Copyright © 2024 Seanpublication.com
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড (হার্ডকভার)
- লেখক : ডা. শামসুল আরেফীন
- পাবলিকেশন : মাকতাবাতুল আযহার
- বিষয় : ইসলামি আদর্শ ও ভিন্ন মতবাদ, বিশ্বাস ও ধর্মতত্ত্ব, সকল প্রকাশক
Author : ডা. শামসুল আরেফীন
Publisher : মাকতাবাতুল আযহার
Category : ইসলামি আদর্শ ও ভিন্ন মতবাদ
৳360 ৳266
You Save TK. 94 (26%)
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড (হার্ডকভার)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (3)
3 reviews for ডাবল স্ট্যান্ডার্ড (হার্ডকভার)
Add a review Cancel reply
আব্দুর রহমান –
আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম ইসলাম। ইসলাম কেবলমাত্র একটি ধর্মই নয় বরং এটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। এখানে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে করণীয়- বর্জনীয় সব কিছু আলোচনা করা হয়েছে। ইসলামের এমন কোন বিধান নেই যা মানব সভ্যতার জন্য অকল্যাণকর। ইসলামী বিধান পালনে করলে নেই কোন ক্ষতিকর সাইড ইফেক্ট।
এত কিছুর পরেও ইসলাম বিরোধী অপশক্তি তথা নাস্তিক ও সেক্যুলার সমাজ ইসলাম কে নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে কুরআন ও হাদীসে দেয়া ইসলামের বিধানগুলো নিয়ে মানুষের মাঝে সংশয়ের সৃষ্টি করছে। সাধারণ মানুষ তাদের ধোকায় পতিত হচ্ছে । কেউবা এসবের উত্তর খুজতে গিয়ে নাস্তিকদের পাতানো ফাদে পা দিচ্ছে। বর্তমান মুসলিম সমাজও অবাধ স্বাধীনতা ও তথ্য প্রবাহের এই যুগে ইসলামের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝতে ব্যর্থ।
কিন্তু ইসলাম কে বুঝতে হলে নাস্তিকদের যুক্তি দিয়ে বুঝানোর দরকার নেই। কেননা ইসলাম কোন যুক্তির ধর্ম না। বরং যুক্তি যেখানে শেষ সেখান থেকেই ইসলামের শুরু। ইসলাম থেকে খুজে নিতে হয় কল্যান। যে ইসলাম দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যান লাভের একমাত্র মাধ্যম।
ইসলামের বিধান বুঝার ক্ষেত্রে যুক্তি ও বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের কার্যকারিতা আছে । কিন্তু সেটা একমাত্র মানদন্ড নয়। কেননা যুক্তি ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। সেই সাথে এগুলো সর্বদা পরিবতনশীল । পক্ষান্তরে ইসলাম শাশ্বত জীবনব্যাবস্থা। ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, যুদ্ধনীতি সহ সর্বক্ষেত্রে ইসলাম স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
এই নীতিমালা সামনে রেখেই ডা: শামসুল আরেফিন রচনা করেছেন একটি অনন্য বই ” ডাবল স্টান্ডার্ড “। বইটি নাস্তিকদের যুক্তি ও অপব্যাখায়া গুলোর প্রতিবাদ করেই লেখা। আস্তিক নাস্তিক বিভিন্ন চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে বইটিতে মোট এগারোটি গল্প সন্নিবেশিত আছে । মন কে নাস্তিকদের বোনা অবিশ্বাসের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে একই সাথে বিশ্বাসের ভিত্তি মজবুত করার জন্য লেখক এখানে শব্দের পর শব্দের পশরা সাজিয়েছেন। কখনো বিজ্ঞান, কখনো ধর্ম, আবার কখনো যুক্তি, দর্শন, ও ইতিহাসের সাহায্যে তথ্যগুলোকে সহজ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। বইটির প্রতিটি গল্পই নাস্তিকদের বিভিন্ন সন্দেহ ও সংশয়ের জবাবে এক একটি হাতিয়ার স্বরুপ।
এক্ষনে আমি প্রতিটি গল্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারনা দিতে চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ
.
