বর্তমান মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গাটাকে যদি একবাক্যে প্রকাশ করতে হয় তবে বলতে হবে বুদ্ধি ও মনস্তাত্ত্বিক সংকট। বিগত কয়েক প্রজন্মসহ বর্তমান মুসলিম প্রজন্মের মনস্তত্ত্বকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে অচল করে দেওয়া হয়েছে। তাদের মুসলিম জাতিসত্তা ও দীনি ফিতরাত নষ্ট হয়ে গেছে পশ্চিমা ও অন্যান্য জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক আঘাতে। ফলে আজ রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার সর্বত্র দীনহীনতার সয়লাব।
স্বাধীনতা, প্রগতি ও যুগচাহিদার নামে বর্তমান মুসলিম উম্মাহ যেই মানসিক দাসত্ব ও ধর্মহীনতার প্লাবনে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে এর সাথে বিগত ৩০০ থেকে ৩৫০ বছরের বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের গভীর সম্পর্ক আছে। উম্মাহর মনস্তত্ত্বকে মানুষের দাসত্ব থেকে আল্লাহর দাসত্বে ফিরিয়ে আনার জন্য ইসলামের সোনালি ইতিহাসের পাশাপাশি বিগত ৩০০ বছরের ইতিহাসের সাথে পরিচয় করাতে হবে। তখন তারা বুঝতে পারবে, আজকের শাসনব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, পরিবারব্যবস্থা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা নয়। বরং উপনিবেশ, প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়নের মাধ্যমে তাদের উপর বিদ্যমান মতাদর্শগুলো চাপিয়ে দিয়েছে ইউরোপ।
আর উম্মাহকে ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই নাশাত পাবলিকেশন নিয়ে আসছে “বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত”।
Copyright © 2025 Seanpublication.com
Arafat Shaheen –
বই: বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত
সৃষ্টির সূচনাকাল থেকে সত্য মিথ্যার যে সংঘাত আরম্ভ হয়েছিল, মক্কায় রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের মধ্য দিয়ে তা একেবারে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন চলে আসছে। আমাদের প্রতিপক্ষ এখন অনেক বেশি শক্তিশালী এবং দক্ষ। তারা খুব ভালোভাবেই জানে, সামরিক শক্তিতে কোন জনপদকে পদানত করে রাখা যাবে না। তাই তারা আশ্রয় নিয়েছে কৌশলের এবং প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে বন্ধুত্বের মুখোশ পরে!
মুসলিম জাতিকে আজ চিনে নিতে হবে তাদের প্রকৃত শত্রু এবং মিত্র আসলে কে। তাদের ওরিয়েন্টালিজম, গ্লোবালাইজেশন, মিশনারি কার্যক্রম, সেক্যুলারিজম, পাশ্চাত্যতত্ত্ব নামক টার্মগুলোর সঙ্গে পরিচিত হতে হবে। তাদেরকে পরিপূর্ণভাবে জানতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন সম্পর্কে। এই টপিকে বাংলা ভাষায় বইপত্রের অপ্রতুলতার কারণে আমাদের জানাশোনার পরিধি অত্যন্ত সীমাবদ্ধ। সময়ের সাহসী ঐতিহাসিক মাওলানা ইসমাইল রেহান-এর ‘নজরিয়াতি জঙ্গ কে মহাজ’ বইটি বাংলায় রূপান্তরের মাধ্যমে দারুণ একটি কাজের আঞ্জাম দিয়েছে নাশাত পাবলিকেশন।
এত জটিল এবং বিস্তৃত একটি বিষয়কে দারুণ দক্ষতায় পাঠকের সামনে এনেছেন মাওলানা সাহেব। শুধু তাই নয়—এই লড়াইয়ের কর্মকৌশল নির্ধারণ এবং জয়লাভের তরিকাও উঠে এসেছে তাঁর লেখায়। আর আহমাদ সাব্বিরের প্রাঞ্জল অনুবাদ পাঠের চাহিদা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ।
Amit Hasan –
বই- বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত
বর্তমান সময়ে মুসলিম উম্মাহ এক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইসলাম থেকে আজ অনেকটাই দূরে সরে যাচ্ছি। কারণ আমাদের চিন্তা চেতনা প্রভাবিত হচ্ছে অন্য এক অপশক্তির আগ্রাসনে। যাকে আমরা বলছি বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন। আর এর মূল কারণ মুসলিম উম্মাহর অলসতা ও উদাসীনতা। পাশ্চাত্য সভ্যতার সৃষ্ট বিভিন্ন মতবাদ ওরিয়েন্টালিজম, কলোনিজম, গ্লোবালাইজেশন, সেক্যুলারিজম, হিউম্যানিজম, ফেমিনিজম, খ্রিস্টান মিশনারির কার্যক্রম প্রমুখ এর বিষাক্ত আগ্রাসনের ছোঁবলে আসক্ত সমাজের প্রতিটি রন্ধ্র। এ অবস্থা থেকে আমাদের পরিত্রাণ পাওয়া এখন সময়ের দাবি।
