Copyright © 2024 Seanpublication.com
মুমিনের পাথেয় [‘কিতাবুয যুহদ’ গ্রন্থের অনুবাদ] (দুই ভলিউম)
Author : ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক
Translator : আবদুস সাত্তার আইনী
Publisher : মাকতাবাতুল বায়ান
Category : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
৳730 ৳475
You Save TK. 255 (35%)
মুমিনের পাথেয় [‘কিতাবুয যুহদ’ গ্রন্থের অনুবাদ] (দুই ভলিউম)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (3)
3 reviews for মুমিনের পাথেয় [‘কিতাবুয যুহদ’ গ্রন্থের অনুবাদ] (দুই ভলিউম)
Add a review Cancel reply
Md Amdadullah Tafhim –
○ একনজরে….
বইঃ ❛মুমিনের পাথেয়❜ (কিতাবুয যুহদ) (দুই খণ্ড)
লেখকঃ আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহ.)
অনুবাদঃ আব্দুস সাত্তার আইনি
পৃষ্ঠাঃ ৫০৪
প্রচ্ছদ মূল্যঃ ৭৩০৳
প্রকাশনীঃ মাকতাবাতুল বায়ান
কভারঃ হার্ড কভার
♤ নদী বয়ে চলার কোন নিয়ম থাকলেও থাকতে পারে কিন্তু আপাত চোখে দেখলে মনে হয় সে আপনমনে নিজের খেয়াল মত বয়েই চলছে।এই বয়ে চলার ব্যাপারটা সম্পুর্ন তার নিজের,এর জন্য কারো কাছে তার জবাবদিহিতার ভয় নেই, নেই কারো কাছে থেকে অনুমোদন নেওয়ার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন। হয়ত নদী জানেও না কেন, কোন্ পথ ধরে আর কোন্ উদ্দ্যেশ্যে তার যাত্রা।
একজন মুমিনের জীবনপথ মোটেও এমন উদ্দ্যেশ্যহীন নয়,প্রতিপদে তার জবাবদিহিতার ভয় আছে। এই উৎকন্ঠা-ই প্রতিটা মুহুর্ত তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কোন্ কোন্ আকুতি কখন কিভাবে কোন্ পথ ধরে তাকে এগিয়ে নিয়ে যায় সে সম্পর্কে তাকে সম্পুর্ন সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়। অবাধে মুক্ত-স্বাধীন জীবনযাপন তার জন্য শুভনীয় নয়। নফস আর শয়তানের চক্রান্তের সাথে সব সময় লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।আর এ লড়াইয়ে তার বড় অস্ত্র স্বচ্ছ ঈমানের বল।
মানুষের ঈমান কিছু উপায়ে বাড়ে আবার এর উল্টো উপায়ে কমতেও শুরু করে। বান্দা যখন দুনিয়ার ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে তার প্রকৃত উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে উদাসীন হয়ে যায়, আল্লাহর যিকির থেকে গাফেল হয়ে যায়,সুখ আর ভোগের উন্মত্ত নেশা যখন অন্তরে চেপে বসে তখন ঈমানী শক্তিও কমতে শুরু করে ধিরে ধিরে।এই ঈমানী শক্তি পুনর্জাগরণের অন্যতম উপায় “উত্তম নাসীহাহ”। আত্নশুদ্ধিমুলক ঈমান জাগানিয়া উত্তম উপদেশ সম্বলিত ‘কিতাবুয যুহদ’ গ্রন্থের অনুবাদ মাকতাবাতুল বায়ান কর্তৃক প্রকাশিত “মুমিনের পাথেয়” বইটি।
○ বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণঃ
“মুমিনের পাথেয়” বইটি এগারোটি অধ্যায়ের সুদীর্ঘ সমষ্টি। ব্যক্তিজীবিনের প্রায়োগিক প্রায় সকল দিক সম্পর্কেই উত্তম আলোচনা করা হয়েছে। ক্ষমার আশ্বাস ও পাপের ভয়াবহতা, বিনয়ের ভূষণ ও নম্রতা,আল্লাহর প্রতি অঘাত বিশ্বাস ও ভীতি, ইখলাসের মাহাত্ত্ব ও এক্বিন, সংযত জবান ও অসংলগ্নতার পরিনতি ,রিয়ার নিন্দা ও ভোগবিলাসের অনুৎসাহ, অল্পে তুষ্টতা ও সদাচরণের মিষ্টতা, মৃত্যু চিন্তা ও পারলৌকিক ভাবনা ইত্যাদি সহ ইসলামের মূল ও মৌলিক বিষয়াবলী নিয়ে জীবনঘনিষ্ঠ প্রায় সকল উত্তম উপদেশের এক অপুর্ব সম্মিলন এই বইটি।
পাঠক পড়ামাত্রই আত্নশুদ্ধি ও আত্নোন্নয়নের মহান ব্রতে নিজেকে উন্নীত করার মহান এক শিক্ষা পাবেন। তারই ধারাবাহিতায় মাত্র একটি উপদেশ বই থেকে উদ্ধৃত করছি। হাসান বসরি রহিমাহুল্লাহ বলেছেন,” হে আদম সন্তান,তুমি তোমার ভাইয়ের চোখে সামান্য ময়লা থাকলেও তা দেখতে পাও, কিন্তু নিজের দুই চোখে গাছের গুঁড়ি পড়ে থাকলেও দেখতে পাও না।”
○ বইটির ভালোলাগা অংশঃ
ফিতনার স্রোতে নিমজ্জিত মুসলিমদের জন্য এধরনের কিতাবের প্রয়োজন যে কত বেশি, তা ফিতনায় কবলিত প্রতিটি মানুষই উপলব্ধি করার কথা। সম্পুর্ন বইটির আলাদা ভালোলাগা অংশ বেছে নেওয়া খুবই কঠিন। তবুও কিছু জিনিস উল্লেখ না করলেই নয়। প্রত্যেকটি হাদিসের তথ্যসুত্র সুস্পষ্টভাবে বইটিতে উল্লেখ আছে। পাশাপাশি হাদিস সমূহের তাহকিক সম্বলিত ছোট্ট ছোট্ট ব্যাখ্যা পাঠকের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে।
○ বইটি কাদের জন্যঃ
ঈমানের সামান্য ছিটেফোঁটাও যাদের হৃদয়ে লালিত হয় তাদের প্রত্যেকের জন্য বইটি হাইলি রিকোমেন্ডেড। সহজ ভাষায় বললে, ঈমান আছে বলে দাবী করে এমন প্রত্যেক নর-নারীর জন্য বইটি পড়া প্রচণ্ডভাবে জরুরি।
○ লেখক সম্পর্কেঃ
“মুমিনের পাথেয়” বইটির লেখক যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকিহ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক রহিমাহুল্লাহ।বইয়ের শুরুতে প্রদত্ত সংক্ষিপ্ত জীবনী থেকে পাঠক লেখকের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করবেন। তার সময়কালে আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাকের হাদিসের জ্ঞান এবং বর্ণনা সম্পর্কে কেউ যদি সন্দেহ প্রকাশ করতো তাহলে তার ইলমি যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতো। আব্দুল্লাহ ইবনে ইদরিস বলেছেন,”আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক যে হাদিস জানেন না, ওটা জেনে আমাদের কোন কাজ নেই।” নুমান ইবনু মুহাম্মদ বলেছেন, “আমি আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,আমার বাবা আমাকে বললেন,আমি যদি তোমার বই পুস্তক দেখি সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেব।আমি বললাম, তাতে আমার কোন দুঃখ হবে না,সেগুলো আমার বুকের মধ্যেই আছে।”
