Copyright © 2024 Seanpublication.com
ধৈর্য হারাবেন না (পেপারব্যাক)
- লেখক : মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ, সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
- পাবলিকেশন : পথিক প্রকাশন
- বিষয় : অনুপ্রেরণা মোটিভেশন আত্ম-উন্নয়ন আত্মশুদ্ধি, সকল প্রকাশক
Author : মুহাম্মাদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ
Translator : সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
Publisher : পথিক প্রকাশন
Category : আত্ম-উন্নয়ন
৳160 ৳96
You Save TK. 64 (40%)
ধৈর্য হারাবেন না (পেপারব্যাক)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (3)
3 reviews for ধৈর্য হারাবেন না (পেপারব্যাক)
Add a review Cancel reply
Amit Hasan –
■ বই রিভিউ ■
■ বইয়ের নাম- ধৈর্য হারাবেন না
■ ভূমিকা-
আমাদের জীবন একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র। প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয় এই ধরণীতে। কারণ এটিই আল্লাহর ইচ্ছা। আল্লাহ দেখতে চান তার কোন বান্দা তার দেয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আর কোন বান্দা পরীক্ষাতে অনুত্তীর্ণ হন। এ যেন আমাদের জীবনের জাগতিক পড়া লেখার মতো যে ভালো পড়াশোনা করবে সে ভালো ফলাফল করবে আর যে পড়াশোনা করবে না সে ভালো ফলাফল করতে ব্যর্থ হবে। জাগতিক পড়া শোনায় ভালো ফলাফল করার ফ্যাক্টর যেমন ভালো পড়া শোনা করা। ঠিক তেমনি আল্লাহ প্রদত্ত পরীক্ষাগুলোতে সফল হতে আমাদের প্রয়োজন একটি বিশেষ অভাবনীয় গুণের আর তা হলো সবর বা ধৈর্য।
যে ব্যক্তি ধৈর্যের সাথে আল্লাহ প্রদত্ত পরীক্ষা গুলো মোকাবেলা করবে তিনিই ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনে মুক্তি পাবেন। আর যিনি দুনিয়ার পরীক্ষা গুলো ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করতে পারবেন না তিনি উভয় জীবনে ব্যর্থ হবেন। আর এই ধৈর্য সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে আলোচ্য বইটিতে।
■ বই কথন-
▪ বইটির কলেবর ছোট হলেও বইটিতে ধৈর্য সংক্রান্ত নানাবিধ আলোচনা উঠে এসেছে। ধৈর্যের পরিচয় থেকে শুরু করে এর বিভিন্ন স্তর, এর প্রকারভেদ, কখন কোন ধরনের কাজে ধৈর্যধারণ করতে হবে, ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তা, ধৈর্য ধারণের সুফল, কোরআন হাদিসের আলোকে আল্লাহ প্রদত্ত ধৈর্য ধারণের বিধান এবং ধৈর্যশীলদের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত বিভিন্ন পুরস্কারের ওয়াদা করেছেন সেগুলো ব্যক্ত করা হয়েছে।
▪ এছাড়াও কিছু নবী রাসুল, সাহাবা, তাবেঈন এবং সালাফগণের জীবনের ধৈর্য ধারনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে।
▪ সর্বশেষে ধৈর্য ধারণের ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো ব্যক্ত করা হয়েছে এবং সেই প্রতিবন্ধকতা গুলোকে মোকাবিলা করে কিভাবে ধৈর্যের মতো সুমিষ্ট গুণ অর্জন করা যায় তার নসিহত দেওয়া হয়েছে।
■ বইটির শিক্ষা-
১. বইটি পাঠের মাধ্যমে একজন পাঠক/পাঠিকা ধৈর্যের পরিচয় জানতে পারবেন।
২. আল্লাহর দেওয়া ধৈর্যের বিধান সম্পর্কে জানতে পারবেন।
৩. ধৈর্যশীলদের জন্য আল্লাহর প্রতিশ্রুত পুরস্কার গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন।
৪. নবী রাসুল, সাহাবা, তাবেঈ ও সালাফগণদের ধৈর্য ধারণের দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা লাভ করে তাদের জীবনে তা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবেন।
৫. পরিশেষে, ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তা, ধৈর্য ধারণের গুরুত্ব, ধৈর্য ধারণের ক্ষেত্রে সহায়ক গুণ গুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন আশা করি।
■ বইটি কাদের জন্য-
বইটি প্রতিটি মুসলিমের জন্যই সহায়ক। কারণ ধৈর্য এমন একটি গুণ যা প্রতিটি মুসলিমের অন্তরে ধারণ করা আবশ্যক। আর যারা বিশেষ করে হতাশাগ্রস্ত যেকোনো কাজে সহজেই ভেঙে পড়েন তাদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত বলে মনে করি।
■ সমালোচনা-
বইটি পড়ে বেশ সুখপাঠ্য মনে হয়েছে। অনুবাদ ও
বেশ সাবলীল হয়েছে। বইটির প্রচ্ছদ,পৃষ্ঠাসজ্জা, বিন্যাস ভালো মনে হয়েছে। তেমন ভুলত্রুটি চোখে পড়েনি। বইটির ছোট ছোট কবিতা গুলোর কাব্যানুবাদ আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
■ উপসংহার-
আল্লাহ বলেন,
“কসম যুগের (সময়ের), নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।”
-সূরা আসর(১-৩)
আমরা কি ক্ষতিগ্রস্ত দের অর্ন্তভুক্ত হতে চাই?