(১) না দেখে বিশ্বাস: মাননজন্মের স্বার্থকতাঃ-
এটি বইয়ের প্রথম গল্প। আল্লাহ যে সত্যি আছেন তার প্রমান কি সেই নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে এই গল্পে। ইসলামী আকিদারা অন্যতম দিক হলো আল্লাহকে না দেখেই তার অস্তিত্বে বিশ্বাস করা। লেখক এখানে আল্লাহ আছেন কি নেই এ এটা প্রমান করতে যুক্তি অথবা বিজ্ঞানের আশ্রয় নেননি। বরং মানুষ আল্লাহ কে চিনবে তার সৃষ্টি দেখে। আকাশে সুশৃঙ্খলভাবে ঘূর্ণায়মান গ্রহ, নক্ষত্রের গতিবিধি দেখে। কিভাবে আল্লাহ পৃথিবীতে বিভিন্ন উপাদানের সুষম বন্টনের মাধ্যমে মানুষের বসবাসের উপযুক্ত করেছেন তা দেখে। যা দেখে একজন বোধসম্পন্ন মানুষ সহজেই বুঝতে পারবে নিশ্চয়ই এত কিছুর পেছনে একজন স্রষ্টা আছেন।
.
(২) দাসপ্রথা: ঐশী বিধানের সৌন্দর্যঃ-
নাস্তিকরা ইসলাম নিয়ে যেসব ধরাবাধা প্রশ্ন করে তার মধ্যে অন্যতম হলো দাস প্রথা। এখানে গল্পের ছলে বুঝিয়েছেন নাস্তিক ও সেক্যুলার সমাজের দাসপ্রথা আর ইসলামে দাসপ্রথার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ইসলামে দাসপ্রথা একেবারে উচ্ছেদ করে নি। বরং ইসলামে দাসপ্রথার অনেক গ্রহনযোগ্য ও কল্যানকর দিক রয়েছে। ইসলামে দাসপ্রথার মাঝে কি কল্যান ও এর গ্রহনযোগ্যতাই বা কি ?? “জানতে হলে পড়ুন ডাবল স্টান্ডার্ড “।
.
(৩) দক্ষিণহস্ত মালিকানা: একটি নারীবাদী বিধানঃ-
নাস্তিকদের একটি অন্যতম দাবী যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের নারীদের কেন দাসী করে রাখা হয় এই নিয়ে। এই গল্পের মাধ্যমে জানা যাবে ইসলাম যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাপ্ত নারীদের শুধুমাত্র মালিকানাই গ্রহন করে না। বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক, সহ সকল প্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
.
(৪) শষ্যক্ষেত্র: সম্পত্তি না সম্পদঃ-
কুরআন কারীমে নারীদেরকে শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কেন নারীদের শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা হলো এ নিয়ে নারীবাদীদের অভিযোগের অন্ত নেই। এতে নাকি নারীদেরকে ছোট করা হয়েছে। এই প্রশ্নের জবাব প্রদানের নিমিত্তেই গল্পটি লেখা। কিন্তু নারীবাদীদের বুঝা উচিৎ শষ্যক্ষেত্রে যেমন আইল টেনে, যথাযথ ভাবে চাষ করে, সেচ দিয়ে পরম যত্নের সাথে ফসল ফলানো হয়। তেমনি ভাবে নারীদেরকেও পরম যত্ন ও আদরের সহিত আগলে রাখতে হয়।
ক্ষেতের চাষীর জন্য যেমন তার ক্ষেতই বেচে থাকার একমাত্র সম্বল স্ত্রীও ঠিক তেমনি তার স্বামীর জন্য।
.
(৫) জিজিয়া: অমুসলিম নাগরিকের দায়মুক্তিঃ-
এই গল্পের প্লট এগিয়েছে জিজিয়া প্রদানের বিষয়টি কেন্দ্র করে । জিজিয়া হলো মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসের নিমিত্তে অমুসলিমদের থেকে প্রাপ্ত কর। যাকে বর্তমান নাস্তিক সমাজ অমানবিক বলে অভিহিত করে থাকে।
বস্তুত অমুসলিমদের থেকে জিজিয়া আদায় করা হয়। কিন্তু এর বিনিময়ে তারা সামরিক সুবিধা, নিরাপত্তা সুবিধা সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। অতএব জিজিয়া কর সম্পূর্ণ যৌক্তিক একটি করব্যবস্থা।
.