পার্থিব ও ধর্মীয় বিদ্যার নানা শাখায় পারদর্শিতার পাশাপাশি ইবনুল মুবারাক একজন দক্ষ কবি। সামাজিক নানা বিষয়ে (ধর্মতত্ত্ব, রাজনীতি, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি) তিনি উপদেশের ভঙ্গিতে কবিতা লিখতেন । এর কয়েকটির ভাবানুবাদ করলে দাঁড়ায়-
“দ্বীন ছেড়ে সুখী হবে ভেবেছিল যারা
দুনিয়া নিয়ে সুখে নেই তারা
দ্বীন নিয়ে খুশি থাকো,দুনিয়া ছেড়ে দাও রাজাদের হাতে
যেভাবে তারা দুনিয়া আঁকড়ে দ্বীন ছেড়েছে তোমাদের পাতে”
○ পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ
পাঠ্যানুভুতি কাগজের পাতায় কলমের আচড় কেটে অল্প কথায় বুঝানো অসম্ভব। তারপরও কিছু কথা না বললেই নয়। একটি বই সুখপাঠ্য হয়ে পাঠকের হৃদয়কে আলোড়িত করতে কয়েকটি বিষয় ধর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।
● লেখকের পরিচয়
● বিশ্বস্ত প্রকাশনী
● আলোচ্য বিষয়বস্তু
● দৃষ্টিনন্দন পৃষ্ঠাসজ্জা ও বাইন্ডিং
● সামঞ্জস্যপূর্ণ মলাট ।
উক্ত বিষয়গুলো বইটিকে সর্বসাকুল্যে পাঠকের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলে।বইটির প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং এবং মলাট খুবই ভাল লেগেছে। সবকিছু মিলিয়ে স্বল্পকথায়, বইটি দ্বীনের পথে অবিচল থাকার জন্য মুমিন হিসেবে যথেষ্ট পাথেয়’র সঞ্চার করেছে।
○ অনুবাদ সম্পর্কেঃ
বইটির সম্পুর্ন অনুবাদ কর্মটি মেদ চর্বিহীন এক অতুলনীয় সংস্কার। বানানরীতি ও প্রতিটি বর্ণায়নের সাথে ব্যাকরণসিদ্ধতা, প্রয়োগযোগ্যতা ও প্রয়োগ বাহুল্য এসব গুনের অধিকারী ছিলেন গ্রন্থটির অনুবাদক। যথেষ্ট দক্ষতা ও সতর্ক দৃষ্টির সাথে অনুবাদ টি আঞ্জাম দিয়েছেন। তাই গ্রন্থটি সুখপাঠ্য হবে বলেই আশা করছি।
বইটি থেকে পছন্দের একটি উক্তিঃ
“জমিনের লবণকে নষ্ট করো না; কোন বস্তু পচে গেলে লবণ দিয়ে তার পচন রোধ করা যায়। কিন্তু লবণ নষ্ট হয়ে গেলে তার কোন ওষুধ নেই।জেনে রাখো, তোমাদের মধ্যে দু’টি মূর্খতাসুলভ খাসলত রয়েছে, “কোন কারণ ছাড়াই হাসা এবং রাত্রি না জাগরণ সত্ত্বেও সকালে ঘুমিয়ে থাকা।”
পরিশেষে,চেতনার দরজা উন্মুক্ত করে ঘুম ভেংগে জাগ্রত হয়ে নিজেদের অন্তিম যাত্রার পাথেয় সঞ্চয়ে আত্নশুদ্ধির মহান সাধনায় আরো তৎপর হওয়ার প্রত্যয়ে “মুমিনের পাথেয়” বইটি পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে শেষ করছি।
mahmud03 –
পার্থিব সফলতা আর মর্যাদার জন্য নিরন্তর কত পথেই না আমরা ছুটে বেড়াই। কিন্তু আমরা কি জানি নবী (ﷺ) এবং সাহাবীদের দৃষ্টিকোণের স্বচ্ছ মুকুরে কিরূপ বিবৃত হয়েছে দুনিয়ার স্বরূপ-প্রকৃতি? দুনিয়ার ব্যাপারে কেমন ছিল তাঁদের চিন্তাধারা-দৃষ্টিভঙ্গি? দুনিয়াবি বিষয়াদিতে মোহাক্রান্ত উম্মাহকে সঠিক পথের দিশা দেখাতে ইমাম ইবনুল মুবারক (রহ.) রচিত বিখ্যাত সেই “কিতাবুয যুহদ” গ্রন্থটি ‘মাকতাবাতুল বায়ান’ কর্তৃক ২খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে “মুমিনের পাথেয়” নামে।
.