অবশ্যই না। তাই আমাদের উচিত নিজেদেরকে ধৈর্যের গুণে গুণান্বিত করা পাশাপাশি অন্যদেরকে ধৈর্যের তাকীদ বা উপদেশ দেয়া। আর এই কাজে বইটি সহায়ক হবে বলে মনে করি।
প্রবাদে আছে, ধৈর্যের ফল হয় মিষ্টি। যেকোনো কাজের সফলতার মাপকাঠি হলো ধৈর্য। ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে আমরা যেকোনো কাজে সফলতা অর্জন করার পাশাপাশি আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি তার দয়া ও ক্ষমা লাভ করতে পারি, তার দেয়া অনাবিল সুখের জান্নাত লাভের আশা করতে পারি।
আর এর জন্য কি আমরা এই ক্ষয়িষ্ণু দুনিয়ার এই সামান্য বিপদ,কষ্ট,আঘাত,অপমান,অসম্মান সইতে রাজি নই?
■ একনজরে বই-
● বইয়ের নাম- ধৈর্য হারাবেন না
● মূল লেখক- শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ
● অনুবাদ- সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ
● সম্পাদনা- আব্দুল্লাহ আল মাসউদ
● ধরন- ইবাদত, আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
● কভার- পেপারব্যাক
● পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৮০
● মুদ্রিত মূল্য-১৬০/-
● প্রকাশনায়- পথিক প্রকাশন
Din Muhammad Sheikh –
▪️ ভূমিকা :
ধৈর্য। মানবজীবনে অত্যন্ত দামি সম্পদ। জীবনে চলার পথে প্রতিনিয়ত ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। যেকোনো উন্নতির জন্য প্রয়োজন হয় ধৈর্যের। অবনতি কাটিয়ে উঠতে প্রয়োজন হয় ধৈর্যের। সুখের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন হয় ধৈর্যের। দুঃখের সময় নিজেকে দৃঢ়পদ রাখতেও প্রয়োজন হয় ধৈর্যের। আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতেও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। ধৈর্যের প্রয়োজন হয় আল্লাহর ইবাদতে রত থাকতেও৷
এ মহামূল্যবান সম্পদটি নিয়ে সালফে সালেহীনরা অনেক কিতাব রচনা করে গেছেন। এখনও উলামায়ে কেরাম এ বিষয়ে কলম ধরেন, বক্তৃতা দেন। এ সময়কার একজন জনপ্রিয় আলেমের ধৈর্য সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ কিতাবকে বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য বাজারে এনেছে পথিক প্রকাশন। নাম দিয়েছে ‘ধৈর্য হারাবেন না’।
▪️ বইপরিচিতি :
গুরুত্বপূর্ণ এ বইটি লিখেছেন আরববিশ্বের প্রধানতম আলেম ‘শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (ফা: আ:)। বইটি মূলত শাইখের রচিত ‘সিলসিলাতু আমালুল কুলুব’-এর একটি অংশ ‘আস সবর’-এর বঙ্গানুবাদ। অনুবাদ করেছেন মুফতি সাইফুল্লাহ আল মাহমুদ (হাফি:)। এর সম্পাদনায় ছিলেন শাইখ আব্দুল্লাহ আল মাসউদ (হাফি:)।
▪️ লেখকপরিচিতি :
শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (ফা: আ:)। জন্মেছেন ১৯৬০ সালের ৭ই জুন। বাবা-মায়ের আদি নিবাস সিরিয়ায় হলেও তাঁর জন্ম সৌদি আরবেই। তাঁর জন্মের আগেই বাবা-মা সৌদি আরবে চলে আসেন। এ প্রখ্যাত আলেম ইলম অর্জন করেছেন শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায, শাইখ সালেহ আল উসাইমিন, শাইখ সালেহ আল ফাওজান আল ফাওজান (রহি:)-দের মতো মনীষীদের কাছে। বিখ্যাত ওয়েবসাইট islamqainfo-এর প্রতিষ্ঠাতা তিনিই। এছাড়াও রচনা করেছেন গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিতাব। ২০১৭ সাল থেকে প্রখ্যাত এ আলেম কারারুদ্ধ আছেন। আল্লাহ তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করে দিন।
