fbpx
লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি : ইসলামের হারানো ইতিহাস (পেপারব্যাক)
লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি : ইসলামের হারানো ইতিহাস (পেপারব্যাক)

লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি : ইসলামের হারানো ইতিহাস (পেপারব্যাক)

Author : ফিরাস আল খতিব
Translator : আলী আহমাদ মাবরুর
Publisher : প্রচ্ছদ প্রকাশন
Category : ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্য

195

You Save TK. 65 (25%)

লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি : ইসলামের হারানো ইতিহাস (পেপারব্যাক)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Author

Author

আলী আহমাদ মাবরুর

ফিরাস আল খতিব

Reviews (4)

4 reviews for লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি : ইসলামের হারানো ইতিহাস (পেপারব্যাক)

  1. Arafat Shaheen

    বই: লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি

    ইতিহাসবিমুখ জাতি হিসেবে আমাদের একটা বদনাম আছে। হয়ত এটা একেবারে অমূলক নয়। কারণ, একটা সময় পৃথিবীর বুকে দাপিয়ে বেড়ানো মুসলিম জাতি নিজেদের অতীত ভুলে আজ হতাশার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে; নিজেদের অস্তিত্বই যেন ভুলে যেতে বসেছে।

    অথচ এটা পানির মতো পরিষ্কার যে, আমাদের মুসলিম মনীষীগণ বহু শ্রম এবং সময় ব্যয় করে ইসলামের সুবৃহৎ ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন। ইবনে ইসহাক, ইবনে হিশাম, তাবারি, ইবনে সাদ, ইবনে খালদুন- মুসলিম ইতিহাসবিদের এই তালিকা অনেকটাই লম্বা হয়ে যাবে। ইসলামের গৌরবোজ্জ্বল সময় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরাও ধীরে ধীরে অতীতকে ভুলে গিয়েছি এবং নিজেদের ইতিহাস থেকে অনেকটা দূরে সরে এসেছি।


    কোনো জাতিকে মানসিকভাবে সবল হতে হলে নিজেদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকা প্রয়োজন। ইসলামের ইতিহাস নিয়ে মুসলিম ইতিহাসবিদগণ যেমন বৃহৎ কলেবরের গ্রন্থ রচনা করেছেন, তেমনি আধুনিক সময়ে এসে অনেক প্রাচ্যবিদও ইসলামের ইতিহাস রচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তবে এসব পশ্চিমা ইতিহাসবিদেরা বেশিরভাগ সময়ই নিজেদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পরেননি।

    ফিরাস আল খতিব লিখিত ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ বইটি পড়ে শেষ করলাম। বইটি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য লিখিত হলেও আমার কাছে মনে হয়েছে, সকল শ্রেণির ইতিহাস অনুসন্ধিৎসু পাঠকই বইটি থেকে উপকৃত হতে পারেন। সংক্ষেপে মুসলিম জাতির গোটা ইতিহাস অতি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন লেখক।


    লেখক সম্পর্কে:
    ফিরাস আল খতিব যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। শিক্ষকতা করেছেন স্ট্যাটের ব্রিজবিউ ইউনিভার্সাল স্কুলে। বর্তমানে শিকাগোর দারুল কাসিমে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
    ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ ফিরাস আল খতিবকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে। প্রকাশের পর থেকেই বইটি বেস্টসেলারের মর্যাদা পেয়েছে। আর সেটা হবেই বা না কেন! ইতিহাস বিষয়ে এমন অসাধারণ একটা কাজ করলে সেটা বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পাবে এটাই তো স্বাভাবিক।


    বইয়ের বিষয়বস্তু কী?
    লেখকের ভূমিকার অংশটুকু বাদ দিলে বারোটি অধ্যায়ের দেখা পাবো আমরা। এসব অধ্যায়ে ইসলামপূর্ব আরব থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত  আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের আলোচনা খুবই সংক্ষিপ্ত। তাই ব্যাখা বিশ্লেষণ খুঁজে কোনো লাভ নেই। অধ্যায়গুলো নিয়ে সামান্য আলোকপাত করছি:

