় হয় যার সামনে বাতিলকে এক সময় মাথা নত করতেই হয়। তাঁর এ অনুভূতি ভুক্তভোগীদের মনোবলকেই উন্নত করে। বন্দীদের পরিবারের অন্য মুসলিম ভাইদের দ্বায়িত্বও শাইখ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কারণ এ সময় সেই পরিবারটির জীবন নরকতুল্য অবস্থার মধ্যে থাকে। তাদের কে সবাই এড়িয়ে চলে।
নবী ইউসুফের (আ.) পাঠশালার ছাত্রদের মহিমান্বিত জীবনকে অনুভব করতে আপনিও হাতে নিতে পারেন ‘নবি ইউসুফের (আ.) পাঠশালা’।