ইসলামের বিশ্বাস ও চেতনা নিয়ে আজকাল সর্বমুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এ পরিস্থিতিতে একজন সাধারণ মুসলিমের পক্ষে তার বিশ্বাসের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও আস্থাশীল থাকা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করে এমন অনেকেই আজকাল জানে না, কোন বিশ্বাসটি তার মুসলিম-পরিচয়ের সাথে সাংঘর্ষিক। নিজেকে মুসলিম জাতিসত্তার একজন সদস্য বলে পরিচয় দিতে হলে কী কী বিশ্বাস লালন করতে হয় এবং কী কী বিশ্বাস বর্জন করতে হয়, অধিকাংশ মুসলিমই তা সম্পর্কে বেখবর। সেই উপলব্ধি থেকেই আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি।বক্ষমান গ্রন্থটি আরব-বিশ্বের তাওহীদবাদী আন্দোলনের পুরোধা ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব রহিমাহুল্লাহ কর্তৃক রচিত ‘নাওয়াকিদুল ইসলাম’ গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা। ব্যাখ্যাকার শাইখ আবদুল আযীয ইবনু মারযুক তারীফি আরব-বিশ্বে একজন তাওহীদবাদী আলিম হিসেবে প্রসিদ্ধ। এই গ্রন্থে তিনি ঈমান বিনষ্টকারী দশটি বিষয় নিয়ে বাস্তবমুখী তথ্যনির্ভর আলোচনা করেছেন। একজন মুসলিমের জন্য এ বিষয়গুলো আত্মস্থ করা অত্যন্ত জরুরি। নতুবা যে-কোনো পন্থায় তার ঈমান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
Copyright © 2025 Seanpublication.com
Towhidur Rahman –
মাশাআল্লাহ ! খুব ভালো বই ।
ফাতিমা মৌ ফ্লাভিকা –
||যা নিয়ে এই বই||
ইসলাম প্রাপ্তির পর মুমিনের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো তার ঈমান!ঈমানহীন মুমিন/মুসলিমের বেঁচে থাকা অর্থহীন।জীবনে চলার পথে নানা কারণে ঈমান ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ঈমান ধ্বংস হয়ে যাওয়া অন্যতম কারণ হলো শিরক করা।এই শিরকের নানা ধরণ রয়েছে।বইটিতে শিরকের প্রকারভেদ নিয়ে সুক্ষ্ম আলোচনা রয়েছে।অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় ঈমান ধ্বংসের ১০ টি কারণ তুলে ধরা হয়েছে। নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে এমন অনেকেই হয়তো জানে না কী কী কারণে ঈমান ধ্বংস হয়ে যায়,আমরা এখন এমন এক জামানায় বাস করছি যেখানে ঈমান ধ্বংস করার নানা আয়োজন আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অধিকাংশ মুসলিম সেই সম্পর্কে বেখেয়াল! কবে যে কোন কারণে ঈমান ধ্বংস হয়ে আছে নিজেও জানে না।নিজের ঈমানকে ঝালাই করে দেখার মতো বিষয়গুলো নিয়ে সাজানো হয়েছে ঈমান ধ্বংসের কারণ বইটি।
||বইটি পড়া কেন একান্ত প্রয়োজন||