    ১. ইসলামপূর্ব আরব:
    আরবের প্রকৃতি, ভৌগোলিক অবস্থান, আরবের নানা জাতি-গোষ্ঠী, আরবের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা, ধর্মীয় পরিস্থিতি, আরবের প্রতিবেশী রাজ্য ইত্যাদি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে এই অধ্যায়ে।

    ২. রাসূল (সা.)-এর জীবন:
    প্রিয়নবীর (সা.) জন্ম, প্রাথমিক জীবন, ওহী নাজিল, নবুওয়তী জীবন, কুরায়েশদের অত্যাচার, হিজরত ও মদীনার জীবন, যুদ্ধ-সংগ্রাম থেকে শুরু করে তাঁর ওফাত পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত জীবনী স্থান পেয়েছে এই অধ্যায়ে।

    ৩. খোলাফায়ে রাশেদীন:
    রাসূল (সা.)-এর ইন্তেকালের পরবর্তী সময়ে মদীনায় ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম চার খলিফা অর্থাৎ হযরত আবু বকর (রা.), হযরত ওমর (রা.), হযরত উসমান (রা.) এবং হযরত আলী (রা.)-এর শাসনামলের নানান ঘটনাপ্রবাহ এই অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।

    ৪.মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা:
    হযরত আলী (রা.)-এর শাহাদাতের পর হযরত মুয়াবিয়া (রা.) এর হাত ধরে উমাইয়া শাসনের শুরু হয়। এই অধ্যায়ে মুয়াবিয়া (রা.)-এর শাসন, ইয়াজিদের ক্ষমতা গ্রহণ ও হযরত হুসাইন (রা.)-এর শাহাদাতের ঘটনা, উমাইয়াদের শাসনামল, আব্বাসীয় আন্দোলন ও তাদের ক্ষমতা গ্রহণ সম্পর্কে আলোচনা স্থান পেয়েছে এই অধ্যায়ে।

    ৫. বুদ্ধিবৃত্তিক সোনালি যুগ:
    উমাইয়া আমল ছিল বিজয়ের যুগ। সে সময় ইসলাম পৃথিবীর এক বৃহৎ অংশে পৌঁছে গিয়েছিল। আর আব্বাসীয় যুগ ছিল জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পে চরম উৎকর্ষতার যুগ। বিজ্ঞানের নানান শাখায় মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান আলোচিত হয়েছে এই অধ্যায়ে।

    ৬. ইসলামী জ্ঞান চর্চা:
    ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্মই নয়, বরং ইসলাম হলো পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যাবস্থা। তাই প্রাত্যহিক জীবনে ইসলামের চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য ইসলামি জ্ঞানে পারদর্শী হওয়ার প্রয়োজন। প্রাথমিক যুগ ও পরবর্তী সময়ে ফিকহ, ইসলামি আকিদা এবং আধ্যাত্মিকতা নিয়ে মুসলিম পণ্ডিতেরা যে কাজ করেছেন তা এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু। এখানে ইসলামি বিভিন্ন দল-উপদল নিয়েও কিছু আলোচনা হয়েছে।

    ৭. উত্থান-পতন:
    স্বাভাবিক নিয়মেই উত্থানের পর একসময় পতন আসে। কীভাবে বৃহৎ ইসলামী সাম্রাজ্য পতনের সম্মুখীন হয়েছিল তা আলোচিত হয়েছে এই অধ্যায়ে। ইসমাইলিয়া মতবাদ, ফাতেমী সাম্রাজ্য, ক্রুসেড, মোঙ্গল আক্রমণ কীভাবে ধ্বংস করেছিল জ্ঞান-বিজ্ঞানে পূর্ণ একটি সমাজকে তার চিত্র অঙ্কিত হয়েছে এখানে। ক্রুসেড সম্পর্কে বেশ ভালো আলোচনা হয়েছে।