▪️ যা আছে বইটিতে :
ধৈর্যের পরিচয় প্রদানের মধ্য দিয়ে বইটি শুরু হয়েছে। ধৈর্য কী, এর স্তর, প্রকারভেদ ও হুকুম নিয়ে বইটির শুরুর আলোচনা। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ধৈর্যের হুকুমেও ভিন্নতা হয়। ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহি:)-এর বরাত দিয়ে লেখক শুরুতেই উদাহরণসহ এ বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। এরপর এনেছেন ধৈর্যের সময় ও বাস্তবতা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। তারপর আছে ‘ধৈর্যের ফসল’ শিরোনামে বিস্তারিত আলোচনা, যেখানে লেখক নুসুসের আলোকে ধৈর্যের ফল ও প্রাপ্তি নিয়ে চমৎকার আলোচনা করেছেন। শুধু এ অংশটুকু পড়লেই একজন পাঠক ধৈর্যধারণে প্রবলভাবে উৎসাহিত হবেন, ইংশা আল্লাহ।
কেবল বিপদাপদেই ধৈর্যের প্রয়োজন হয় না, বরং আল্লাহর আদেশ মেনে চলতে এবং তাঁর নিষেধকৃত কাজ থেকে বিরত থাকতেও ধৈর্যের প্রয়োজন। ‘ধৈর্যের ক্ষেত্র’ শিরোনামে লেখক এ বিষয়টি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এ তিনটি ক্ষেত্র ছাড়াও লেখক ধৈর্যের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র উল্লেখ করেছেন এ বইয়ে।
এরপর বইটিতে আলোচিত হয়েছে ধৈর্যধারণ করার কৌশল নিয়ে। কীভাবে আমরা ধৈর্যধারণ করতে সক্ষম হবো, এ ব্যাপারে দলিলের আলোকে চমৎকার কিছু পরামর্শ দিয়েছেন লেখক।
‘বড়দের ধৈর্যধারণের গল্প শোনো’ শিরোনামের অধীনে আলোচনা করা হয়েছে নবী-রাসূল (আ:), সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন এবং আমাদের সালাফদের ধৈর্যধারণের বিভিন্ন ঘটনা। এ ঘটনাগুলো পাঠককে ধৈর্যধারণে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করবে।
ধৈর্যের পথে সফল হতে কিছু কাজ করতে নিষেধ করার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চমৎকার এ বইটি।
▪️ বইটির প্রয়োজনীয়তা :
ধৈর্য একটি মানবীয় গুণ। অস্থির এবং ব্যস্ত এ পৃথিবীতে এ গুণের চর্চা নেই আমাদের অনেকের মাঝেই। সামান্য বিপদাপদে ধৈর্যহীন হয়ে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল হারিয়ে বসি অনেকেই। অথচ আল্লাহ রব্বুল আলামীন স্পষ্টভাবেই ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ধৈর্যশীলদের সাথেই আছেন। সুতরাং গুরুত্বপূর্ণ এ গুণটি অর্জনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া আমাদের একান্ত জরুরি। আর এ জরুরত পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (ফা: আ:)-এর ‘ধৈর্য হারাবেন না’ বইটি। তাই বইটির প্রয়োজনীয়তা অবর্ণনীয়।
▪️ বইটির বিশেষত্ব :