ইমান ব্যতীত কোনো আমলই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ইমান ঠিক থাকলে অল্প আমলই নাজাতের কারণ হবে, আর ইমান ছাড়া আসমান সমান আমলও ছাঁই।আমরা মনে করি মুসলমান পরিবারে জন্ম নিলে, ইসলামি নাম রাখলে বা গরুর গোশত খেলেই একজন লোক মুসলমান। আসলে এমনটা না। মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, ইসলামি নাম রেখেও কেউ কাফের হয়ে যেতে পারে। কারণ ওযুভঙ্গ, নামাজভঙ্গের মতো ইমানও ভঙ্গ হয়। ওযু, নামাজের মতো ইমান ভঙ্গেরও কিছু কারণ রয়েছে। যার মধ্যে ইমান ভঙ্গের কারণগুলোর মধ্য থেকে কোনো একটি কারণও স্পষ্টভাবে পাওয়া যাবে, সে কাফের হয়ে যাবে।
এজন্যই মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো ইমানভঙ্গের কারণগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা এবং এগুলো থেকে সর্বদা বেচেঁ থাকা। ইমানভঙ্গের কারণগুলো নিয়ে শাইখ মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদি রহ. রচনা করেছিলেন বিখ্যাত কিতাব “নাওয়াকিদুল ইমান” বা “ইমান ভঙ্গের কারণ”। সেই বইটিরই ব্যাখ্যা করেছেন সৌদি আরবের বিখ্যাত আলেম শাইখ আব্দুল আযীয আত-তারিফী। শাইখের সেই ব্যাখ্যার রূপান্তরিত রূপই “ঈমান ধ্বংসের কারণ”। আব্দুল্লাহ আল মাসউদ ভাইয়ের অনুবাদে বইটি প্রকাশ করছে সমর্পণ প্রকাশন।বইটি ইমানের ব্যাপারে সচেতন হতে, ইমান ভঙ্গের কারণগুলো থেকে আমাদের বাঁচতে সাহায্য করবে ইনশাআল্লাহ।
||বইয়ের পাতায়||
দুনিয়ার বিষয়ে আমরা যতটা সচেতন ঈমানের বিষয়ে তার সিকিভাগও সচেতন নয়,অথচ এই ঈমান না থাকা অবস্থায় কবরে চলে গেলে কোনোভাবেই পরকালে মুক্তি সম্ভব নয়।তাই আমাদের উচিত ঈমান নিয়ে সচেতন হওয়া।ঈমান ধ্বংসের অন্যতম কারণ শিরক,শিরক রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ,দু’আয় শিরক,নিয়ে শিরক,আনুগত্যে শিরক,ভালোবাসায় শিরক,প্রকাশিত অপ্রকাশিত নানান শিরক নিয়ে বিস্তারিত বলা আছে বইটিতে।জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের ঈমান, আমলকে আমানতের চাদর দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হলে ঈমান ধ্বংসের কারণগুলোর দিকে যথাযথ খেয়াল রাখতে হবেই,সেজন্য ঈমান ধ্বংসের কারণ বইটি হতে পারে একটি রিমাইন্ডারমূলক বই।
||বই সম্পর্কে আমার অভিমত||
আলহামদুলিল্লাহ! বইটি প্রকাশের জন্য অনুবাদককে অনেক শুকরিয়া কারণ,এরকম বইগুলো আমাদের খুব বেশি দরকার। জীবনের সবকিছুর উপরে হচ্ছে ঈমান।ঈমান নড়বড়ে হয়ে গেলে সবকিছুই শেষ। বইটা পড়ে নিজের ঈমানকে আরেকবার পরিশুদ্ধ করার সুযোগ হয়েছে।দাওয়াহ্ ইনভাইটেশনর জন্য এরকম বইগুলো যথোপযুক্ত।বইয়ের পৃষ্ঠাসজ্জা,লেখার ধরণ,প্রচ্ছদ বেশ আকর্ষণীয়।পরিশেষে বলতে পারি ঈমান সচেতন মুমিনদের জন্য বইটি একটি মাইলফলক।
|| বইবৃত্তান্ত ||
বইয়ের নাম: ঈমান ধ্বংসের কারণ
ব্যাখ্যাকরণ: শাইখ আবদুল আযীয তারিফী
অনুবাদক : আব্দুল্লাহ আল মাসউদ
প্রকাশনায় : সমর্পণ প্রকাশন
খুচরা মূল্য : ১৯২ টাকা।
