Copyright © 2024 Seanpublication.com
ইসলাম প্রতিষ্ঠা : সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন (পেপারব্যাক)
- লেখক : আরশাদ আনসারী, ড. ইয়াদ কুনাইবী
- পাবলিকেশন : শব্দতরু
- বিষয় : শাসনব্যবস্থা ও রাজনীতি, সকল প্রকাশক
Author : ড. ইয়াদ কুনাইবী
Translator : আরশাদ আনসারী
Publisher : শব্দতরু
Category : শাসনব্যবস্থা ও রাজনীতি
৳260 ৳170
You Save TK. 90 (35%)
Out of stock
ইসলাম প্রতিষ্ঠা : সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন (পেপারব্যাক)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (2)
2 reviews for ইসলাম প্রতিষ্ঠা : সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন (পেপারব্যাক)
Add a review Cancel reply
Muhammad Rafsan Nasir –
দুটি আয়াত ; না বলা- না বোঝা অনেক প্রশ্নের সমাধান।
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাঁর পবিত্র কালাম পাকে ইরশাদ করেন _
“তারা কি জাহেলিয়াতের শাসন কামনা করে? দৃঢ়বিশ্বাসীদের জন্যে আল্লাহ অপেক্ষা উত্তম শাসক আর কে হতে পারে।”[সূরা মায়েদা :৫০]।
“শুনে রাখো; সৃষ্টি ও হুকুম দেওয়ার অধিকার একমাত্র তাঁরই। বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহ তা’আলা অতি মহান। [আরাফ :৫৪]।
জমিন যাঁর বিধান চলবে একমাত্র তাঁর এটাই তো স্বাভাবিক। আমাদের জন্য নিজের দ্বীন ও শরীয়াহর দিকে ফিরে আসাই হলো বাঁচার একমাত্র উপায়, মুক্তির একমাত্র পথ। আর নাহয় আমরা একটি শূন্য বৃত্তে আবর্তিত হতেই থাকবো, যার কোন কূলকিনারা নেই। অবাক করা বিষয় হলো আমরা আমাদের সমস্যাগুলো এমনভাবে সমাধান করতে চাই, যা আমাদের সমস্যাগুলো আরও বাড়িয়ে দেয় ! অনেকটা গরম থেকে রক্ষা পেতে আগুনের শরণাপন্ন হওয়ার মতই অবস্থা। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার মত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি অনেকটাই এমনই। আফসোস! আমরা ভুলে যাই যাবতীয় সমস্যা নিরসনের একমাত্র সঠিক পন্থা আল্লাহর সৃষ্টি জমিনে তাঁর দেওয়া শরীয়াহ আইন বাস্তবায়ন করা।
“শরীয়াহ প্রয়োগের মাধ্যমে আল্লাহর নিঃশর্ত দাসত্ব বাস্তবায়ন করা ছাড়া স্বাধীনতা কখনোই সম্ভব নয়। আল্লাহর প্রতি এ দাসত্বই ইনশাআল্লাহ আমাদেরকে পশ্চিমের দাসত্ব থেকে মুক্তি দেবে।”
আরব বসন্তের (২০১১) এর সূচনাকলে কিছু ইসলামপন্থী দল হাকিমিয়্যাহর মতো গুরুত্বপূর্ণ আকীদার বিভ্রান্তি ঘটিয়ে সার্বভৌমত্বকে হেকমত ও তাওরিয়ার নাম দিয়ে জায়েয করেছিলেন এবং শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে নিয়ে শরীয়াহকেই বলি দিয়ে দিয়েছিলেন। তারা ক্ষমতা পাওয়া এবং ধরে রাখার লোভে যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তির নামে ইসলামকে এমনভাবে বিকৃত করেছিলেন, যা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত ইসলামের সম্পূর্ণ বিপরীত ছিলো। জাহেলিয়াতে পরিপূর্ণ এইসব দলের বিকৃতি ও বিভ্রান্তিকে খুলে খুলে বর্ণনা করতে (২০১২) সালে সম্মানিত লেখক ‘নুসরতান লিশ শরীয়াহ'(শরীয়াতের সাহাযার্থে) নামে একটি সিরিজ শুরু করেছিলেন। বক্ষ্যমাণ এই সিরিজটির সহজ-সাবলীল অনুবাদই হচ্ছে ‘ইসলাম প্রতিষ্ঠা: সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন’ নামক বইটি। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সিরিজটিকে ‘শব্দতরু’ প্রকাশনী উম্মাহর কল্যাণে বই আকারে মলাটবদ্ধ করে মহান গুরুদায়িত্ব পালন করেন। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল তাদের খেদমত কবুল করুন (আমিন)।
লেখক পরিচিতিঃ
ইয়াদ কুনাইবী একজন সম্মানিত দাঈ এবং অনলাইন একটিভিস্ট। পবিত্র কুরআনের হাফিয। তিনি মানুষকে ইসলামের ব্যাপারে সচেতন করার জন্য প্রায় দুই যুগ ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রকাশিত হয়েছে তার অনেকগুলো প্রবন্ধ এবং লেকচার। হকের পথে আপসহীন অবস্থানের কারণে বন্দি হয়েছেন একাধিকবার। সৃষ্টির সামনে আল্লাহ রব্বুল আলামীনের বড়ত্ব তুলে ধরা এবং মানুষকে হকের পথে আহ্বান করাই তার দাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য। বিভিন্ন পরীক্ষা ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই মহান দাঈ তার দাওয়াহ অব্যাহত রেখেছেন।
বইটির উদ্দেশ্যঃ
ইসলাম প্রতিষ্ঠা কেন্দ্রিক অসংখ্য ভুল জনমনে গেড়ে বসেছে যেগুলো দূর করা এখন সময়ের দাবী। এইসব ভুলগুলোর অপনোদন ঘটানো এবং শরীয়াহর প্রতি বিকৃত মনোভাব দূর করার মহান উদ্দেশ্য নিয়েই লেখক সিরজটি চালু করেছিলেন যা আমরা আলহামদুলিল্লাহ; বই হিসেবে পেয়েছি। বইটি পুরো মুসলিম উম্মাহকে উদ্দেশ্য করে সংশোধনীমূলক বার্তা পৌঁছাবে ইনশাআল্লাহ।
বইটির সারনির্যাসঃ
মাস্টারপিস এই বইটিকে ত্রিশটি অধ্যায়ে সাজানো হয়েছে। যার প্রতিটি অধ্যায়ে শরীয়াহ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বিভিন্ন চিন্তাধারা, প্রশ্ন ও সেসকল আপত্তিমূলক প্রশ্নের খণ্ডন নির্ভরযোগ্য দলিলের ভিত্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে । যেমন _
📝শরীয়াহ বাস্তবায়নের পূর্বে অন্যান্য সমস্যার সমাধান জরুরি! (নাউযুবিল্লাহ);
📝শরীয়াহকে অবমূল্যায়ন করবেন না,
📝পর্যায়ক্রমে শরীয়াহ আইন প্রয়োগের বিপজ্জনক অর্থ
📝প্রথম থেকেই শরীয়াহ শাসনের ঘোষণা দেওয়া কেন জরুরি?
📝সফলতার উপায় অবলম্বন,
📝বর্তমান ইসলামপন্থা ও লক্ষ্যহীনতা,
📝শরীয়াকে মানুষের অনুগামীকরণ,
📝শরীয়াহ ব্যতীত অন্য শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করার ভয়াবহতা………. ইত্যাদি।
আমরা আজ যেসব সমস্যার সম্মুখীন তার সবই শরীয়াহ কায়েম না করার ফল। দারিদ্রতা, বেকারত্ব ও বিশৃঙ্খলা এসব সমস্যা শরীয়াহ না থাকার কারণেই হয়েছে। এইজন্যই সমাজের অন্যান্য সকল সমস্যার সমাধানের পূর্বে মেইন সমস্যা সমাধান করা আবশ্যক। ওষুধ বাদ দিয়ে রোগের মাধ্যমেই রোগের চিকিৎসা করা আর শরীয়াহ বাদ দিয়ে শান্তির সমাধান আশা করা একই রকম নিরবুদ্ধিতা। সারকথা, সমাজের বর্তমান সৃষ্ট সমস্যা হোক বা অন্য কোন সমস্যা সকল সমস্যার সমাধান একমাত্র শরীয়াহ (আল্লাহর আইন)বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব।
বইটি কেন পড়বেন?