(৬) শ্রেণি বৈষম্যহীন সমাজ: ওদের স্বপ্ন, আমাদের অর্জনঃ-
এখানে গল্পের চরিত্র নাহিদ, স্বপন, ও রাশেদ এর আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে কমিউনিজম, সাম্রাজ্যবাদ, ও সমাজতন্ত্র সহ বিভিন্ন মানব রচিত মতবাদের ভ্রান্তিকর দিক। যা কখনোই মানবতার জন্য কল্যান বয়ে আনে না। এর বিপরীতে অবস্থান ইসলামী অর্থনীতির। যেই অর্থনীতি শ্রেণিবৈষম্যহীন ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে অত্যন্ত কার্যকর। এই গল্প ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইসলামী সমাজব্যবস্থার কল্যাণময় সব দিক। গল্পটি পড়ে পাঠক বুঝবেন বর্তমান অতীতের ন্যায় বর্তমানেও ইসলামী ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকর।
.
(৭) আরব সংস্কৃতি মানবো কেন?
যেসব নাস্তিকরা বলে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি থাকতে আরবদের দেয়া সংস্কৃতি অনুযায়ী চলতে হবে কেন তাদেরকে মোক্ষম জবাব দেয়া হয়েছে এই গল্পের মাধ্যমে। বস্তুত মেসোপটেমিয়া, ইজিপশিয়ান সহ আরো যত সংস্কৃতি আছে সব মানুষের তৈরী সংস্কৃতি ও আলাদা একটা জাতীয়তাবাদ। পক্ষান্তরে ইসলামী সংস্কৃতি আল্লাহ প্রদত্ত। লেখক এখানে খুব জোরালো ভাবে প্রমান ক্রেছেন যে ইসলাম নিজেই একটা সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতি আরব অনারব সহ সকল মুসলিম সমাজেই বিরাজমান।
বস্তুত দেশীয় সংস্কৃতি মেনে চলতে বাধা নেই। কিন্তু ইসলামী সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক হলে সেখানে ইসলামী সংস্কৃতিই প্রাধান্য পাবে।
.
(৮) সমাধান কি মানবধর্মেই?
এখানে গল্পে ফুটে উঠেছে ইসলাম থেকে মানুষকে বের করার জন্য একটি অন্যতম ফাদ হলো মানবতা। বস্তুত মানবতার কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নাই। নির্দিষ্ট মাপকাঠি অনুযায়ী চলে না। প্রত্যেক সমাজে, প্রত্যেক প্রজন্মে মানবতা সদা পরিবর্তনশীল একটি মতবাদ। সুতরাং মানুষকে নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে হলে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার কোন বিকল্প নাই।
এখানে আরেকটি বিষয় জোরালো ভাবে দেখানো হয়েছে যে পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত যুদ্ধ বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছে তার মধ্য মাত্র ৭% যুদ্ধ হয়েছে ধ্ররমের কারনে। বাকি সব যুদ্ধ মানবধর্মের কারণেই হয়েছে।
.
(৯) বনু কুরাইজা হত্যাকান্ড ও বাংলাদেশ দন্ডবিধিঃ-
বনু কুরাইজার মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে সমালোচনার জবাব দেয়া হয়েছে এই গল্পে। বনু কুরাইজা গোত্রের মৃত্যদন্ড প্রদানের যুক্তি উপস্থাপন করে নাস্তিকরা দাবী করে ইসলাম আসলে বর্বর ধর্ম।
এখানে লেখক খুব চমৎকার ভাবে দেখিয়েছেন তাদেরকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছিল তা তাদের প্রাপই ছিল। এবং তারা নিজেরাই এই শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছিল। সেই সাথে ইহুদীদের ধর্মগ্রন্থ ও বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে তুলনা করে দেখিয়েছেন এই শাস্তি দিতে গিয়ে ইসলামই বরং উদারতার পরিচয় দিয়েছে।
.
(১০) পরিপূর্ণ দাড়ি: জঙ্গল নয়, ছায়াবিথীঃ-
এই গল্পটি এমন এক শ্রেণির মুসিমদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে যারা মনে করে দাড়ি রাখা জরুরি নয় বিরং না রাখলেও চলে। এটা এত প্রয়োজনীয় কিছু নয়। দাড়ি রাখলে জঙ্গি জঙ্গি মনে হয়।
এখানে লেখক বভিন্ন যুক্তি, প্রমান, ও কুরআন হাদীস থেকে দলীল প্রমানের মধ্যে দিয়ে দেখিয়াছেন যে দাড়ি রাখা মোটেও কোন অপ্রয়োজনীয় কিছু নয়। বরং এটি কেবল সুন্নাত নয়, বরং ওয়াজিব।
.
