নারী। যাদের জীবনে অনেক দায়িত্ব। শৈশবকাল থেকেই তার সেই দায়িত্ব শুরু হয়ে যায়। কৈশোরের চৌকাঠে পা দিলেই বাবার বাড়ির সংসার গুছানোর দায়িত্ব চেপে বসে কাঁধে। তারপর বয়স হলে বিয়ে, বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ি বা নিজের সংসার। স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকদের নিয়ে গড়ে ওঠে আরেকটি নতুন জীবন। এরই মাঝে কোল জুড়ে আসে এক চিলতে মায়া। সন্তানকে মানুষ করার ঝোঁক তখন চেপে বসে মাথায়। অনেক দায়িত্ব! আর সেই নারী যদি হয় আল্লাহর মনোনীত দ্বীনের প্রকৃত অনুসারী, তাহলে তো তার দায়িত্ব বেড়ে যায় কয়েকগুণ। সাথে যুক্ত হয় জবাব্দিহিতার ভয়। আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা, স্বামীকে খুশি রাখা, নিজেকে পর পুরুষের দৃষ্টি থেকে হেফাযত করা, সন্তানদের দ্বীনি পরিবেশ দেয়া, চারপাশের মানুষগুলোকে দ্বীনের পথে আহ্বান করা, একবিংশ শতাব্দীর বড় বড় ফিতনাগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাওয়া…আরও কত কি!
আল্লাহ সুব. তাআলা পবিত্রতা পছন্দ করেন। সেই পবিত্রতা দেহের, সেই পবিত্রতা আত্মার। একজন মুসলিমাহ নিজের দেহ, পোশাক, সৌন্দর্য, চরিত্র, আখলাক সবকিছুই পবিত্র রাখবে, কলুষিত হতে দিবে না। তারাই তো ‘মুহস্বানাত’, তাবৎ দুনিয়ার সবচেয়ে দামী সম্পদ।
ফাতিমা মৌ ফ্লাভিকা –
আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালা নারীদেরকে দিয়েছে সবচেয়ে সেরা সম্মান।নারীকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা কুরআনে সূরা নিসা,সূরা নূর,সূরা আলে ইমরানে অসংখ্য অধিকার দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা বলে দিয়েছেন!কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।কিন্তু সেসব সম্পর্কে অনেক নারীরাই অজ্ঞ।একজন নারী দুনিয়া আর আখিরাতে সুখী আর সফল হতে হলে কি প্রয়োজন,ইসলাম কি বলে দিয়েছে,কিভাবে চললে জীবন সহজ-সরল হবে,কোন পথ অবলম্বন করলে পৃথিবীর সেরা জান্নাতী নারীদের মতো হওয়া যায় এসব জানতে হলে অবশ্যই হতে হবে মুহস্বানাত!
একজন নারী হিসেবে নারীদের নিয়ে লিখা বইগুলো পড়তে সবসময়ই অসাধারণ লাগে। আলহামদুলিল্লাহ। এই বইটিও অসাধারণ ছিল।নতুন করে অনেক কিছু শিখেছি।দুনিয়ার চোখ ধাঁধানো বেড়াজাল ছিন্ন করে অনন্ত আখিরাতের পানে ছুটে যেতে হলে নারী হিসেবে অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।সেগুলো শিখার আর জানার আসলেই কোনো বিকল্প নেই।প্রতিনিয়তই বই পড়ে অনেক কিছু শিখতেছি।চমৎকার এই বইটি পড়ে নিজের জীবনে অনেক উপলব্ধি এসেছে আলহামদুলিল্লাহ।
নারী জীবনের আসল উদ্দেশ্য কী, রব্ব কেন সৃষ্টি করেছেন, কীভাবে চলবো রব্বের পথে সব মিলিয়ে নসীহাস্বরুপ এই বইটি খুব ভালো লেগেছে।ইনবাত এর পেইজে এই বইটি সম্পর্কে বিভিন্ন লেখা দেখতাম,তখন থেকেই বইটি পড়ার খুব ইচ্ছে ছিল। আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে পড়েছি।নারীদের জন্য এমন একটা বই অনেকদিন ধরেই খুজতেছিলাম।আল্লাহর মনোনীত দ্বীনের প্রকৃত অনুসারী নারীর জন্য রয়েছে অগণিত দায়িত্ব ও কর্তব্য।এই দায়িত্ব সম্পর্কে জ্ঞান রপ্ত করতে হলে অবশ্যই নারীর পর্দা রক্ষা আর ইসলামি শিক্ষা সম্পর্কে আগে জানতে হবে, জেনারেল শিক্ষিত এমন নারীদের জন্য এই বইটি একটি গাইডলাইন।হায়েয-নিফাস সংক্রান্ত মাসয়ালা-মাসায়েল, হায়েয-নিফাসকেন্দ্রিক স্বাস্থ্যগত জ্ঞান, পর্দার বিধানাবলী, নিকাব পরিধানের বিধান, মুখ খোলা রাখার বিধান, নারীদের জন্য চাকরি বা ব্যবসার বিধান, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাসয়ালা-মাসায়েল, ফেমিনিজম, পুরুষদের মনস্তত্ত্ব, বিয়ের পূর্বপ্রস্তুতি, বিয়ে পরবর্তী বিষয়সমূহ, যৌন মিলন, জন্মনিয়ন্ত্রণ, সাজসজ্জা, গর্ভকালীন সচেতনতা, সন্তান প্রতিপালন ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আর বইয়ের প্রচ্ছদটাও মা শা আল্লাহ! দ্বীন সচেতন যেকোনো বোনদের জন্য কার্যকরা একটি বই।
এই বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাযাকাল্লাহু খইরান ফিদ্দুনিয়াহ্ ওয়াল আখিরাহ্।
বই সম্পর্কেঃ
বই- মুহস্বনাত (পবিত্র নারীদের পাঠশালায়)
সংকলক-শাইখ আব্দুল্লাহ আল মামুন
আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর
বারিয়াহ বিনতে আতিয়ার
সায়মা সাজ্জাদ মৌসি
খন্দকার মারিয়াম হুমায়ুন
প্রকাশনী- Inbaat Publication