এককথায় অসাধারণ একটি বই। এর রয়েছে স্বাতন্ত্র্য কিছু বৈশিষ্ট্য। বইটির বিষয়বস্তু অত্যন্ত দামি ও সময়োপযোগী। ধৈর্যহীন এ পৃথিবীতে এ জাতীয় বিষয়ে বই বের করায় পথিক প্রকাশন প্রশংসার দাবিদার। অনুবাদ মোটামুটি সরল ও প্রাঞ্জল হয়েছে। শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (হাফি:)-এর বইগুলোতে সাধারণত কুরআন-হাদিস ও সালাফদের কিতাব থেকে পর্যাপ্ত দলিলপত্রের উপস্থিতি থাকে। এ বইটিতেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।
▪️ সমালোচনা :
শত সতর্কতার পরেও মানবীয় দূর্বলতার কারণে সবার কাজেই টুকটাক ত্রুটি থেকে যেতে পারে। পাঠক হিসেবে বইটিতে কিছু ত্রুটি লক্ষ্য করেছি আমি।
• বানানবিভ্রাট চোখে পড়েছে টুকটাক। যেমন লেখা হয়েছে : লাঞ্চিত, জগত সংসার, ঘটনাবলী, স্থীর, দেরী।
• টাইপিং মিস্টেকও আছে কিছু। যেমন : এক জায়গায় ‘ঈমান’ লেখা হয়েছে, আরেক জায়গায় ‘ইমান’। লেখকের জন্ম তারিখে লেখা হয়েছে ‘১০ ডিসেম্বর, ১৩৮০ হিজরি’। ধৈর্যের ফসল উল্লেখ করার সময় এক শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘বড় সওয়াবও মাফ পাবে’। আরেক জায়গায় লেখা হয়েছে ‘ধৈর্যধারণের ফল পেতে হলে আপনাকে রাগ না করা থেকে দূরে অবস্থান করতে হবে’।
• উপমার ভুল প্রয়োগও আছে। যেমন : লেখকপরিচিতিতে এক জায়গায় লেখা হয়েছে ‘এতেই গাত্রদাহ শুরু হয় তথাকথিত প্রগতিশীলদের মানসপটে’। মানসপটে আবার গাত্রদাহ শুরু হয় কীভাবে!
• আরেকটা মারাত্মক ভুল চোখে পড়েছে। লেখক সম্পর্কে লেখা হয়েছে যে, “বর্তমানে তিনি ‘আল খুবার’ শহরের ‘মসজিদে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ’-এ ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।….” লেখক তো বর্তমানে বন্দি আছেন। এমনকি শুরুতে এ বইয়েও তা উল্লেখ করা হয়েছে। তবুও লেখকের বর্তমান উল্লেখ করতে গিয়ে অনেকটা অংশজুড়ে উপরিউক্তভাবে ত্রুটিযুক্ত তথ্য লেখা হয়েছে।
▪️ উপসংহার :
ভালো বই। দামি বই। জরুরি বই। এরচেয়ে আরও কিছু বলা বাহুল্য। তবুও বলছি, নিজের ধৈর্যে শান দেওয়ার জন্য এ বইটি আমাদের ক্রয়তালিকায় রাখা যেতেই পারে।
mahmud03 –
বাগানে যেমন বসন্ত আসে তেমনি আসে শীত এবং হেমন্তও। গাছে গাছে যেমন সবুজ পাতা, মনোরম ফুল আসে তেমনি সেগুলো আবার ঝরেও যায়। আমাদের জীবনটাও এমনি; কখনো থাকে আনন্দ, উৎফুল্লতা আবার কখনো ছেয়ে যায় বিপদের কালো মেঘ। সামান্য বিপদ-সমস্যায় আমাদের অন্তরটা কচুপাতার উপর পানির মতো একটু আঘাতেই নুইয়ে পড়ে। হতাশায় বুক ভারী হয়ে আসে, কিছুতেই মনে প্রশান্তি পাওয়া যায় না। আস্তে আস্তে শুরু হয় ডিপ্রেশন, অতঃপর আত্মহত্যা।
.
তবে মুমিন যেকোনো সমস্যায় সহজে কাবু হয়ে যেতে পারে না। কারণ তাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে সকল সমস্যার অন্যতম সমাধান ‘ধৈর্য’। বাংলাভাষী পাঠকরা যেন হতাশাঘন মুহূর্তে ধৈর্য হারিয়ে না ফেলে সেজন্য ‘পথিক প্রকাশন’ রিমাইন্ডার স্বরূপ নিয়ে এসেছে প্রখ্যাত দাঈ ও বেস্টসেলার লেখক ‘সালেহ আল মুনাজ্জিদের’ “সিলসিলাতু আমালুল কুলুব” গ্রন্থের একাংশ ‘আস সবর’ এর বঙ্গানুবাদ ‘ধৈর্য হারাবেন না’ বইটি।
.