(১১) বিজ্ঞান কল্পকাহিনী: শাস্বত একত্বঃ-
এটি একটি ইসলামী সায়েন্স ফিকশন। সচরাচর এ ধরনের সায়েন্স ফিকশন চোখে পড়ে না। পৃথিবীতেই আল্লাহর অস্তিত্বের অনেক অনেক নিদর্শন রয়েছে। অতীতের মানবজাতি গুলোর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে তা সহজেই অনুমেয়। এখানে এই বিষয়টি সুস্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।
.
***ব্যক্তিগত অনুভূতি:-***
বইটির কভার, প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ও ভিতরের পাতা মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর। অনূভুতি যদি বলতেই হয় তাহলে বলবো বইটি এককথায় অসাধারন। বিভিন্ন দলিল প্রমানাদি ও তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিটি গল্পেই রয়েছে শিক্ষনীয় মেসেজ। সহজ, সাবলীল ও বোধগম্য ভাষায় রচিত। বাস্তবতা ও সুন্দর উপস্থাপনার মিশেলে বইটিকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। বইটিতে নাস্তিকরা যেমন পাবে তাদের উপস্থাপিত প্রশ্নগুলোর উপযুক্ত জবাব। তেমনি আল্লাহতে বিশ্বাসী মুসলিমদেরও বিশ্বাসের ভিত্তি আরো মজবুত হবে। বইটিতে সকলের জন্যই রয়েছে চিন্তার খোরাক।
বইতে ভালো লাগার আরেকটি দিক হলো এখানে নির্দিষ্ট কোন চরিত্র কে ইসলামি ভাবধারা অনুযায়ী উপস্থাপন করা হয়নি। বরং কখনো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক আবার কখনো ছাত্র প্রভৃতি সবাই ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে। আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি একদিন সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে ইসলামের সুমহান আলো ছড়িয়ে পড়বে। মুসলিমরা সবখানে তাদের বিরুদ্ধে উপস্থাপিত প্রশ্নগুলোর যুক্তি, বিজ্ঞান কুরআন হাদীস থেকে রেফারেন্স সমৃদ্ধ উত্তর প্রদানের মাধ্যমে সরিয়ে দিবে অবিশ্বাসের জঞ্জাল সেই সাথে ফুটিয়ে তুলবে ইসলামের সৌন্দর্য।
.
***প্রিয় উক্তিঃ-***
(1) সময় এসেছে পাল্টা ধাওয়া ও দুআর। তাই নাস্তিকের জন্য দুআ, নাস্তিকতার জন্য ধাওয়া।
(2) জমিটুকু চাষীর সম্বল। ওটাই তার দুনিয়া। পরম নির্ভরতা ও আবেগের জায়গা। তার কাছে ঐ জমিটুকুই সবকিছু।
(৩) নাস্তিকরা হলো শিশুর মত। অবুঝ, অপরিণত। একই প্রশ্ন বারবার করে।
.
***সমালোচনাঃ-***
একটি বই প্রকাশের পিছনে লেখক, সম্পাদক ও প্রকাশকের অসংখ্য রাত জাগার ইতিহাস থাকে, বইটিকে নির্ভুল করার জন্য। বইটিকে পঠনোপযোগী করতে প্রকাশনী যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। আল্লাহ তাদের খেদমত কবুল করুক। তারপরও কিছু ভুলভ্রান্তি থেকে যায়। যা অনিচ্ছাগত। আমি সেগুলোই তুলে ধরব এই অংশে–
(1) বইটিতে অনেকগুলো বানান ভুল লক্ষ্য করেছি। কোন কোন জায়গায় দুটি শব্দ একখানে হয়ে গেছে। হয়তোবা এটা প্রথম সংস্করণ হওয়ার কারনেই হয়েছে।
(2) সপ্তম অধ্যায়টির নাম ” আরব সংস্কৃতি মানবো কেন ” না হয়ে ইসলামী সংস্কৃতি মানবো কেন হলে ভালো হতো।
.
***শেষ কথা:-***
পরিশেষে বলতে হয় বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী এত সুন্দর একটি বই লেখার আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বইয়ের লেখক, প্রকাশক, পাঠক সহ সবাইকে কবুল করুন। দোয়া করি আল্লাহ লেখকের জ্ঞানের পরিধি বাড়িয়ে নেক হায়াত দান করেন এবং দ্বীনের পথে তার এই পরিশ্রম কবুল করেন । আমিন
সিরাজাম বিনতে কামাল –
কিছুকিছু বই কলেবরে বড় হলেও কঠিন কঠিন কথায় ঠাসা হলেও বইগুলো প্রিয় বইয়ের তালিকায় স্থান পায়। বই পড়ার পর অজান্তেই মন বলে উঠে, বাহ! বেশ ভালো একটা বই পড়লাম। ঠিক এমনই একটি বই ❝ডাবল স্ট্যান্ডার্ড❞।
বইটি লিখেছেন ডা. শামসুল আরেফীন। প্রকাশনায় মাকতাবাতুল আযহার। বই সংশ্লিষ্ট সকলকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিক। আমিন!
