fbpx
ঈমানের দুর্বলতা (পেপারব্যাক)
ঈমানের দুর্বলতা (পেপারব্যাক)

ঈমানের দুর্বলতা (পেপারব্যাক)

নির্ধারিত মূল্যের বই কিনুন ১০% বিশেষ ডিসকাউন্টে। অফারটি সীমিত সময়ের জন্য। 


Author : শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মুনাজ্জিদ        
Translator : হাসান মাসরুর
Publisher : রুহামা পাবলিকেশন
Category : ঈমান আকিদা ও বিশ্বাস

72

You Save TK. 8 (10%)

ঈমানের দুর্বলতা (পেপারব্যাক)

Share This Book:

ক্যাশ অন ডেলিভারী

৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন

ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু

Author

Author

মুফতি তারেকুজ্জামান

মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ

হাসান মাসরুর

Reviews (3)

3 reviews for ঈমানের দুর্বলতা (পেপারব্যাক)

  1. ফাতিমা মৌ ফ্লাভিকা

    বইয়ের আলোচ্য বিষয় :
    ………………………………………………..
    ঈমান এমন এক জিনিস যার লেভেল কখনো বৃদ্ধি পায় আবার কখনো কখনো হৃাস পায়।মানুষ যখন পাপাচার আর হারাম জিনিসে জড়িয়ে পড়ে তখন তার ঈমানের লেভেল নিচু স্তরে গিয়ে পৌঁছে।
    ঈমানের দূর্বলতাবইটি সমসাময়িক যুগের মুসলিমদের ঈমান বিষয়ে যাবতীয় শিথিলতাকে কেন্দ্র করে রচিত। বইটির বিষয়বস্তুকে তিনটি অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটিতে দূর্বল ঈমানের বহিঃপ্রকাশ,
    দ্বিতায়টিতে এর কারণ এবং তৃতীয় অধ্যায়ে এর প্রতিকার বা চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

    ◑ঈমানের দূর্বলতার কারণ:
    ….…………………………………………..

    বর্তমান যুগ হলো ফিতনা ফ্যাসাদের যুগ।গাঢ় অন্ধকারের রেশ ধরে ফিতনা ঘনিয়ে আসছে।ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হবার কাল থেকে আমাদের বর্তমান যুগ পর্যন্ত আসতে অতিবাহিত হয়েছে অনেক সময়। সময়ের সাথে সবকিছুর মাঝে পরিবর্তন আসার পাশাপাশি পরিবর্তিত হয়েছে মানুষের চিন্তাধারা।এই পরিবর্তন মানুষের জীবনব্যবস্থার উন্নতি ঘটালেও ধর্মীয় বিশ্বাসে সৃষ্টি করছে শিথিলতার। যার ফলে মানুষ আল্লাহর ইবাদত করা থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে। যারাও ইবাদত করছে তারাও মনোযোগ আর একাগ্রতার সাথে করতে পারছে না।এর একমাত্র কারণ ঈমানের দূর্বলতা। যা ব্যাধির মত মানুষের অন্তরে কঠিনভাবে আসন গেড়ে বসছে।তাছাড়া যুগে মানুষদের অন্তরে ঈমানের স্তর নিচে নেমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো কুরআন হাদিসের শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাওয়া।ঈমানের দূবলতার পেছনের অন্যতম চিহ্নিত কারণগুলো——
    ছোট ছোট নেকীর কাজকে গুরুত্ব না দেয়া,কথা ও কাজে গড়মিল,নিজেকে প্রকাশ করতে ভালবাসা,বিপদাপদে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া,নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকা,ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন্ন করা, দুনিয়ায় প্রতি আকর্ষণ,কৃপণতা, ইবাদাতে মনোযোগ না দেওয়া ইত্যাদি।

    ◑ঈমানের চিকিৎসায় করণীয়:
    …………………………………………………….