.
সালেহ আল মুনাজ্জিদ যুগশ্রেষ্ঠ আলিমগণ যেমন- আব্দুল্লাহ বিন বায, সালেহ আল উসাইমিন, ফাওজান আল ফাওজান, আশ শানকিতি, সালেহ আল মাহমুদ প্রমুখের সামনে হাঁটু গেড়ে ইলম অন্বেষণ করেছেন। লেখক হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। কলম চালিয়েছেন এমন সব বিষয়ে যেগুলো সকল মানুষের জানা আবশ্যক; ফলে তার বইগুলোর আবেদন কখনো ফুরিয়ে যাবার নয়। বাংলাভাষী পাঠকদের কাছে তার রচিত শামায়েল ধাঁচের গ্রন্থ ‘যেমন ছিলেন তিনি ﷺ’ অত্যন্ত জনপ্রিয়।
.
.
বক্ষ্যমাণ বইয়ের প্রথমাংশে লেখক পরিচয় করিয়েছেন ধৈর্যের সংজ্ঞা, স্তর এবং এর প্রকারভেদের সাথে। কখন ধৈর্যধারণ করা ওয়াজিব, হারাম, মুস্তাহাব, মাকরূহ, মুবাহ— এসবের তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন, কিন্তু পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে পরবর্তীতে উদাহরণও টেনে এনেছেন। কুরআন, হাদিস ও সালাফদের কথামালা মেলে ধরে বিভিন্ন আঙ্গিকে ধৈর্যের উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে; যাতে বিপদাচ্ছন্ন সময়ে বইটির একটুকুন পাঠ পাঠকের প্রশান্তির কারণ হয়। সাময়িক উৎকণ্ঠাকে সাইডে রেখে রবের প্রতিশ্রুতি দৃষ্টিগোচর হয়।
.
ধৈর্যধারণের কিছু ক্ষেত্র, কখন এবং কীভাবে সেগুলোতে ধৈর্যধারণ করতে হবে— তা নিয়েও লেখক কলম চালিয়েছেন। ধৈর্যের পথে অবিচল থাকার উপায়ান্তর বাতলে দিয়ে ধৈর্যের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, কীভাবে দুঃখ-দুর্দশাকে নেকির ভাণ্ডারে পরিণত করা যেতে পারে সেব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে। নুহ, ঈসা, মুসা, ইব্রাহীম, ইউসুফ (আ) এর মতো নবিদের জীবনের ধৈর্যের ঘটনাচিত্র অঙ্কন করে আমাদেরও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি এসেছে সাহাবায়ে কেরাম এবং প্রখ্যাত তাবেঈ ও ইমামদের ধৈর্যের গল্পও। ধৈর্যের পথে চলতে কোন কোন বিষয়গুলোকে সযত্নে এড়িয়ে যেতে হবে তার জানান দিয়ে বইটির ইতি টানা হয়েছে।
.
‖পাঠ্য অভিমত‖
বইটির সম্পূর্ণ আলোচনাই দলিলভিত্তিক এবং কলেবরে ছোট হওয়ায় একবসায় সম্পূর্ণ পড়ে ফেলা সম্ভব। বইটির অনেক জায়গায় কবিতার উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে, এবং ভালোলাগার বিষয় হচ্ছে কবিতাগুলোর অনুবাদেও কাব্যরূপ বহাল রাখা হয়েছে। লক্ষণীয় তেমন বানান ভুল নজরে আসেনি। প্রচ্ছদটাও যুতসই।
.
সবর মুমিনের জীবনবৃত্তের সাথে অত্যন্ত নিবিড়়ভাবে জড়িত। হোক তা পরকালের পাথেয় জোগাড় কিংবা দুনিয়াবি অর্জন; উভয় জগতের সাফল্যের জন্যই চাই সবর। জটিল থেকে জটিলতর সময়েও বইটির একটুকুন পাঠ নমনীয়তার পরশ বুলিয়ে অন্তরকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেবে। সংকীর্ণতা ও সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আলোর পথে যাত্রা করার একরাশ প্রেরণা দোলা দিবে আপন হৃদয়ে। স্মরণ করিয়ে দেবে ধৈর্যের অঢেল পুরস্কারের কথা। তাই আসুন বইটি থেকে উভয় জগতের সফলতা লাভেরই কিছু সবক নিই।