🔸দেখে নেয়া যাক বই বৃত্তান্ত:
♦ইসলামের প্রতিটি বিধান কল্যাণময়। কখনো কোন বিশেষ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কল্যাণময়। আবার কখনো কোন বিশেষ বিষয়ে কল্যাণ আপাতভাবে ধীরগতির হলেও সামষ্টিকভাবে কল্যাণ স্পষ্ট।
আমরা মুসলিম সন্তান হলেও আমাদের ঈমান বড় দুর্বল আর অপক্ক। এজন্যই অবাধ তথ্যপ্রবাহ আর বাকস্বাধীনতার নষ্টামীর এই যুগে আমরা মুসলমানরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে প্রশ্ন তুলি নিজেদের ধর্ম নিয়ে। সর্বোপরি সামগ্রিকতা বিচার করলে দেখা যায় ইসলামের চেয়ে সুন্দর ও কল্যাণময় বিধান আর হতেই পারেনা। ইসলামের প্রতিটি বিষয় খুবই সুন্দর। কারো কাছে সুন্দর লাগলেও সুন্দর, না লাগলেও সুন্দর।
যারা ইসলামকে পছন্দ করেনা তারা মূলত যুক্তির পূজা করতে গিয়ে ইসলামের সৌন্দর্য অবলোকন থেকে দূরে সরে যায়। আর যদি তারা হয় মুসলামানেরই সন্তান তাহলে তারা নিজের প্রবৃত্তি বা নফসকে খুশি করতে গিয়ে বুঝেও যেনো না বুঝার ভান করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে যুবসমাজ ইসলামকে তার সঠিকরূপে চিনতে ব্যর্থ হচ্ছে। ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে তারা বেড়ে ওঠছে। ইসলাম কোন যুক্তিনির্ভর ধর্ম না। বরং যুক্তির সমাপ্তি যেখানে, সেখান থেকে ইসলাম শুরু। শরীয়তের কোন বিষয়ে যুক্তি খোঁজার সুযোগ নেই।
▪️বইটি কাদের জন্য: নাস্তিক,অবিশ্বাসী, সংশয়বাদী, নতুন দ্বীনে ফেরা,অমুসলিম, আলিম, প্র্যাকটিসিং মুসলিম বা আপনি যদি হন মানুষ সর্বোপরি সবার জন্য এই বই। একেকজনের ঈমানের লেভেল অনুযায়ী একেকজনের জন্য একেকরকম শিক্ষা হবে এই বই। ইন শা আল্লাহ্!
♦বইয়ে ডা. শামসুল আরেফীন নাস্তিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ১১টি গল্পের মাধ্যমে এবং রেফারেন্সসহ সুন্দরভাবে সবকিছু বিশ্লেষণ করেছেন। আর তাই পাঠক মাত্রই বইটি সাদরে গ্রহণ করবে। তবে আস্তিক পাঠকরা সাদরে গ্রহণ করলেও নাস্তিকরা যেনো নাছোড়বান্দা। অবশেষে তিনি নাস্তিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তারা বাচ্চাদের মতো। বাচ্চারা এক প্রশ্ন বারবার করে, তবুও তৃপ্তি পায়না, উত্তর খুঁজে পায়না। তারাও তেমনি।
আর দশটা ধর্মের মত ইসলাম শুধু একটা ধর্ম নয়। ইসলাম একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। ইসলাম দেখার জিনিস, দেখানোর জিনিস। যা দেখে অমুসলিমরা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হবে। অপ্রিয় সত্য আমরা মুসলিমরাই ইসলাম বুঝি না ফলো করি না। মুসলিম নাম ছাড়া ইসলামের আর কিছুই আমাদের মধ্যে নেই।
তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্ত করতে, কৌতূহলে, উদ্ধত সাহসে, এতিম উম্মতের ব্যথায় বা সত্ত্বার তৃষ্ণায় বইটি আকণ্ঠ পান করুন।
Umme Suraiya –
ডাবল স্ট্যান্ডার্ড
ড.শামসুল আরেফীন
••••••••••••••••••••••••••••••