    ঈমানের দূর্বলতা একধরনের ব্যাধির মতোই।তাই উত্তম হলো এর চিকিৎসা করা অর্থ্যাৎ এর পুনঃজাগরন।
    এ জন্য সবচেয়ে কার্যকরা কুরআনুল কারীম নিয়ে গবেষণা করা।কুরআনকে অন্তরে গভীরভাবে ধারণ করা। কুরআনের আয়াত তার অন্তরের সকল সংশয় দূর করে ঈমানকে মজবুত করে তুলবে। এছাড়াও সর্বদা আল্লাহর যিকির বা তাঁর স্বরণ করা, ইসলামী আলোচনা সভায় উপস্থিত হওয়া, বেশি বেশি নেক আমল করা, আমল কবুল হওয়ার ভরসা রাখা, বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা ইত্যাদি বিষয়ও ঈমানী দূর্বলতার মূলোৎপাটন করতে সক্ষম।ইমাম হাকিম তার মুস্তাদরাক গ্রন্থে এবং তাবারানী তার মু’জাম গ্রন্থে নবী কারীম (সাঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেন-
    “নিশ্চয়ই তোমাদের পেটের মাঝে ঈমান জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর নিকট দুআ কর; যেন তিনি তোমাদের অন্তঃকরণে ঈমানকে নতুন করে দেন।”
    অর্থাৎ অন্তরের মাঝে ঈমান জরাজীর্ণ হয়ে যায়। তখন আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনার দ্বারা সেই জরাজীর্ণ ঈমানকে জাগ্রত করা।

    ◑বইটি কেন সবার পড়া উচিত:
    …………………………………………..…………

    সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ ফিতনায় ভরপুর,দাম্ভিকতার সাথে মানুষ অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। পাপাচরে নিমজ্জিত এই সমাজে কখন কোন কারণে ঈমান দূর্বল হয়ে আছে তা আমাদের জানা নেই। ফলশ্রুতিতে ইবাদাতে স্বাদ পাওয়া যায় না, সালাতে খুজু-খুশু নেই।এমতাবস্থায় আমাদের উচিত দূবলতার কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং এর চিকিৎসা করা।বইটিতে ঈমানের দূর্বলতার কারনগুলাো খুব সুন্দরভাবে সাবলীল ভাষায় বর্ণনা করা আছে। এবং ঈমান উজ্জীবিত করনের দিকনির্দেশনাও দেওয়া আছে। তাই,প্রত্যেকের উচিত বইটি একটি রিমাইন্ডারমূলক গাইডলাইন হিসেবে পড়া।

    ◑বইটি ভালোলাগার কারণ:
    ….…………………………………………..
    আলহামদুলিল্লাহ। এটি একটি ঈমান জাগ্রত করার বই।পার্থিব জীবনের নানা ঘটনায় মাঝে মাঝে ঈমানের স্তর নিচে নেমে যায়। ঠিক সেসময়ই বইটি একটি রিমাইন্ডার হিসেবে কাজ করে। কোন কোন বিষয়গুলো ঈমানের দূর্বলতার বহিঃপ্রকাশ, কী কী কারণে ঈমান দূর্বল হয় এবং এর চিকিৎসায় করণীয়গুলো সহজেই অনুধাবন করতে পারি।শাইখের বইগুলো বরাবরই অসাধারণ। শুকরিয়া বইটি প্রকাশ সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

    ◑বইবৃত্তান্ত:
    ……………………………

    ◾বই: ঈমানের দূর্বলতা
    ◾লেখক: শাইখ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
    ◾মূল্য: ৮০ টাকা
    ◾রুহামা পাবলিকেশন