    ৮. আন্দালুস:
    আন্দালুস বা বর্তমান স্পেনে মুসলিমদের ইতিহাস সবচেয়ে বেশি বিয়োগাত্মক হিসেবে বিবেচিত হয়। স্পেনে তিলে তিলে গড়ে ওঠা মুসলিম শাসনের অবসান এবং সেখানে থেকে তাদের চিরবিদায় সম্পর্কে পড়তে গিয়ে নিজের অজান্তেই দুচোখ ভিজে উঠবে। বেশ ভালো আলোচনা আছে এখানে।

    ৯. প্রান্তসীমা:
    আরবের মরুভূমি থেকে ইসলামের উত্থান হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তা পৃথিবীর নানান প্রান্তে পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়। পশ্চিম ও পূর্ব আফ্রিকা, ভারতবর্ষ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, চীনসহ নানান জায়গায় ইসলামের আগমন এবং সেখানে মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠান বিবরণ পাওয়া যাবে এই অধ্যায়ে।

    ১০. পুনরুত্থান:
    মোঙ্গল আক্রমণের মুখে মুসলিম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় শহর বাগদাদসহ বেশিরভাগ শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার পর কে ভেবেছিল তারা আবার জেগে উঠতে পারবে! হ্যাঁ, এবার পশ্চিম দিক থেকে ইসলামের পুনরুত্থান হয়েছিল উসমানীয়দের হাত ধরে। সেই ইতিহাসই বর্ণিত হয়েছে এই অধ্যায়ে। শুধু তাই নয়- অটোম্যানদের শাসনামল, সাফাভীদের ইতিহাস, ভারতবর্ষে মোগলদের উত্থান সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে।

    ১১. পতন:
    কয়েক শতাব্দী প্রতাপের সঙ্গে শাসনকার্য পরিচালনা করার পর অটোম্যান সাম্রাজ্য এবং ভারতের মোগল সাম্রাজ্য কীভাবে পতনের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল তার করুণ ইতিহাস পাবেন এই অধ্যায়ে।

    ১২. পুরনো ও নতুন চিন্তাধারা:
    মুসলিম শাসনের অবসান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম জাতিও চিন্তার ক্ষেত্রে নানান ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তারা ইসলামী মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। আবার তাদের ইসলামের সরল সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য যে চেষ্টা-সংগ্রাম সেটাও জানতে পারা যাবে এই অধ্যায় থেকে।


    বইটা যাদের পড়া জরুরি:
    লেখার শুরুতেই বলেছি- আমরা ইতিহাসবিমুখ জাতি। নিজেদের অতীত সম্পর্কে আমাদের জানার আগ্রহ বড্ড কম অথবা ইতিহাসের বই নিয়ে বসলে নানান জটিল ঘটনাপ্রবাহ পড়তে গিয়ে ঘুম এসে যায়।
    ইতিহাসের ঘটনাগুলোকে ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ বইয়ে খুবই সরলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইতিহাসের বেশি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়নি বলে পড়তে গিয়ে বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। ইতিহাসের প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠকের জন্য এটি একটি অবশ্যপাঠ্য বই।

    প্রচ্ছদ এবং অনুবাদ:
    ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ হাতে নেয়ার পর প্রচ্ছদের দিকে কিছুক্ষণ অবশ্যই তাকিয়ে থাকতে হবে। প্রচ্ছদ অসম্ভব রকমের ভালো; যেকোনো পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করার মতোই।
    মূল টেক্সটের চেয়ে অনুবাদই আমাকে বেশি পড়তে হয়। তবে বেশিরভাগ সময়ই অনুবাদের মান আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। তবে আলী আহমাদ মাবরুরের অনুবাদের মান যথেষ্ট উন্নত। সম্পাদনাও করা হয়েছে সতর্কতার সঙ্গে। কয়েক জায়গায় ‘উ’ এবং ‘ও’ এর ব্যবহারে গণ্ডগোল ছাড়া তেমন বড় ধরনের কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি। আর দু-একটি যে সমস্যা আছে, তা ধরার মতো নয়।