কামরুননাহার মীম –
জান্নাতের দ্বারে প্রবেশের এক অন্যতম শর্ত হলো ‘ঈমান’। মুমিন ব্যতীত জান্নাতে কেউই যাবেনা। যে জান্নাত নিয়ে মুসলিমের এতো স্বপ্ন, সে জান্নাত অর্জনের জন্য ঈমান নামক পাথেয় সংগ্রহের তেমন চিন্তা আমাদের মাঝে খুব কমই দেখা যায় আজকাল। ঈমান সম্পর্কে আমাদের ধারণা আজ শূন্যের কোঠায়। অজান্তেই শিরকসহ নানা মারাত্মক গুনাহ নিয়েও নিজেকে ঈমানদার ভেবে কয়েকটা যুগ কাটিয়ে দেই। জীবনে অভাব থেকে যায় ঈমানের পরিচর্যার, ঈমান পরিশুদ্ধিকরণের। ওজু, রোজা কখন ভেঙে গেলো – এই নিয়ে অস্থির মানব ঈমান ধ্বংসের ব্যাপারে উদাসীন রয়ে যায়। যদি সহস্র আমল নিয়েও জান্নাতের দ্বারপ্রান্ত হতে ফিরে যেতে হয় জাহান্নামে, তবে তা কেমন হবে? ভাবুন, সেই দিনটির কথা যখন আমার ঈমানের ঘাটতির কারণে আমার স্থান হবে কঠিন শাস্তির স্থান জাহান্নাম।
ঈমানের ব্যাপারে হতে হয় অনেক যত্নশীল। আমলের ব্যাপারে যত্নশীল আত্মাকে ঈমানের ব্যাপারে হতে হয় আরও অধিক সতর্ক। কারণ ইসলামের প্রথম বিষয় হলো ঈমান। আর যদি ঈমান-ই থাকে ভ্রান্ত, তবে মুসলিম হওয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যুগে যুগে ঈমান-আকীদা সংক্রান্ত বিষয়াবলীকে নানা মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নানাজনের নানা মত তো আর সঠিক নয়৷ ভ্রান্ত বিশ্বাস আমাদের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়। ঈমান ধ্বংসের এমন ১০টি কারণকে ব্যাখ্যাসংবলিত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে “ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইতে। বইটি ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহ- এর রচিত “নাওয়াকিদুল ইসলাম” গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা।
বক্ষমান বইটিতে ঈমান বিধ্বংসী ১০টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। ঈমান ধ্বংসের ১০টি কারণকে ১০টি অধ্যায় জুড়ে চমৎকারভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এর প্রথম অধ্যায় জুড়ে প্রথম কারণ “আল্লাহর সাথে শিরক” করার কথা এসেছে। শিরকের মাঝের প্রকারভেদগুলো অত্যন্ত সাবলীলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বড় শিরক, ছোট শিরকের শ্রেণিতেও নানা বিষয় উঠে এসেছে বইটিতে। বইটির পরবর্তী অধ্যায়ে “আল্লাহ ও তাঁর মধ্যে কোনো কিছুর মাধ্যম সাব্যস্ত করা” শিরোনামে দ্বিতীয় কারণ উঠে এসেছে। আজকাল মুসলিম নামধারী অনেকেই আল্লাহর ও তাদের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের সূত্রে নানা বিষয়ের যেমন: পীর, মাজার, কবর উপাসনা করেন যা স্পষ্টই ঈমান ধ্বংস করে দেয়। অথচ সে বিষয়ে তারা ভ্রুক্ষেপহীন। বইটির ৩য় কারণ আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। “কাফিরকে