  2. কামরুননাহার মীম

    জান্নাতের দ্বারে প্রবেশের এক অন্যতম শর্ত হলো ‘ঈমান’। মুমিন ব্যতীত জান্নাতে কেউই যাবেনা। যে জান্নাত নিয়ে মুসলিমের এতো স্বপ্ন, সে জান্নাত অর্জনের জন্য ঈমান নামক পাথেয় সংগ্রহের তেমন চিন্তা আমাদের মাঝে খুব কমই দেখা যায় আজকাল। ঈমান সম্পর্কে আমাদের ধারণা আজ শূন্যের কোঠায়। অজান্তেই শিরকসহ নানা মারাত্মক গুনাহ নিয়েও নিজেকে ঈমানদার ভেবে কয়েকটা যুগ কাটিয়ে দেই। জীবনে অভাব থেকে যায় ঈমানের পরিচর্যার, ঈমান পরিশুদ্ধিকরণের। ওজু, রোজা কখন ভেঙে গেলো – এই নিয়ে অস্থির মানব ঈমান ধ্বংসের ব্যাপারে উদাসীন রয়ে যায়। যদি সহস্র আমল নিয়েও জান্নাতের দ্বারপ্রান্ত হতে ফিরে যেতে হয় জাহান্নামে, তবে তা কেমন হবে? ভাবুন, সেই দিনটির কথা যখন আমার ঈমানের ঘাটতির কারণে আমার স্থান হবে কঠিন শাস্তির স্থান জাহান্নামে।

    ঈমানের ব্যাপারে হতে হয় অনেক যত্নশীল। আমলের ব্যাপারে যত্নশীল আত্মাকে ঈমানের ব্যাপারে হতে হয় আরও অধিক সতর্ক। কারণ ইসলামের প্রথম বিষয় হলো ঈমান। আর যদি ঈমান-ই থাকে ভ্রান্ত, তবে মুসলিম হওয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়। যুগে যুগে ঈমান-আকীদা সংক্রান্ত বিষয়াবলীকে নানা মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নানাজনের নানা মত তো আর সঠিক নয়৷ ভ্রান্ত বিশ্বাস আমাদের ঈমানকে ধ্বংস করে দেয়। ঈমান ধ্বংসের এমন ১০টি কারণকে ব্যাখ্যাসংবলিত ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে “ঈমান ধ্বংসের কারণ” বইতে। বইটি ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব রাহিমাহুল্লাহ- এর রচিত “নাওয়াকিদুল ইসলাম” গ্রন্থের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা।

    বক্ষমান বইটিতে ঈমান বিধ্বংসী ১০টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। ঈমান ধ্বংসের ১০টি কারণকে ১০টি অধ্যায় জুড়ে চমৎকারভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এর প্রথম অধ্যায় জুড়ে প্রথম কারণ “আল্লাহর সাথে শিরক” করার কথা এসেছে। শিরকের মাঝের প্রকারভেদগুলো অত্যন্ত সাবলীলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বড় শিরক, ছোট শিরকের শ্রেণিতেও নানা বিষয় উঠে এসেছে বইটিতে। বইটির পরবর্তী অধ্যায়ে “আল্লাহ ও তাঁর মধ্যে কোনো কিছুর মাধ্যম সাব্যস্ত করা” শিরোনামে দ্বিতীয় কারণ উঠে এসেছে। আজকাল মুসলিম নামধারী অনেকেই আল্লাহর ও তাদের মাঝে সম্পর্ক স্থাপনের সূত্রে নানা বিষয়ের যেমন: পীর, মাজার, কবর উপাসনা করেন যা স্পষ্টই ঈমান ধ্বংস করে দেয়। অথচ সে বিষয়ে তারা ভ্রুক্ষেপহীন। বইটির ৩য় কারণ আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। “কাফিরকে কাফির না বলা” নামক অধ্যায়ে আমাদের অনেকের মাঝের লুকায়িত কিছু ভ্রান্তির খোলাসা করে দেওয়া হয়েছে। মৌলিকভাবে কাফির কিংবা মুসলিম নামধারী কাফিরকে কাফির না মানাটাও যে কুফরী সেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোকপাত করা হয়েছে এই অধ্যায় জুড়ে। এছাড়া যারা নবীজির আদর্শকে সুন্দর বা পরিপূর্ণ না মান্য করে ভিন্ন আইডিওলজিতে বিশ্বাস করে তাদের কুফরিকে তুলে ধরা হয়েছে। আজকালকার যুবক সমাজের মাঝে এই বিষয়টা অহরহ। আমলের আধিক্য থাকা সত্ত্বেও শরীয়তের বিধানকে অপছন্দ করার কুফরি, দ্বীনের কোনো বিষয়ের উপহাস সংক্রান্ত নানা কুফরির উল্লেখ করা হয়েছে বইটিতে। বাকি অধ্যায় গুলোতেও ঈমান ধ্বংসের কারণগুলো বেশ চমৎকারভাবেই তুলে ধরা হয়েছে।