    তবে…?
    আমার পরামর্শ হলো বইটি পড়ুন। যদি প্রাথমিক পাঠক হন- তবে আজই শুরু করুন। আর যদি ইতিহাসের বোদ্ধা পাঠক হন- তবুও পড়ুন; নিজের জানাশোনাকে আরেকবার ঝালাই করে নিন।
    এমন বই পড়া থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা উচিত নয় কোনোমতেই।

  2. nayeem_sharder

    বই:- লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি

    প্রথমে বইটির নাম অনেক বেশি আকৃষ্ট করেছে। ইতিহাসের একটা বড় অংশ জুড়ে “ইসলাম”। বইটির আলোচনা ইসলামপূর্ব আরব থেকে শুরু হয়েছে। খুব সংক্ষিপ্ত লেখা কিন্তু বেশ সাজানো গোছানো। রাসূল সঃ এর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও খোলাফায়ে রাশেদীনের নানা ধরনের ট্রাজেডি পাঠকের মন বাসাতে সক্ষম। বইটিতে খুব বেশি বিস্তারিত আলোচনা নেই। শুধু চুম্বক অংশ গুলো ধরিয়ে দেয়াই মূল লক্ষ্য।

    তিনটি অধ্যায় খুব বেশি চমৎকার লেগেছে।
    ১. মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা-
    চার খলিফার মৃত্যুর পর থেকে সাম্রাজ্য কাঠামোতে অনেক পরিবর্তন ঘটে। শাসকের বিলাশবহুল জীবন ও উত্তরাধিকারী নির্বাচন (রাজতন্ত্র) শুরু এখান থেকেই। কিন্তু উমাইয়ার যুগে সামরিক বিজয়ের সাফল্য অনেক। এরপরে শুরু আব্বাসীয়দের উৎত্থান।

    ২. বুদ্ধিবৃত্তি সোনালি যুগ-
    যারা ইসলামের বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন এবং সাংস্কৃতিক বিষয় জানেন না। তাদের জন্য এটি অনন্দদায়ক। আরো জানার আগ্রহ বাড়িয়ে তুলবে । গনিত, চিকিৎসা, ভূগোল, জ্যোতির্বিদ্যা এবং পদার্থবিদ্যা এইগুলো চর্চা ও আবিষ্কার হৃদয় ছুয়ে যাবে নিশ্চিত।

    ৩. ইসলামী জ্ঞান চর্চা-
    ইসলামের বিধি-বিধান উদঘাটনে ইমাম আবু হানিফা রহঃ কত বড় মেজর পার্সন তা বর্ণনা করার কিছু নেই। চার প্রসিদ্ধ ইমামের জ্ঞান চর্চা এই অধ্যায়ে পাবেন। আরে আছে আকিদাহ, সুফিজম, ও শিয়াদের নিয়েও।

    এরপরে উৎত্থান-পতনের নানা চুম্বক অংশ। পাঠক চিন্তার গভিরে পৌছে যাবেই। এই জায়গাটায় শেখার অনেক কিছুই আছে। এই ইতিহাস গুলো পড়ার পরে বর্তমান মুসলিম বিশ্ব নিয়ে অনেক বেশি ভাবায়।