কোন দলেই জাহেলিয়াত থেকে মুক্ত নয়। প্রত্যেক দলের মাঝেই কিছু না কিছু ভুল ভ্রান্তি সীমাবদ্ধতা থাকে যা ক্ষেত্রবিশেষে কখনো বড় বা ছোট হয়ে থাকে। বর্তমান ফিতনার জামানায় শরীয়াহ বিহীন সমাজ ব্যবস্থায় শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সৃষ্ট বিভ্রান্তি থেকে বাঁচার জন্য এই বইয়ের গুরুত্ব বলাই বাহুল্য। সেকুলার রাষ্ট্রে মোডারেট ইসলামের দৌরাত্ন্যে প্রতারিত আজকের যুবকশ্রণিকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বুনতে থাকা প্রতিটি অন্তরকে প্রচলিত ভ্রান্তি থেকে রক্ষা করতে বইটি বিশেষ সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ আল আযীয। বর্তমান যে সময় চলছে, আর নতুন করে বলার প্রয়োজন বোধহয় নেই , বইটি কেন পড়া উচিত! দাওয়াহ দেওয়ার ক্ষেত্রে বইটি বেশ কার্যকরী হবে ইনশাআল্লাহ। এমন অনেকেই আছেন যারা শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তো দেখেন ঠিক, কিন্তু চিন্তাপদ্ধতি ভুলে ভরা। সুতরাং নিজে বিভ্রান্তি থেকে বাঁচতে এবং অপর ভাইকে বাঁচাতে এই বইটি অবশ্যই পড়া উচিত।
অব্যক্ত কিছু কথাঃ
প্রতিটি জিনিসের ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু রুলুস রয়েছে। তেমনি শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। আল্লাহর দেওয়া আইনকে বাস্তবায়ন, একমাত্র আল্লাহর দেওয়া হুকুমেই সম্ভব, ওয়াল্লাহি! মানবরচিত বিধানে কস্মিনকালেও তা সম্ভব নয়।
অনুভূতিঃ
ভালো লাগার বিষয়গুলো হলোঃ – বইটির প্রয়োজনীয় সব স্থানে টীকা যোগ করা হয়েছে। সহজ-সরল অনুবাদ। লেখকের বার বার উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়বস্তুকে পানির মতো সহজ করে উপস্থাপন। শিরোনামের শেষে পূর্বের কথার সারকথা উল্লেখ করা। খারাপ লাগার মতো তেমন কোন বিষয় আমার চোখে পড়েনি। ভুল হিসেবে দৃষ্টিগোচর হয়েছে, সূরা মায়েদার একটি আয়াত নাম্বার ৫০ এর পরিবর্তে ১৫০ লিখা দেখলাম। কুরআনের আয়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ সর্তকতা কাম্য ছিল।নিঃসন্দেহে এটা অনাকাঙ্খিত ভুল, টাইপিং মিস্টেকও হতে পারে, কিন্তু যেহেতু সেটা কুরআনের আয়াত তাই বিষয়টি আমার ভালো লাগেনি।
গুরুত্বপূর্ণ খেদমত আঞ্জাম দেওয়ার জন্য বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা উত্তম জাযা দান করুন।
বই পরিচিতি/
বইঃ ইসলাম প্রতিষ্ঠা:সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন
লেখকঃ ড.ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদকঃ আরশাদ আনসারী
পৃষ্ঠাঃ ১৯৬
প্রচ্ছদ মূল্যঃ ২৬০
কামরুননাহার মীম –
জাহেলিয়াতের এক যুগে আল্লাহ সুবহানা তা’আলা আলোর দিশারি রূপে পাঠিয়েছিলেন আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে। দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার এই আলোকবর্তিকা পদে পদে লাঞ্চিত, ব্যথিত হয়েও আল্লাহ সুবহানা তায়ালার সন্তুষ্টির পথে হেঁটে গিয়েছিলেন আর ইসলাম কে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লেগে ছিলেন আজীবন। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে সালফে সালেহীনগণ যদিও চেষ্টা করেছিলেন শরীয়াহ কায়েম রাখতে, তবে আস্তে আস্তে ইসলামের নাম শাসনব্যবস্থা থেকে উঠে গেলো, স্বৈরশাসন শুরু হলো। রাষ্ট্রের থেকে পৃথক হলো ইসলাম কিন্তু এই পৃথকতা আস্তে আস্তে আমাদের কে সেই জাহেলিয়াতের দিকে নিয়ে গেছে এবং জালিমদের শাসনে বন্দি করে ফেলেছে। মুসলিমরা আজ দুনিয়ার জন্য দ্বীনকে ত্যাগ করছে, বিক্রি করছে নিজের দ্বীনকে।