    বইটির অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, চমৎকার উপস্থাপন, সাবলীলভাবে অনুবাদ সবটাই বইয়ের বিশেষত্বকে অধিকগুণে বৃদ্ধি করে। প্রয়োজনীয়তার বিচারেও বইটির গ্রহণযোগ্যতার জুড়ি নেই। দীর্ঘায়িত না করে বেশ সোজাসাপটা ভাবে বইটিকে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর সমর্পণের বেশ অনেকগুলো বই পড়ার সুবাদে তাদের কাজ সম্পর্কে বেশ পজিটিভ একটা ধারণা আমার আছে এবং এই বইতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় ছিলো।

    ইসলামের বুলি আওড়িয়ে গেলেই কি ঈমানদার হওয়া যায়? মুসলিম পরিচয়ধারী আমরা আজ মানব-রচিত বিধানের গোলাম হয়ে যাচ্ছি। আমরা আল্লাহর আইনের পরিবর্তে তা গু তের আইনে চলতে ভালবাসি। আমরা প্রতিটি ধর্মকে সত্য স্বীকৃতি দিয়ে উদারতার পরিচয় দেই। আমরা ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে সেকুলারিজমকে প্রাধান্য দেই। আমরা প্রতিনিয়ত ইসলামের নানা বিধান নিয়ে উপহাস করি, লিবারেল মতবাদ, মডারেটিজমে বিশ্বাস করি। আমরা আল্লাহর বিধান মোতাবেক বিচার চাইনা, আমরা কুফরি করেও নিশ্চিন্ত মনে মুসলিম পরিচয়ে কাটিয়ে দিচ্ছি পুরো জীবন। দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়ি আজ নিত্যকার জীবনের চিত্র। আল্লাহর বিধান, নবীজির আদর্শকে ধূলিসাৎ করে আমরা জান্নাতের স্বপ্ন বুনছি? হায় আফসোস! যদি আমলের আধিক্য থাকার পরেও কেবল ঈমান ধ্বংস হওয়ার কারণে জান্নাত সরে যায় অনেক দূরে? সেই চিত্রটা না জানি কত দুঃখের! প্রতিনিয়ত জেনে কিংবা না জেনে করা এমন হাজারো ভ্রান্তির মাঝে আমরা বাস করে যাচ্ছি। সেই ভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে ঈমানকে পরিশুদ্ধ করার সামান্য চেষ্টা করতে এই বই আমাদের সবার প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ঈমান সম্পর্কে জানাতো আমাদের ঈমানী দায়িত্ব; অথচ দ্বীন থেকে আমরা কতই না দূরে!

    বইটি পড়ার সময় প্রতিনিয়ত নিজের করা কিছু ভ্রান্তের নমুনা পাচ্ছিলাম। জীবনের অলি-গলিতে কতই না ভুল রয়ে গেছে। কিন্তু বড্ড দেরিতে জানা হলো এই ঈমান নিয়ে। আজকের প্রজন্মের মানুষ তো সাহিত্য, গল্প,উপন্যাস, মোটিভেশনাল স্পিচ পড়তে পড়তেই পার করে দেয় জীবনের অর্ধেক সময়। শেষ বয়সে এসে আমল বাড়ে হয়তো, কিন্তু ঈমানের বুঝ? সেটা সেই শিশু বয়সেই থেকে যায়। অথচ দ্বীনের অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল “ঈমান”। বৃক্ষের শেকড়ের যত্ন না নিয়ে বৃক্ষের বৃদ্ধি কল্পনা করা আকাশ-কুসুম ভাবনা নয় কি? ঠিক তেমনি ঈমানের পরিচর্যা ছাড়া জান্নাতও বেশ কঠিন ব্যাপার।