  3. Shahriar Mohammad Aqib

    ফিরাস আল খতিব রচিত “লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি” ইসলামি ইতিহাস বিষয়ে এক অনন্য সংযোজন।ইতিহাস একটি জাতির দর্পণ।কোনো জাতির অতীতের গৌরব ও জৌলুস অনুধাবন করা যায় ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে। বর্তমান সংকট উত্তরণে ইতিহাস আমাদের প্রেরণা দেয়, দিকনির্দেশনা দেয়।ইতিহাস একদিকে আনন্দে আত্মহারা করে আবার আরেকদিকে দুঃখে ভারাক্রান্ত করে।ইসলামের হাজার বছরের ইতিহাস একদিকে যেমন বীরত্বগাথায় ভরপুর আরেকদিকে তেমনি বিশ্বাসঘাতকতা, কাপুরুষতার আবর্জনাও রয়েছে অনেক ।ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে আমরা যেমন আমাদের অতীতের সমৃদ্ধি জানতে পারি তেমনি বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ করতে পারি।ফলে ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা অনেকেই উপলব্ধি করেন।তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হলো বিদ্যমান ইতিহাস গ্রন্থগুলো কলেবরে বেশ দীর্ঘ।জ্ঞানপিপাসু অনেক মানুষ তো সেখান থেকেই নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে থাকেন;তবে অনেকেই জন্য সময়ের অভাবে তা সম্ভব হয়ে উঠে না। এক্ষেত্রে “লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি” অসাধারণ একটি বই।ইসলামি ইতিহাসের একটি চমৎকার ধারণা এটি পাঠকের সামনে তুলে ধরে।রাসুল(স) এর জীবনী, খোলাফায়ে রাশেদা, উমাইয়্যা খিলাফত, আব্বাসী খিলাফত সহ পরবর্তী সময়ের মুসলিম সালতানাতগুলোর চমৎকার বিবরণ এতে রয়েছে।জ্ঞান বিজ্ঞান ও বিশ্বসভ্যতায় মুসলিমদের অবিস্মরণীয় অবদানকে গভীরভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়। পাশাপাশি আমাদের যে ভুলগুলোর কারণে শত শত বছরের মুসলিম শাসনে সমৃদ্ধ আন্দালুস আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়,সেসকল ভুলগুলো স্মরণ করিয়ে দেয় এবং সেগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণের আবেদন জানায়। তাতারঝড়ে মুসলিমবিশ্ব তছনছ হয়ে যাওয়া, সেখান থেকে উসমানীয় বা অটোম্যান সাম্রাজ্যের উত্থান এবং পুনরায় মুসলিমদের শত বছরের শাসন ও আধিপত্য -এসকল বিষয় স্মরণ করিয়ে দেয়। উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন এবং মুসলিম বিশ্বের আজকের করুণ অবস্থার জন্য দায়ী কারণগুলো আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।পাশাপাশি মুসলিমদের হৃদয়ে আশার সঞ্চার করে -বর্তমান নাজুক পরিস্থিতি কাটিয়ে পুনরায় মাথা উঁচু করে দাড়ানোর।বইটি ইতিহাসের একটি সংক্ষিপ্ত ও চমৎকার ধারণা যেমন দেয় তেমনি ইতিহাস বিষয়ে গভীর অধ্যয়নের অনুপ্রেরণা দেয়।