এই বিষয়ে বাংলা ভাষায় সেরকম বই চোখে পড়েনি। নাশাত পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বই “বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত” বইটি এই বিষয়ে বাংলা ভাষায় অনন্য একটি বই।বইটির সাতটি অধ্যায়ে উঠে এসেছে বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের পরিচয় থেকে শুরু করে এর ইতিহাস, এর ধারণা, এর ক্ষেত্র সমূহ, এর উপকরণ এবং মাধ্যম, সর্বশেষে এই আগ্রাসন মোকাবেলায় আমাদের করণীয় কি কি তা সবিস্তারে আলোকপাত করা হয়েছে। বইটির সাবলীল অনুবাদ সবার কাছেই সুখপাঠ্য হবে ইনশাআল্লাহ।
■ বই বৃত্তান্ত-
▪নাম- বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত
▪মূল বই: নজরিয়াতি জঙ্গ কে মহাজ
▪বিষয়- বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই
▪লেখক- মাওলানা ইসমাইল রেহান
▪অনুবাদক- আহমাদ সাব্বির
▪প্রকাশনী- নাশাত পাবলিকেশন
▪কভার- হার্ডকাভার
▪কাগজ- ৭০ গ্রাম অফহোয়াইট
▪পৃষ্ঠাসংখ্যা- ৩৮৪
▪মুদ্রিত মূল্য- ৪৭৫৳
Muhammad Tamimul Ihsan –
||বুক রিভিউ||
■ পশ্চিমাবিশ্ব ইসলাম এবং মুসলিম উম্মাহর সাথে এক সামগ্রিক লড়াইয়ে লিপ্ত,একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই বিষয় নিয়ে কোনো মুসলিমের মাঝে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। এই দ্বন্দ্ব সভ্যতার দ্বন্দ্ব। সামরিক আগ্রাসনের পাশাপাশি এই যুদ্ধের আরো ভয়াবহ দিক হলো আদর্শিক আগ্রাসন, যাকে বলা যায় মনস্তাত্ত্বিক লড়াই বা বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন। যে লড়াই অনেকাংশে সামরিক আগ্রাসনের চেয়েও অনেক ভয়াবহ আর বিপজ্জনক। যে আগ্রাসনের লক্ষ্য হলো, মুসলিম জাতিসত্তাকে চৈন্তিক, মানসিক ও আনুভৌতিকভাবে হত্যা করে তাদেরকে নিজেদের কাঠামোতে গড়ে নেওয়া।
■ আমাদের সরলতাকে উপজীব্য করে কীভাবে একের পর এক বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন রচনা করে চলছে আমাদের প্রতিপক্ষ, তার অসামান্য খতিয়ান উঠে এসেছে বক্ষ্যমাণ এই বইটিতে।সাম্রাজ্যবাদ কীভাবে প্রাচ্যবাদের কাঁধে ভর করে চষে বেড়াচ্ছে আমাদের মনোজগত__??গ্লোবালাইজেশন কীভাবে অন্তসারশূন্য করে তুলছে আমাদের চেতনা__?? সেক্যুলারিজমের বিষবাষ্পে কীভাবে নীল হচ্ছে আমাদের কোমল ইসলামি মূল্যবোধ__?? ইয়াহুদিদের গুপ্ত সংগঠন আর প্রকাশ্য সংস্থাগুলো কীভাবে কেটে দিচ্ছে আমাদের প্রতিরোধব্যুহের একেকটি শেকড়__??জায়নবাদের অক্টোপাশ কীভাবে জেঁকে বসছে মুসলিমবিশ্বের মানচিত্রে__?? গ্রিকদর্শন, যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা, হিউম্যানিজম,ইনলিগটেনম্যান্ট মুভমেন্ট, কলোনিয়ালিজম,কমিউনিটারিনিজম কীভাবে সরাসরি ইসলামের প্রতিপক্ষ হয়ে ধর্মহীন পৃথিবী গড়ার খোয়াব বুনছে__?? এমন বিষয়গুলো নিয়েই ধারাবাহিকভাবে সাজানো এই বইটি।
■ ইতিহাস সাক্ষী, এই বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ভয়াবহতা সামরিক আগ্রাসনের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। তাদের সেই বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন কী? কীভাবে তারা তাদের সেই চিন্তাযুদ্ধ সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছে? প্রাচ্যতত্ত্ব, সাম্রাজ্যবাদ, বিশ্বায়ন, নাস্তিকতা, সেক্যুলারিজম, মর্ডানিজম কীভাবে সেই বুদ্ধিবৃত্ত্বিক ক্রুসেডের পরিবাহক হয়ে আমাদের প্রতিরোধশক্তি নিঃশেষ করছে, সে কথাই বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে উঠে এসেছে নিপুণভাবে। ছদ্মবেশী ক্রুসেডারদের হাতে আমাদের জাতিসত্ত্বার নীরব হত্যার কথাচিত্র ❝বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত❞।
■ সচেতন পাঠকের জন্য এমন সব দারুণ বিষয় নিয়েই ইতিহাসবিদ “মাওলানা ইসমাইল রেহান” লিখিত ❝নজরিয়াতি জঙ্গ কি মাহাজ❞ এর অনুবাদগ্রন্থ ❝বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত❞ বইটি এনেছে “নাশাত পাবলিকেশন”। বইটি অনুবাদ করেছেন প্রিয় ❝আহমাদ সাব্বির❞ ভাই। যার প্রাঞ্জল অনুবাদ আশা রাখি বইটার চাহিদা বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ। ইনশাআল্লাহ।
■ বই পরিচিতি :
▪︎ বই : ❝বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ইতিবৃত্ত❞
▪︎ মূল নাম : ❝নজরিয়াতি জঙ্গ কে মাহাজ❞
▪︎ লেখক : মাওলানা ইসমাইল রেহান
▪︎ অনুবাদক : আহমাদ সাব্বির
▪︎ প্রকাশক : নাশাত পাবলিকেশন
▪︎ পৃষ্ঠাসংখ্যা : ৩৮৪ পৃষ্ঠা
▪︎ প্রচ্ছদমূল্য : ৪৭৫/-
▪︎ কভার : হার্ডকাভার