উম্মাহ-র মাঝে যখনই শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার প্রশ্ন আসে তখনই ইসলামপন্থী কিছু সৈনিক এগিয়ে আসে- নিঃসন্দেহে তারা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু যখন শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শরীয়াহকে বিকৃত করা হয়, বলি দেওয়া হয় তার বিধানগুলো, পশ্চিমার অনুসরণ করা হয়, ক্ষমতার স্থায়ীত্ব বজায় রাখবার জন্য বিধানের ছাড় দেওয়া হয়; তখন এটা সত্যিই দুঃখের বিষয়।
২০১১ সালে আরববিশ্বজুড়ে জনগণের দাবি উঠে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার। ইসলামপন্থীদের কাছে সুযোগ এসেছিল শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার কিন্তু অভাব ছিল সঠিক পদ্ধতির। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি যখন শরীয়াহ বিকৃত করে কিংবা আল্লাহর অসন্তুষ্টির পথে ঠিক তখনই জর্ডানের প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ড. ইয়াদ আল কুনাইবী এসব বিকৃত এবং বিভ্রান্তিকর পদ্ধতির গিঁট খুলে তা বর্ণনা করে এক সংশোধনী বার্তা নিয়ে “নুসরতান লিশ শরীয়াহ” সিরিজ লিখতে শুরু করলেন। যদিও গণতন্ত্রের স্রোতে ভেসে যাওয়া উম্মাহ এই সতর্কবার্তা খুব একটা অনুধাবন করেনি। ২০১৩ সালে তার এই সংশোধনমূলক বার্তার প্রাসঙ্গিকতা এবং পরিচিতি বাড়তে শুরু করে। তার ঐতিহাসিক সেই সিরিজটির অনুবাদ মূলত “ইসলাম প্রতিষ্ঠা: সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন” বইটি।
বইটি কী নিয়ে লেখা:
শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আমাদের মাঝে যে বিভ্রান্তিগুলো বর্তমানে বিরাজমান সেগুলো নিয়েই লেখক মূলত বইটি লিখেছেন। আমাদের বিভ্রান্তির নিঃশেষ ঘটিয়ে ইসলাম কে কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায় তা বইটিতে লেখক খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেকে মনে করে শরীয়াহ বাস্তবায়নের পূর্বে অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা জরুরী৷ কিন্তু শরীয়াহের বাহিরে গিয়েই মূলত আজ মুসলিম জাতি এতো সমস্যায় জর্জরিত। আর তাই মুসলিম কে প্রথমেই শরীয়াহ বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে হবে- এতে করেই অন্যান্য সমস্যার সমাধান সম্ভব তা কুরআন ও হাদিসের আলোকে লেখক বুঝিয়ে দিয়েছেন। অনেকসময় আমরা শরীয়াহ কে কট্টর, কঠোর ট্যাগ দিয়ে এড়িয়ে যেতে চাই কিংবা ছাড় দিতে চাই। কিন্তু লেখক স্পষ্টই এখানে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন শরীয়াহ বিরোধী মানবরচিত আইন আমাদের জন্য কল্যাণকর হলে নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়াহ আইনের প্রয়োজন হতো না। অনেকসময় “মানবরচিত আইন কিছুদিন চলুক, এরপরে শরীয়াহ বাস্তবায়ন হবে” – এমন সব কথা বলা হয়, যা আসলে বিপজ্জনক। কারণ এটার বাস্তবিক অর্থ দাড়ায় শরীয়াহ কে কিছুকাল অব্যাহতি দিয়ে অন্য কিছুর মাধ্যমে শাসনব্যবস্থার পরিচালনা করা। গণতন্ত্রের ইসলামিকরণ, আক্বিদাগত ত্রুটি, আলেমদের অন্ধ অনুকরণ, শিরকের পথ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা সহ শাসনব্যবস্থার নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লেখকের সিরিজে উঠে এসেছে।