  4. Rehmatullah Sojol

    ইসলামের রয়েছে এক বিস্তৃত ইতিহাস। যুগে যুগে ইসলামিক এবং নন-ইসলামিক উভয় ঘরানার স্কলাররাই ইসলামের ইতিহাস নিয়ে বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন, যে রচনার কাজ আজো পর্যন্ত চলছে।
    .
    ইসলামের ইতিহাস নিয়ে খণ্ডে খণ্ডে বিশাল বিশাল গ্রন্থ রচিত হলেও মাত্র একটি খণ্ডের ছোট কলেবরে ইসলামের ইতিহাসের সামগ্রিক চিত্র নিয়ে আসার কাজ একেবারে বিরল। অথচ কোনো টপিক নিয়ে বিস্তৃত আকারে পড়ার আগে সেটা সম্পর্কে ধারণা নিতে ওই বিষয়ের সামগ্রিক চিত্র নিয়ে আসা ছোট একটা বই পড়ে নিতে বলেন গবেষকেরা।
    .
    ফিরাস আল খতীব তার ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ বইতে ইসলামের ইতিহাসের সেই সামগ্রিক চিত্র ছোট কলেবরে নিয়ে আসার মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। তিনি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইসলামের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস’ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর। প্রকাশের পর থেকেই বইটি আন্তর্জাতিক বাজারে বেস্টসেলারের তালিকায় স্থান করে নেয়।
    .
    বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের কাছে বইটিকে বোধগম্য করতে বইটির অনুবাদ নিয়ে এসেছে প্রচ্ছদ প্রকাশন। ভাষান্তর করেছেন – আলী আহমাদ মাবরুর ভাই।
    .
    বইটি সম্পর্কে আরো একটি মূল্যবান তথ্য হলো, বর্তমান মিডিয়ার জনপ্রিয় তরুণ ইতিহাসবিদ ইমরান রাইহান ভাই বইটির একটি রিভিউ লিখেছেন। রিভিউটিতে ইসলামের ইতিহাস পড়তে আগ্রহী এমন সবাইকে তিনি এই বইটি পড়তে উৎসাহিত করেছেন।
    .
    এবার একটু ভিতরের পাঠ পর্যালোচনার কথা বলি। বইটিকে সাজানো হয়েছে মোট বারোটি অধ্যায়ে। প্রথমে লেখক একটি সুন্দর ভূমিকা লিখেছেন। তারপর প্রথম অধ্যায়ে এনেছেন ইসলামপূর্ব আরবের কথা৷ দ্বিতীয় অধ্যায়ে এসেছে নবিজী সা. এর জীবন ও তার জীবিত থাকাকালীন ইতিহাস নিয়ে। তৃতীয় অধ্যায়ে আলাপ হয়েছে, খোলাফায়ে রাশেদার যুগের ইতিহাস নিয়ে। চতুর্থ অধ্যায়ে ‘মুসলিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা’ শিরোনামে আলোচনা এসেছে উমাইয়া শাসনামল এবং তৎপরবর্তী আব্বাসীদের উত্থান নিয়ে। পঞ্চম অধ্যায়ে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক সোনালী যুগ’ শিরোনামে কথা হয়েছে আব্বাসীদের আমলে মুসলিমদের বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষসাধন নিয়ে। পরের শিরোনামগুলোর ভেতরেও লেখক বিভিন্ন শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে ইতিহাস নিয়ে এসেছেন বর্তমান সময় পর্যন্ত। যার মধ্যে সংক্ষেপে উঠে এসেছে, আন্দালুস বিজয়, কনস্টান্টিনোপল বিজয়, ভারতবর্ষে মুসলিমশাসনসহ আরো অনেক মূল্যবান আলাপ-আলোচনা।
    .
    পাঠানুভূতি ব্যক্ত করতে বললে বলবো, এটা আমাকে ইসলামের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। আমার ভিতর বিস্তৃতভাবে ইসলামের ইতিহাস পাঠের আগ্রহ জাগিয়ে দিয়েছে বইটি। এখন যদি আমি বিস্তৃতআকারে চার/পাঁচ খণ্ডের ইসলামের ইতিহাসের বই পড়তে যাই তাহলে সেটা বুঝতে পারা আমার জন্য অনেক সহজ হবে।
    .
    বইটির প্রচ্ছদ ও পৃষ্ঠাসজ্জা সত্যিই চমৎকার। বাঁধাইও বেশ ভালো৷
    .
    বইটির গায়ের মূল্য – ৩৬০ (হার্ডকভার) ২৬০ (পেপারব্যাক) আর ভেতরের পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৮৮
    .
    পরিশেষে, ইসলামের ইতিহাস পাঠে আগ্রহী যেকোনো ভাই বা বোনকে বলবো, প্রচ্ছদ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’ আপনার জন্য একটি অবশ্যপাঠ্য বই।

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart
Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।