- কুফরের একটি প্রকার হলো, রাসুলের উক্তি ও কর্ম স্বীকার করার পর সেগুলোর এমন ব্যাখ্যা করা, যা কুরআন-হাদিসের অকাট্য বর্ণনা ও উম্মাহর সর্বসম্মত ব্যাখ্যার বিপরীত। পরিভাষায় একে ‘যান্দাকা’ বলা হয়। এ প্রকারের কুফরি নামাজ-রোজা প্রভৃতি আমল সম্পাদনকারী ও তথাকথিত ধর্মীয় পণ্ডিতদের থেকে প্রকাশ পাওয়ার কারণে অধিকাংশ মানুষ তাদেরকে মুসলমান মনে করে। ফলে তারা মুসলমানদের আস্তিনের সাপ হয়ে তাঁদের ইমান-আকিদা ধ্বংস করার সুযোগ পায়। তাই এ বইয়ে ‘যান্দাকা’ কুফর হওয়া বিষয়ে ইমামগণের পর্যাপ্ত সাক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তবে তাদেরকে কাফের আখ্যাদানের ক্ষেত্রে দুটো প্রতিবন্ধকতা ছিল-
১. আলেমগণের সিদ্ধান্তমতে, কুরআন-হাদিসের মর্মের ব্যাখ্যাসাপেক্ষ প্রত্যাখ্যান দ্বারা কেউ কাফের হয় না।
২. আহলে কিবলাকে কাফের আখ্যা দেওয়া উম্মাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিষিদ্ধ।
তাই যুগের ইমাম আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরি রাহিমাহুল্লাহর ‘ইকফারুল মুলহিদিন’ গ্রন্থের আলোকে মুফতি মুহাম্মদ শফি রাহিমাহুল্লাহ এ বইয়ে প্রতিবন্ধকতা দুটোর সরল নিরসন অথচ দলিলসমৃদ্ধ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন।
‘পরিশিষ্ট’ পর্বে আধুনিক ইরতিদাদের বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। অধুনা কিছু কুফরি ষড়যন্ত্রের স্পষ্ট বিবরণ সম্বলিত আলোচনাও সন্নিবেশিত হয়েছে। তাই ইরতিদাদের দিকে গড্ডলিকাপ্রবাহের মতো ছুটে চলা উম্মাহকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনবার পর্যাপ্ত নির্দেশনা পাবেন পাঠক ইনশাআল্লাহ।
লেখক পরিচিতি: মুফতি মুহাম্মাদ শফি। জগদ্বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থ ‘তাফসিরে মাআরিফুল কুরআন’–এর রচয়িতা। জন্মেছেন ১৮৯৭ সালে ভারতের সাহারানপুর জেলার অন্তর্গত ঐতিহাসিক দেওবন্দ নামক গ্রামে। ইলম অর্জনের বরকতময় যাত্রায় তিনি শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছেন আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরি, শাব্বির আহমাদ উসমানি এবং মুফতিয়ে আজম আজিজুর রহমান (রাহিমাহুমুল্লাহ) প্রমুখের ন্যায় প্রাজ্ঞ ইলমি ব্যক্তিত্বের।
সাতচল্লিশের দেশভাগের পর তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে অব্যহতি নিয়ে স্বপরিবারে পাকিস্তানে হিজরত করেন। পাকিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা এবং কাদিয়ানি বিরোধী আন্দোলনে ছিলেন বরাবরই সরব। ১৯৫১ সালে তাঁর হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ববিখ্যাত ইলমি মারকাজ দারুল উলুম করাচি।
সুদীর্ঘ ইলমি জীবনে তিনি উম্মাহকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য মূল্যবান রচনা। যার মাঝে রয়েছে আহকামুল কুরআন, ইমদাদুল মুফতিয়্যিন এবং জাওয়াহিরুল ফিকহের ন্যায় অমূল্য সব ইলমি সংকলন। ১৯৭৬ সালে বিরল এই মনীষী ইহলোক ত্যাগ করেন।
Reviews
There are no reviews yet.