    শেষ করছি একটা হাদিস দিয়ে– যেখানে
    রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ” আমার উম্মাত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। শুধু একটি দল ছাড়া তাদের সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সে দল কোনটি? তিনি বললেন, “আমি ও আমার সাহাবীগণ যার উপর প্রতিষ্ঠিত।”

    বইয়ের নাম: ঈমান ধ্বংসের কারণ
    ব্যাখ্যাকারক: শাইখ আবদুল আযীয তারীফি
    অনুবাদকঃ নাজমুল হক সাকিব
    সম্পাদক:আবদুল্লাহ আল মাসউদ
    প্রকাশক : রোকন উদ্দিন
    প্রকাশনা: সমর্পণ প্রকাশন
    সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য : ১৯২ ৳

  3. কামরুননাহার মীম

    অশান্তি আর অশান্তি। ইবাদতের মাঝে নেই কোনো স্বাদ, হৃদয়ের মাঝে নেই তৃপ্তির রেশ। গুনাহের পরেও এই অন্তর অনুতপ্ত হয়না। কেন ইবাদতের পরিপূর্ণ স্বাদ পাই না আর? কেন অলসতা আমার ইবাদতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, কেন পাপাচারে নিমজ্জিত অন্তর রব্বের দ্বারে আর কাঁদে না! তবে কি আমাদের ঈমান দূর্বল হয়ে যাচ্ছে? যদি ঈমানী দূর্বলতাই আমাদের অসুখ হয়, তবে এর ঔষুধ কোথা পাই?
    প্রাত্যহিক জীবনের গতিপথে প্রায়ই অন্তর পরিবর্তন হয়৷ ইবাদতের একাগ্রতা ধরে রাখার কঠিন লড়াইয়ে হেরে যাই বারংবার। ঈমানের দূর্বলতা রোগ টা বেশ ভালো করে চেপে ধরেছে আমাদের। সমাধানের খোঁজে হাতে নিলাম শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জিদের “ঈমানের দূর্বলতা” বইটি।

    বক্ষমান বইটি মোট তিনটি অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে দূর্বল ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। কিভাবে বুঝবো আমাদের ঈমানে চির ধরেছে? মোট ২২টি পয়েন্টে লেখক এই বহিঃপ্রকাশকে সাজিয়েছেন চমৎকারভাবে। অন্তরের কাঠিন্যতার অনুভব, পাপাচারে নিমজ্জিত হওয়া, কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া, আল্লাহ তা’আলার স্মরণ থেকে গাফেল থাকা ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে চমৎকার কিছু আলোচনায় বাস্তবতার স্বরূপ ফুটিয়ে তুলেছেন। পর্যায়ক্রমে বইটির দ্বিতীয় অধ্যায় জুড়ে ছিল ঈমানের দূর্বলতার কারণ সংশ্লিষ্ট সংক্ষিপ্ত আলোচনা। ঈমানী পরিবেশ থেকে দূরে থাকা, শরীয়তের জ্ঞান ও ঈমানী বইপত্র থেকে দূরে থাকা, গুনাহে লিপ্ত থাকা সহ নানা কারণ উন্মোচিত হয়েছে এই অধ্যায় জুড়ে। সবশেষে এর তৃতীয় অধ্যায় জুড়ে ছিল উক্ত রোগের নিরাময় সংশ্লিষ্ট আলোচনা। দূর্বল ঈমানের চিকিৎসার আলোচনা করতে গিয়ে কুরআন মাজীদ নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করা, আত্মসমালোচনা, শরীয়তের জ্ঞান অর্জনসহ নানাবিধ চমৎকার সমাধান দেওয়ার মাধ্যমে বইটির ইতি ঘটিয়েছেন লেখক।

