ফ্রম মাই সিস্টার্স লিপস্

মানুষের চিন্তার বিবর্তন সম্পর্কে জানা, শুনা, পড়া, ভাবা আমার খুব খুব পছন্দের একটা বিষয়। মানুষ তার যাপিত জীবনের বাইরে এসে তার জীবন, জীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছে, একে বোঝার চেষ্টা করছে, এটা আমার কাছে পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটা ব্যাপার বলে মনে হয়। চিন্তাহীন ছুটে চলার এই সময়ে এক ঝাঁক নারী, যারা ছুটতে ছুটতে হঠাৎ থমকে দাঁড়িয়েছে, চিন্তা করেছে, সত্যকে আপন করে নিয়েছে, তাদের নিয়েই এই বই। বেশ ভালো লেগেছে বইটা পড়ে। নারীদিবসে নারীর স্বাধীনতা নিয়ে অনেক লেখা চোখে পড়ে। একটু ভিন্ন লেন্সে স্বাধীনতাকে অনুভব করতে বইটা পড়তে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে।

“পশ্চিমা নারীদের ইসলাম গ্রহণের গল্পগুলো মজবুত, কারণ তারা অনেক মানুষের ধারণার বিপরীতে হাঁটে। পশ্চিমা জীবনধারা এবং বিশ্বাস ইসলাম বা অন্য কোনো বিশ্বাস থেকে বহু বহু দূরে। তারা অবাক হয় কী এমন জিনিস, যার জন্য এই পশ্চিমা নারীরা নিজেদের জীবনের স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে কিছু বাধ্যবাধকতা আর নিয়মের মধ্যে ঢুকে যায়। আমি বিশ্বাস করি এই গল্পগুলো আমাদেরই। এগুলো আমাদের ইতিহাসের অংশ; পশ্চিমে বাস করা একজন মুসলিম হিসেবে, নারী হিসেবে, মানুষ হিসেবে এই গল্পগুলো প্রত্যেকের।
…বৈচিত্র্যে ভরা নানান পরিবেশের, নানান অভিজ্ঞতার এই বোনদের গল্প দেখায়—ইসলাম যেকোনো জায়গায়, যেকোনো মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এই নারীদের কাউকেই নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলা যায় না। প্রত্যেকেরই নিজস্ব ব্যক্তিত্ব আছে, নিজস্ব কথা আছে। তাদের কেউ ছিল গোঁড়া নারীবাদী, আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী, কেউ ভেতরে ভেতরে বিদ্রোহী, কেউ গানপাগল, রকস্টার, কেউ ডিসকোকন্যা, কেউ নিমগ্ন হয়ে চার্চে যাওয়া মেয়ে, ডিজাইনার, খেলোয়াড়, মডেল, গায়িকা, চাকরিজীবী, মাস্টার্সে পড়ুয়া, প্রথাগত মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, নাস্তিক—সব রকমের পরিবেশ থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
এবং সবচেয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে, ইসলাম তাদের প্রত্যেকের কাছেই পৌঁছতে পেরেছে, তাদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পেরেছে, প্রত্যেকের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আলাদা করে কথা বলেছে; তারা যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিল—সে উত্তরগুলো তাদের দিয়েছে এবং আজীবনের জন্য জীবন বদলে দিয়েছে।” [পৃঃ ৫৯]