… পাশ্চাত্য সভ্যতার আরেকটি দিক হলো যৌনসম্পর্ক। তাদের সভ্যতা মতে বিবাহ ছাড়াই যৌনসম্পর্ক সম্পূর্ণ বৈধ বলে সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত। আধুনিক যুগের পশ্চিমা আইনপ্রণেতারা হিসাব-নিকাশ করে এই উপসংহারে এসে পৌঁছেছে যে, বিয়ে এবং ব্যভিচারের মধ্যে ম্যারেজ সার্টিফিকেট নামের এক টুকরো কাগজ ছাড়া আর বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। কেবল ধর্মীয় বিধি-নিষেধের কারণেই এখানে ‘পারস্পারিক সম্মতি’ সত্ত্বেও যৌনতাকে অবৈধ বলা হচ্ছে। তাই নারী-পুরুষ দুজনের সম্মতি থাকলেই যৌনসম্পর্ক করা যাবে; এতে কোনো বাধা নেই। আর এরই ভিত্তিতে পশ্চিমারা অবাধ যৌনতার বাঁধভাঙা জোয়ারে ভাসছে। নিজেদের মধ্যে স্ত্রী অদলবদলের পার্টি (Wife Swapping) থেকে শুরু করে-দল বেঁধে যৌনমিলন, টপলেস বার কালচার ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের অনাচার ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমাদের মাঝে।
পাশ্চাত্যের এই হীন চিন্তা থেকেই তারা বিয়েকে উপেক্ষা করে, বোঝা মনে করে। তারা মেয়েদের শুধুই একটি খেলনা মনে করে। মনে করে মেয়েরা কেবল পুরুষের যৌন চাহিদা মেটানোর বস্তু।
উল্লিখিত আলোচনা থেকে এ কথাই প্রমাণিত হয়, ইসলামি সভ্যতার সাথে পাশ্চাত্য সভ্যতার ভিত্তিগত দূরত্ব বিরাট। ইসলামি সভ্যতার ভিত্তি হলো লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ, অর্থাৎ জীবনের সবকিছুর হুকুম আসবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার পক্ষ থেকে। যেসব হুকুম-আহকাম রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর পক্ষ থেকে নিয়ে এসেছেন।
পক্ষান্তরে পাশ্চাত্য সভ্যতার ভিত্তি হলো, সেক্যুলারিজম, ডেমোক্রেসি, ডারউইনিজম, মেটেরিয়ালিজম ইত্যাদি। তাই ইসলামি সভ্যতার সম্পূর্ণ বিপরীত হলো পাশ্চাত্য সভ্যতা। এদের মধ্যে সমন্বয়ের বা সমঝোতার কোনো উপায় নেই।
সুতরাং উভয় সভ্যতার কৃষ্টি-কালচারে বিরাট পার্থক্য থাকাই স্বাভাবিক।
ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক কাঠামোতে, নারী ও পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বৈধ ও অবৈধের বিধান সম্পর্কে, আনন্দ-বিনোদন উপভোগের ধরনের ব্যাপারে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। আশা করি এ পার্থক্যগুলোর জট খুলবে এই গ্রন্থের মাধ্যমে। বইটিতে মূলত আলোচনা করা হয়েছে পাশ্চাত্য সভ্যতা-সংস্কৃতি ও ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতির পরিচয়, পার্থক্য ও অবস্থান নিয়ে।
Reviews
There are no reviews yet.