কাফির না বলা” নামক অধ্যায়ে আমাদের অনেকের মাঝের লুকায়িত কিছু ভ্রান্তির খোলাসা করে দেওয়া হয়েছে। মৌলিকভাবে কাফির কিংবা মুসলিম নামধারী কাফিরকে কাফির না মানাটাও যে কুফরী সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোকপাত করা হয়েছে এই অধ্যায় জুড়ে। এছাড়া যারা নবীজির আদর্শকে সুন্দর বা পরিপূর্ণ না মান্য করে ভিন্ন আইডিওলজিতে বিশ্বাস করে তাদের কুফরিকে তুলে ধরা হয়েছে। আজকালকার যুবক সমাজের মাঝে এই বিষয়টা অহরহ। আমলের আধিক্য থাকা সত্ত্বেও শরীয়তের বিধানকে অপছন্দ করার কুফরি, দ্বীনের কোনো বিষয়ের উপহাস সংক্রান্ত নানা কুফরির উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে। বাকি অধ্যায় গুলোতেও ঈমান ধ্বংসের কারণগুলো বেশ চমৎকারভাবেই তুলে ধরা হয়েছে।
বইটির অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, চমৎকার উপস্থাপন, সাবলীলভাবে অনুবাদ সবটাই বইয়ের বিশেষত্বকে অধিকগুণে বৃদ্ধি করে। প্রয়োজনীয়তার বিচারেও বইটির গ্রহণযোগ্যতার জুড়ি নেই। দীর্ঘায়িত না করে বেশ সোজাসাপটা ভাবে বইটিকে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর সমর্পণের বেশ অনেকগুলো বই পড়ার সুবাদে তাদের কাজ সম্পর্কে বেশ পজিটিভ একটা ধারণা আমার আছে এবং এই বইতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় ছিলো।
ইসলামের বুলি আওড়িয়ে গেলেই কি ঈমানদার হওয়া যায়? মুসলিম পরিচয়ধারী আমরা আজ মানব-রচিত বিধানের গোলাম হয়ে যাচ্ছি। আমরা আল্লাহর আইনের পরিবর্তে তা গু তের আইনে চলতে ভালবাসি। আমরা প্রতিটি ধর্মকে সত্য স্বীকৃতি দিয়ে উদারতার পরিচয় দেই। আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে সেকুলারিজমকে প্রাধান্য দেই। আমরা প্রতিনিয়ত ইসলামের নানা বিধান নিয়ে উপহাস করি, লিবারেল মতবাদ, মডারেটিজমে বিশ্বাস করি। আমরা আল্লাহর বিধান মোতাবেক বিচার চাইনা, আমরা কুফরি করেও নিশ্চিন্ত মনে মুসলিম পরিচয়ে কাটিয়ে দিচ্ছি পুরো জীবন। দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়ি আজ নিত্যকার জীবনের চিত্র। আল্লাহর বিধান, নবীজির আদর্শকে ধূলিসাৎ করে আমরা জান্নাতের স্বপ্ন বুনছি? হায় আফসোস! যদি আমলের আধিক্য থাকার পরেও কেবল ঈমান ধ্বংস হওয়ার কারণে জান্নাত সরে যায় অনেক দূরে? সেই চিত্রটা না জানি কত দুঃখের! প্রতিনিয়ত জেনে কিংবা না জেনে করা এমন হাজারো ভ্রান্তির মাঝে আমরা বাস করে যাচ্ছি। সেই ভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে ঈমানকে পরিশুদ্ধ করার সামান্য চেষ্টা করতে এই বই আমাদের সবার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ঈমান সম্পর্কে জানাতো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব; অথচ দ্বীন থেকে আমরা কতই না দূরে!