“ডাবল স্ট্যান্ডার্ড” — বর্তমান জেনারেশনে বহুল চর্চিত একটি শব্দ।ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হলো এমন কোন বিষয় যেখানে যেকোন একটি মতকে কেন্দ্র করে মানুষ নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ও বিচার বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে সেই মতকে ভিন্ন ভাবে ব্যাক্ত করে।অর্থাৎ,একটি বিষয়কে আপনি যেভাবে ভাবছেন অন্যজন সেই একই বিষয়টিতে দ্বিমত পোষণ করবে।ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি মূলত এমন কিছু প্যারাডক্সিক্যাল বিষয় নিয়েই, যেখানে ইসলামেরর যুক্তিপূর্ণ যুক্তি দিয়ে সেকুলারিজমের অযৌক্তিক দর্পনকে চূর্ণ করা হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ ।
গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা সমূহ :
————————————
ইসলামের কোন বিষয়ই ফেলনা নয়।ইসলামের যেসকল সূক্ষ্ম বিষয়ে আস্তিক, নাস্তিক, সংশয়বাদী অথবা সেকুলারিজমদের মনে প্রশ্ন/সন্দেহের দানা বাঁধে সে সকল বিষয়কেই লেখক আল-কুরআন, হাদিস,বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যানের আলোকে বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে গল্প আকারে ফুটিয়ে তুলে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সে সকল বিষয়ের সুন্দর সমাধান দেখিয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো —
১.ইসলামে দাস প্রথা
২.দক্ষিণ হস্ত মালিকানা
৩.জিযিয়া
৪.পরিপূর্ণ দাঁড়ি
৫.শ্রেণী বৈষম্যহীন সমাজ
ব্যক্তিগত মতামত :
——————————
আমার সবচেয়ে প্রিয় লেখকদের তালিকায় প্রথমে যার নাম আসে তিনি ড.শামসুল আরেফীন।ডাবল স্ট্যান্ডার্ড তার প্রথম বই হলেও তার লেখায় তা বোঝার কোন উপায় নেই। তার বই গুলো পড়লেই মনে হয় তিনি একজন জাত লেখক। তার লেখা এতো বেশি পছন্দ হবার প্রথম কারণ তিনি শুধু কোন কমপ্লেক্স বিষয়কে সহজ করে বুঝিয়েই দেন না বরং কুরআন, হাদিস, বিজ্ঞান, পরিসংখ্যানের আলোকে বিষয়টিকে যুক্তিপূর্ণ ভাবে প্রমাণ করেন।ডাবল স্ট্যান্ডার্ডের বেলায়ও তার কমতি নেই। কুরআন, হাদিস, বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যানের মিশেলে এ যেন একটুকরো রত্ম ভান্ডার।
আপনি যদি ভাবুক প্রকৃতির হোন অথবা আপনি যদি যেকোনো কিছুকে বিশ্লেষণ করতে পছন্দ করেন তবে এই বইটি হতে পারে আপনার জন্য একটি রত্ম।আলহামদুলিল্লাহ বইটি অসম্ভব ভালো লেগেছে। লেখকের জন্য অনেক অনেক দোয়া ও শুভকামনা…
কেন পড়বেন :
———————-
১.যদি প্র্যাক্টিসিং মুসলিম হন তবে তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্ত করুন।
২.যদি নন প্র্যাক্টিসিং হন তবে কি পায়ে ঠেলছেন তা চিনুন।
৩.যদি মডারেট সংস্কারবাদী হন তবে সংস্কার কোথায় প্রয়োজন তা জানুন।
৪.হন যদি অবিশ্বাসী তবে উদ্ধত সাহসে গ্রহণ করুন
৫.যদি অমুসলিম হন তবে কৌতুহলে হাতে নিন
৬.যদি আলিম হন তবে এতিম উম্মাতের ব্যাথায় পড়ুন।
৭.যদি মানুষ হন তবে সত্তার তৃষ্ণায় আকন্ঠ পান করুন।
জাস্ট পড়ুন
তবুও পড়ুন…..
বই সম্পর্কিত তথ্য :
——————————
বই:ডাবল স্ট্যান্ডার্ড
লেখক :ড.শামসুল আরেফীন
প্রকাশনী:মাকতাবাতুল আযহার
মূল্য :২৬০ টাকা (মুদ্রিত)
Umme Suraiya