    বইটি হাতে নিতে নিতে ভেবেছিলাম ৭৮ পৃষ্ঠার ছোট্ট এই বইয়ে কী আর আমূল পরিবর্তনকারী কথা থাকবে! আমার ধারণা পালটে দিয়ে লেখক দেখালেন তার অসাধারণ লেখনীর ঝলক। বইটির মাঝে ঈমানের দূর্বলতার বিষয়ে পড়তে গিয়ে মাঝেমধ্যে অবাক হচ্ছিলাম। লেখক যেন আমাকেই উদ্দেশ্য করে এই বই লিখেছেন! নিজেকে উদ্দেশ্য করেই যদি বলতে হয় তবে বলব – অন্তরের প্রশান্তি কতটুকু বজায় রাখতে পারব তা আমি জানিনা। কিন্তু দূর্বলতাকে ঝেটিয়ে বিদায় করতে বইটির সমাধান কার্যকর হবে যদি ইন শা আল্লাহ আমি তা কাজে লাগাতে পারি। এই বই একাগ্র চিত্তে পড়তে গেলে টনক নড়ে, অনুতপ্ত হয় হৃদয়। কিছু প্রশ্ন অন্তরে বোঝাই করে বহুপথ হেঁটেছি – কিন্তু এই বই সেই উত্তরগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। “সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দিব কোথা?” সমস্যা আসলে কোথায় তা চিহ্নিত করতেই অপারগ ছিলাম, সমাধান খুঁজে পাওয়ার প্রচেষ্টা তো বহুদূরের ব্যাপার। জীবনে ঈমানের পরিচর্যা বড্ড প্রয়োজন।

    বইটির মাঝে নেই কোনো অতিরঞ্জন। অল্প কথায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে পয়েন্ট আকারে বেশ চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। অনুবাদের সাবলীলতা, বইয়ের সময়োপযোগীতা, অভ্যন্তরীণ কন্টেন্ট এগুলো সবটাই বইটির বিশেষত্ব অধিক বৃদ্ধি করে দেয়। আর শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদকে পাঠকমহলে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ও কিছু নেই। তিনি ইতোমধ্যে উম্মাহর সেবায় বহু বই লিখেছেন যা অনুবাদিত হয়েছে নানা প্রকাশনীর মেহনতের মাধ্যমে। চমৎকার অন্যান্য বইগুলোর মতই এই বইটি বেশ অসাধারণ।

    আমার মনে হয়, অন্তর কঠিন হয়ে যাওয়া, ইবাদতের মাঝে গাফেলতি আসা, গুনাহের পরেও অন্তরের অনুতপ্ত না হওয়া ইত্যাদি রোগ আমাদের অনেকেরই হয়। তাই ছোট্ট এই বইটি সবার জন্য সহায়ক হতে পারে। এই বইয়ের অন্তর্নিহিত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে পাঠক ঈমানের দূর্বলতা দূর করার দৃঢ় প্রচেষ্টা করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

    এক নজরে বই সম্পর্কে-
    বই: ঈমানের দূর্বলতা
    লেখক: শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ।
    অনুবাদক: হাসান মাসরুর।
    সম্পাদক: মুফতি তারেকুজ্জামান।
    প্রকাশনী: রুহামা পাবলিকেশন।
    মুদ্রিত মূল্য: ১০৭৳

Add a review

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping cart
Sign in

No account yet?

ধন্যবাদ, আপনার প্রি-অর্ডারটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আপনার যে কোন প্রশ্ন অথবা অর্ডারে কোন পরিবর্তনের জন্য ০১৮৪৪২১৮৯৪৪ নাম্বারে কল করুন ।