বইটি পড়ার সময় প্রতিনিয়ত নিজের করা কিছু ভ্রান্তের নমুনা পাচ্ছিলাম। জীবনের অলি-গলিতে কতই না ভুল রয়ে গেছে। কিন্তু বড্ড দেরিতে জানা হলো এই ঈমান নিয়ে। আজকের প্রজন্মের মানুষ তো সাহিত্য, গল্প,উপন্যাস, মোটিভেশনাল স্পিচ পড়তে পড়তেই পার করে দেয় জীবনের অর্ধেক সময়। শেষ বয়সে এসে আমল বাড়ে হয়তো, কিন্তু ঈমানের বুঝ? সেটা সেই শিশু বয়সেই থেকে যায়। অথচ দ্বীনের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল “ঈমান”। বৃক্ষের শেকড়ের যত্ন না নিয়ে বৃক্ষের বৃদ্ধি কল্পনা করা আকাশ-কুসুম ভাবনা নয় কি? ঠিক তেমনি ঈমানের পরিচর্যা ছাড়া জান্নাতও বেশ কঠিন ব্যাপার।
শেষ করছি একটা হাদিস দিয়ে– যেখানে
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ” আমার উম্মাত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেন, “আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।”
বইয়ের নাম: ঈমান ধ্বংসের কারণ
ব্যাখ্যাকারক: শাইখ আবদুল আযীয তারীফি
অনুবাদকঃ নাজমুল হক সাকিব
সম্পাদক:আবদুল্লাহ আল মাসউদ
প্রকাশক : রোকন উদ্দিন
প্রকাশনা: সমর্পণ প্রকাশন
সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য : ১৯২ ৳
নাফিসা ইয়াসমিন –
প্রারম্ভিকা
—————-
একজন মুমিনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার অন্তরের ঈমান যা নাজাতের পাথেয়।
প্রতিনিয়ত মানুষ জেনে বুঝে অথবা অজান্তে যে ছোট-বড় অল্প বিস্তর কুফরির অনুসরণ করে ফেলে তার জন্য নানা কারণে অন্তরের কুঠুরি থেকে ঈমানের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যেতে পারে। বাতিলের খাতায় চলে যেতে পারে ঈমান আনয়নের পরেও।
উদাহরণ স্বরূপ আল্লাহর দ্বীনকে উপেক্ষা করার কারণে কোনো ব্যক্তি কাফির হয়ে যেতে পারে। তেমনই দ্বীনের কোন বিষয়কে নিয়ে যারা হাসি ঠাট্টা বিদ্রুপ করে তরাও কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
যার মধ্যে ইমান ভঙ্গের কারণগুলোর মধ্য থেকে কোনো একটি কারণও স্পষ্টভাবে পাওয়া যাবে, সে কাফের হয়ে যাবে।
এজন্যই মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো ইমানভঙ্গের কারণগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা এবং এগুলো থেকে সর্বদা বেচেঁ থাকা।
এ বিষয়ে সচেতন করতে ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইটি যা প্রকাশিত হয়েছে সুপরিচিত প্রকাশনা সংস্থা সমর্পণ প্রকাশন থেকে।
লেখক পরিচিতি
————————-
প্রসিদ্ধ মুসলিম দাঈ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব রহিমাহুল্লাহ কর্তৃক রচিত
‘নাওয়াকিদুল ইসলাম’ গ্রন্থের ব্যাখ্যা স্বরূপ বাংলা ভাষায় অনুদিত হয়েছে “ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইটি যা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সুপরিচিত প্রকাশনা সংস্থা সমর্পণ প্রকাশন থেকে।
বইটির ব্যাখ্যাকারক হলেন শাইখ আবদুল আযীয তারীফি। অনুবাদ করেছেন অনুবাদক নাজমুল হক সাকিব।
বইটির বিশেষত্ব
————————-
সূচিপত্রের আলোকে জানা যায় বইটির মূল আলোচ্য বিষয় ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ।