পাঠক হিসেবে যেকোনো বই কেনার আগে কী দেখেন? নিশ্চয়ই কনটেন্ট! কিন্তু কখনো কখনো বইয়ের কনটেন্টের চেয়ে বইয়ের লেখক কে তার উপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়। এই বইটারও ঠিক তেমনই, কারণ এর লেখকের হচ্ছে জগৎবিখ্যাত ইমাম স্বয়ং আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহ.)। তিনি একাধারে ইলমসন্ধানী, বিদআত বিদ্বেষী সংস্কারক, বীর মুজাহিদ, প্রখ্যাত কবি, দুনিয়াবিরাগী আবিদ এমনকি একজন সফল ব্যবসায়ীও ছিলেন। এবং তিনি উম্মাহ’র একজন বরিত ইমামও।
.
‖বিষয়বস্তু‖
বইটিতে উঠে এসেছে সর্বমোট ১১টি অধ্যায়ের আলোচনা। প্রতিটি অধ্যায় আবার কিছু শিরোনামে আবদ্ধ। এমনকি শিরোনামের ভেতর আবার ছোট ছোট উপশিরোনাম দিয়ে সেই ক্যাটাগরির হাদিস ও কথামালাকে একত্রে সংকলন করা হয়েছে; যেন প্রাসঙ্গিকতা বুঝতে পাঠকের অসুবিধে না হয়। হাদিস, কুরআনের আয়াত, সাহাবী (রা.) এবং তাবেয়ী (রহ.)দের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়ের তীব্রতাকে প্রকট করা হয়েছে। জীবনঘনিষ্ঠ বেশ কিছু বিষয়; যেমন- পূণ্যবান বন্ধু, সংযত জবান, সালাতের জন্য অপেক্ষার ফজিলত, দুনিয়ার তুচ্ছতা, সাহাবীদের সরল-স্বচ্ছ জীবনের প্রতিচ্ছবি, তাঁদের চারিত্রিক গুণাবলী, উপদেশ গ্রহণ, তাওবা, দান সদকা ও কৃপণতা পরিহার এবং ইলম অর্জনের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। সাহাবি, তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈগণ তাদের পুরোটা দিন কীভাবে কাটাতেন, কেমন ছিল তাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পারিবারিক জীবন, নিজেদেরকে কীভাবে সর্বক্ষণ আল্লাহমুখী করে রাখতেন তাও চিত্রাঙ্কিত হয়েছে। জানা যাবে- দুনিয়ায় কেমন ছিলেন আল্লাহর রাসূল (ﷺ), কেমন ছিল তাঁর প্রিয় সাহাবীদের জীবনাচার এবং পরবর্তী প্রজন্ম দুনিয়াবিমুখতার কেমন শিক্ষা পেয়েছিল তাঁদের নিকট থেকে। শেখাবে কীভাবে দুনিয়াতে অবস্থান করেও দুনিয়াবিরাগী হওয়া যায়।
.
.
