আর-রাহীকুল মাখতুম (হার্ডকভার)

||বুক রিভিউ||

সীরাতে রাসূল (সা.) আমাদের ভালোবাসার উৎস,এই পৃথিবীতে কুরআনের পরই সর্বোত্তম জিনিসটি হচ্ছে সীরাতে রাসূল (সা.)। কুরআনের আদর্শ রাসূল (সা.) কীভাবে পালন করেছেন তা হুবহু বর্ণনা করা আছে সীরাতে রাসূল (সা.)-এ। ফিতনার এই যুগে আমাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হলো,রবের কালাম কুরআন আর রাসূল (সা.)-র সুন্নাহ তথা রাসূলের জীবনাদর্শ। তবে রাসূলের এই জীবনাদর্শ আমাদের জীবনে প্রয়োগ করতে হলে তার পুরো জীবনী আমাদের অবগত হওয়া প্রয়োজন। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে ঘরের জীবন, ঘরের জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন,সব কিছু সম্পর্কে আদ্যোপান্ত অবগত থাকা দরকার আমাদের। কারণ রাসূল (সা.)-র জীবন আমাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার জন্য প্রয়োজন এটা জানা। তারপরও হাজার ব্যস্ততা, হাজার কাজের মধ্যে আমাদের সম্ভব হয়ে ওঠে না রাসূলের সীরাহ পড়া।আবার অনেক বইয়ের প্রস্থ দেখেই অপ্রয়োজনীয় মনে করে রেখে দেয় রাসূলের সীরাহ। কিন্তু এর জন্য যে বড় অমূল্য বাদ দিয়ে যাচ্ছেন। যাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে ফেলে দিচ্ছেন সেই আপনার লাইফে অন্যতম প্রয়োজনীয় বস্তু। তাই রাসূল (সা.)-র সীরাহকে পাই টু পাই আদ্যোপান্ত জানার জন্য শাইখ সফিউর রহমান রাহি. রচনা করেছেন বিশ্বখ্যাত সীরাহ “আর রাহীকুল মাখতুম” গ্রন্থটি। যা অনুবাদ করে প্রকাশ করেছে ‘আনোয়ার লাইব্রেরি’।

▪︎ বইটির লেখক শাইখ সফিউর রহমান মোবারকপুরী (রাহি.),ভারতের উত্তর প্রদেশের মুবারকপুরের হুসাইনাবাদ নামক গ্রামে।লোক মুখে কথিত আছে,তিনি সাহাবী আবু আইয়্যুব আনসারী (রাদ্বি.)-র বংশধর। গ্রামের মক্তবে কুরআন শিক্ষা দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে ১৯৭৬ সালে আরবী সাহিত্যে উচ্চ শিক্ষা নেন।১৯৭৬ সালপ রাবেতা আলম আল ইসলামী কতৃক আয়োজিত সীরাহ প্রতিযোগিতায় “আর রাহিকুল মাখতুম” নিয়প আবির্ভূত হন বিশ্বের নাট্য মঞ্চে। সেই থেকে শুরু আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।বইটি সারা বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে ঘটিয়ে দেয় বিপ্লব। বইটির শেষ কভারে তার পরিচয় বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে,যেখান থেকে পাঠক তার দ্বীনের জন্য খেদমাতের এক টুকরো হলেও জানবে।

▪︎ বইটিতে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবনীকে পাই টু পাই উল্লেখ করা হয়েছে।কোনো অংশই বাদ দেয়া হয়নি সীরাহ গ্রন্থটিতে।এত তথ্যপূর্ণ আর প্রায় নির্ভূল সীরাহ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া মুশকিল।রাসূলের জন্ম পূর্ব আরব অবস্থা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত বিস্তারিত ভাবে ভাগে ভাগে সাজানে হয়েছে।যার ফলে পাঠক রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য সূচিপত্রে গিয়ে খুঁজলেই পাওয়া যায়।

▪︎ বইটি রচনার ক্ষেত্রে প্রথমত রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম পূর্ব আরবের অবস্থা বর্ণনা করা থেকে শুরু করে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম সময়কার আরবের অবস্থা এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়তের সময় আরবের অবস্থা দিয়ে এক এক করে যুগের পার্থক্য করে দেওয়া হয়েছে। তার ফলে পাঠক টোটাল ওই সময়কার আরব সমাজের একটা পুরো মানচিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠবে।যার ফলে পাঠক নিজেই পার্থক্য করে নিতে পারবে।

▪︎ বইটি কারা পড়বেন এবং কেন পড়বেন …??যারা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবনকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে চান এবং নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে চান তারা বইটি পড়প দেখতে পারেন।এছাড়াও তালিবুল ইলমদের জন্য বইটি অনেক উপকারী হয়ে থাকবে।

▪︎ ব্যক্তিগত অনুভূতি : রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবনীকে নিজের মধ্যে প্রায় অনেকখানি ধারণ করার অনুভূতি কোনোদিন ভাষায় প্রকাশ করস সম্ভব না। রাসূলের জীবনকে জানতে হলে বইটি সকলের পড়া অাবশ্যক বলেই মনে করে থাকি। এত তথ্যবহুল সীরাহ পড়তে গিয়ে মাঝে মধ্যে বোরিং লাগলেও রাসূলের জীবনাদর্শ নিজের মধ্যে ধারন করার ব্যাপারটার সামনে এটা ফিকে হয়ে যাবে।

তাই রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শ নিজের ভিতর ধারণ করা প্রত্যেক মুসলিমের জরুরী বলে মনে করে থাকি।

▪︎ ব্যক্তিগত রেটিং: ৪.৫/৫

মাআসসালাম……….!!