একজন মানুষ মুসলিম হওয়ার প্রথম শর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ’ এই বাক্যের সাক্ষ্য প্রদান না করে বা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস না আনে তাহলে তাকে মুসলিম হিসেবে গণ্য করা যাবেনা।
সিয়াম সালাত বা অযু ভঙ্গের যেমন নির্দিষ্ট কিছু শর্ত আছে তেমন কিছু শর্ত আছে ঈমান ভঙ্গের।কতটা ভয়াবহ তার পরিণতি যখন ছোট বড় নানান কুফরি কাজের মাধ্যমে ঈমান চলে যেতে পারে একজন বিশ্বাসী।
একজন বিশ্বাসী হারিয়ে ফেলতে পারে তার শ্রেষ্ঠ সম্পদ ঈমান যা তার নাজাতের পাথেয়।
এরকম ঈমান ভাঙ্গার দশটি কারণের ব্যাখ্যা, ও শর্তসমূহ
কুরআন-হাদিসের আলোকে বিশদে আলোচিত হয়েছে।
দ্বীনের ব্যাপারে ঠাট্টা বিদ্রুপ কিভাবে ঈমানকে বিনষ্ট করে এবং দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীনতা ও উপেক্ষা করার শাস্তি স্বরূপ সে কাফের হয়ে যেতে পারে এবং এর ভয়াবহতা কতটা সাংঘাতিক।
পাঠ্য অনুভূতি
———————
ঈমান ধ্বংসের কারণ সমূহ জেনে রাখার পর সচেতন হয়েছি এই বিষয়ে।এর পরিণাম কি ভয়াবহ তা উপলব্ধি করতে শেখায় অন্তরে অন্তরে।
লেখকের সুন্দর রচনাশৈলী এবং অথেন্টিক বাখ্যা যেমন নজর কেড়েছে তেমনি সহজ সাবলীল অনুবাদ বইটির মর্মার্থ রপ্ত করতে সাহায্য করে অনায়াসে।
কেন পড়বেন
———————
জন্মসূত্রে আমরা সবাই মুসলমান বলে মৌখিক দাবি জানায় কিন্তু কর্মসূত্রে কতজন ঈমানের দাবি পরিপূর্ণ করি? কতজন ঈমান রক্ষায় সচেতন!অথচ একজন মুমিনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ তার অন্তরের ঈমান যা নাজাতের পাথেয়।
প্রতিনিয়ত যে ছোটো- বড় নানান কারণে ঈমান নামক বিশ্বাসের মোহরটি আমাদের অন্তর থেকে থেকে উড়ে যেতে পারে, অর্থাৎ আমরা ঈমান আনয়নকারীর বিশ্বাসীদের দল থেকে অর্থাৎ ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যেতে পারি।
তাই, ফিতনাবহুল দুনিয়াই ইমানকে দৃঢ় রাখতে এবং নিজেদের ভুল ভ্রান্তি সম্পর্কে সজাগ থাকতে “ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইটি একান্ত জরুরী।
শেষ কথা
—————–
শুধুমাত্র বাহ্যিকভাবে নিজেকে মুসলিম দাবি
করার নাম ঈমান ও ইসলাম নয়। শুধু মাত্র মৌখিক দাবি ঈমানের সত্যতা পূরণ করেনা।যে আল্লাহর দ্বীনকে উপেক্ষা করে, আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী আমল করেনা, তাঁর আদেশ ও নিষেধের কোনো পরোয়া করেনা, সেই ব্যক্তির কর্মই সাক্ষ্য দেয় যে ইসলামকে তার অন্তরে প্রবেশ করেনি। তেমনি
কোনো ব্যক্তি যদি মৌখিকভাবে ঈমানের স্বীকৃতি না দিয়ে কর্মের মাধ্যমে
দিতে চায়, তবে তাকেও মুমিন বলা হবে না।জানতে হবে, ঈমান ও কুফরির পার্থক্য কি।
আশা করা যায়, এইসমস্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে সমর্পণ প্রকাশনির “ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইটি সহায়ক হবে সেই সাথে বইটির সাবলীল অনুবাদ পাঠককে মুগ্ধ করবে।
📚এক নজরে বই পরিচিতি
বই: ঈমান ধ্বংসের কারণ
লেখক: ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আবদিল ওয়াহ্হাব
ব্যাখ্যাকারক: শাইখ আবদুল আযীয আরীফি
অনুবাদক: নাজমুল হক সাকিব
প্রকাশন: সমর্পণ প্রকাশন
মূদ্রিত মূল্য: ১৯২ টাকা