একেকটি উক্তি বিবেককে মন্থর করে রাখবে দীর্ঘ সময়ের জন্য। পাদটীকায় সবকটি হাদিস-উক্তি-উদ্ধৃতির রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে সনদের মান ও অন্যান্য গ্রন্থের দলিলসহ। যুহদের বই হওয়ায় বইয়ের প্রচ্ছদেও যুহদের একটা ভাব রাখা হয়েছে। আর অনুবাদ একেবারেই সাবলীল, সুখপাঠ্য। বাসায় ও মসজিদে প্রতিদিন তালীম করার মতো অসাধারণ একটি কিতাব। পিঁপড়া যেমন শীতকালের দুর্ভোগ থেকে বাঁচার জন্য গ্রীষ্মকালে খাবার ও পাথেয় সংগ্রহ করে রাখে, মুমিন বান্দাদেরও ঠিক তেমনি পরকালের কঠিন দুর্ভোগ থেকে বাঁচার জন্য দুনিয়াতেই পাথেয় সংগ্রহ করে রাখতে হবে। আল্লাহর পথের পথিক হিসেবে সর্বোচ্চ মর্যাদায় আরোহণের জন্য স্বতঃস্ফূর্ত পদক্ষেপ গ্রহণে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বইটি।
Farzana Ashrafi –
প্রতিটি মানুষই দুনিয়াতে মুসাফির। আখিরাত তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য। দুনিয়ার এই সফরে মুমিনের লক্ষ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে পরকালে সফলতা লাভ।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে মুমিনের একমাত্র পাথেয় আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সা.) নির্দেশিত বিধি-বিধান। কোরআন-হাদীসের আলোকে কিভাবে একজন মুমিন দুনিয়ার জীবনে প্রাপ্ত সময়টুকুকে সর্বোত্তম রুপে ব্যবহার করবে তার রুপরেখা দিতে আমাদের পূর্ববর্তী আলিমগণন অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। এর মধ্যে বিষয় ভিত্তিক হাদীস গ্রন্থ গুলো অগ্রগণ্য। এরকমই একটি হাদীস সংকলন ইমাম আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহ.) রচিত ‘কিতাবুয যুহদ ওয়া ইয়ালিহি আর-রাকায়িক’। প্রায় ১৩০০ বছর আগে, নববী যুগের কাছাকাছি সময়ে রচিত অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এই সংকলনটির বাংলা অনুবাদ ‘মুমিনের পাথেয়’ নামে ২ খন্ডে প্রকাশ করেছে মাকতাবাতুল বায়ান।
বইয়ের লেখক এবং বিষয়-বস্তুর যে চমৎকার মেল বন্ধন ঘটেছে তাকেই সম্ভবত ‘সোনায় সোহাগা’ বলা হয়।
হাদীস গ্রন্থটির সংকলক আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহি.) ছিলেন তাঁর সময়কার শ্রেষ্ঠ আলীম, দুনিয়া বিমুখ আবিদ, দানশীল, বিদআত বিদ্বেষী সংস্কারক, বীর মুজাহিদ আবার একই সাথে একজন সফল ব্যবসায়ী এবং কবি। এমনি বহুমুখী প্রতিভা ছিল তাঁর।
আবার ছিলেন হাদীসের শুদ্ধা-শুদ্ধি নির্ণয়ের তুখোর বিশেষজ্ঞ। তাঁর মাধ্যমে বর্ণিত হাদীস গুলো ‘জারহ তা’দীল’ বা শুদ্ধতার মানে নিশ্চিতভাবে উত্তীর্ণ।
ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল (রাহি.) তাঁর সম্পর্কে বলেছেন, “হাদীস বর্ননার ক্ষেত্রে তাঁর খুব কমই ভ্রান্তি ঘটত; এ ব্যাপারে তাঁর সমকক্ষ কেউ ছিল না।’
আর বইয়ের কন্টেন্ট যে অসাধারণ তা বলায় বাহুল্য। সূচীপত্র অনুসারে ১১ টি অধ্যায়ে বিস্তৃত গ্রন্থটিতে সালাত, সাওম সহ বিভিন্ন ফরজ এবং নফল ইবাদত, আল্লাহর যিকির, রিযিক অন্বেষণ থেকে উত্তম আখলাক গঠন, দুনিয়া বিমুখতা ইত্যাদি সম্পর্কিত হাদীসগুলো সংকলিত হয়েছে। অর্থাৎ কিভাবে আমরা দুনিয়ার কাজ গুলোকে সুষমামণ্ডিত করার মাধ্যমে আল্লাহকে রাযি-খুশী করব তারই পথ বাতলে দেয়ার জন্যই এই বই।
সাথে প্লাস পয়েন্ট হিসেবে আছে দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদ আর প্রাঞ্জল অনুবাদ।
‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’, ‘বান্দার ডাকে আল্লাহর সাড়া’, ‘সীরাতুন নবি’ প্রভৃতি বইগুলোর মত এটাও মাকতাবাতুল বায়ানের অসাধারণ একটি প্রকাশনা।