বইটি কাদের জন্য:
বইটি মূলত সকল মুসলিমদের জন্যই জরুরী। কারণ শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার ব্যপারে যে ভ্রান্ত ধারণা গুলো আমাদের মগজে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে তার সংশোধন না হলে জালিমদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ নেই। তবে বিশেষভাবে ইসলামপন্থী সৈনিকদের মাঝে বইটি পৌঁছে দেওয়ার বিকল্প নেই। শরীয়াহের প্রতিষ্ঠা আমরা সবাই চাই কিন্তু যখন আমাদের মাঝেই এই বিষয়ে অনৈক্য থাকবে তখনই সঠিক সিদ্ধান্তে এসে শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার উপায়ের একক মত পাওয়া যাবেনা। আর এভাবেই শরীয়াহ কায়েমের পথে আমাদের বাস্তবিক যাত্রা ব্যাহত হতে থাকবে।
বইটি কেন প্রয়োজনীয়:
চারিদিকে জালিমদের শাসন কিংবা বিকৃত শরীয়াহ ব্যবস্থার অনুকরণ চলছে। দ্বীন ইসলামের প্রকৃত ধারণা যেমন পরিবর্তন হচ্ছে, ঠিক একইভাবে আল্লাহর অসন্তুষ্টির পথে আমাদের যাত্রা চলছে ক্রমাগত। শরীয়াহ নিয়ে যে ভুল ধারণা আমাদের আক্বীদাহ তে মিশে গেছে তার জট খুলে পরিশুদ্ধ করার সময় এখনই। শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা হবে আমাদের কল্যাণের জন্য এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কিন্তু সেই শরীয়াহ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যদি আল্লাহর অসন্তোষ অর্জিত হয়, তবে সেটা আরও বিপদজনক। আর তাই আমাদের শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার সঠিক পদ্ধতি আল্লাহর বিধানের আলোকে জেনে নেওয়া উচিত। এই বইটিতে মূলত এই দিকনির্দেশনা গুলো বেশ সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া আছে। আর তাই ইসলামের শাসনব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার জন্য নিবেদিতপ্রাণ সৈনিকদের অবশ্য পাঠ্য এই বইটি।
বইটির ভালোলাগার কিছু দিক:
বইটির সুন্দর প্রচ্ছদ, বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট এবং বিস্তৃত অপ্রয়োজনীয় আলাপ না করে লেখক ড. ইয়াদ কুনাইবী বরং মূল পয়েন্ট গুলোকে কুরআন হাদিসের আলোকে লিখেছেন যা পাঠকের পড়ার জন্য সুবিধাজনক এবং বোধগম্য। অনুবাদকের সহজ-সরল, প্রাঞ্জল অনুবাদ পাঠককে বইটি পড়তে সাহায্য করবে ইন শা আল্লাহ।
আমার অনুভূতিগুচ্ছ:
ব্যক্তিগতভাবে আমি বইটার প্রচ্ছদের নাম দেখার পরেই ভেবেছিলাম কঠিন, দুর্বোধ্য লিখা হবে হয়তো। পড়তে গিয়েই দেখলাম কত সহজভাবে লিখা হয়েছে বইটা। বইটি বর্তমানে মুসলিমদের জন্য পড়া অতীব জরুরি। আর ইয়াদ কুনাইবির দরদমাখা লেখনী আর উদাহরণ টেনে সহজবোধ্য ভাষার লেখনী সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
বই সম্পর্কে সংক্ষেপে-
বই: ইসলাম প্রতিষ্ঠা: সমকালীন ভাবনায় সৃষ্ট ভ্রান্তি নিরসন
লেখক: ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদক: আরশাদ আনসারী
পৃষ্ঠা: ১৯৬
প্রচ্ছদমূল্য : ২৬০৳
প্রকাশনী: শব্দতরু পাবলিকেশন