Copyright © 2024 Seanpublication.com
জবানের হেফাজত (হার্ডকভার)
- লেখক : আল্লামা ইমাম নববী রহ.
- পাবলিকেশন : উমেদ প্রকাশ
- বিষয় : ইবাদত—আমল ও আমলের সহায়িকা
Author : আল্লামা ইমাম নববী রহ.
Category : আমল ও আমলের সহায়িকা
৳300 ৳180
You Save TK. 120 (40%)
জবানের হেফাজত (হার্ডকভার)
Share This Book:
ক্যাশ অন ডেলিভারী
৭ দিনের মধ্যে রিটার্ন
ডেলিভারী চার্জ ৬০ টাকা থেকে শুরু
Author
Reviews (1)
1 review for জবানের হেফাজত (হার্ডকভার)
Add a review Cancel reply
Halim Abdullah –
রিভিউ
.
বই: জবানের হেফাজত
লেখক: ইমাম মুহিউদ্দীন আন নববী (রহ.)
.
একটি নৌকা যতই নান্দনিক হোক, যদি তাতে কোনো ফুটো থাকে, তবে এর যাত্রীরা নিরাপদ থাকতে পারে না। একইভাবে আমলের পাত্র যতই সমৃদ্ধ হোক, যদি তাতে এমন ফুটো থাকে, তবে বিচার দিবসে রেহাই পাওয়া যাবে না। আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু আমাদের জিহ্বা; এটি নৌকার ফুটোর মতোই। অধিকাংশ গোনাহের সূত্রপাত হয় এর মাধ্যমে। হাদিসে এসেছে, অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো জিহ্বাকে সর্বদা আল্লাহর নাফরমানির ব্যাপারে অভিযুক্ত করে। সুতরাং জিহ্বার অনিষ্ট ও এর প্রতিকার সম্পর্কে না জানলে বিপদের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইমাম নববি (রাহ.) লিখিত ‘জবানের হেফাজত’ বইটি খুবই উপকারি।
.
❖ সংক্ষিপ্ত লেখক পরিচিতি:
ইমাম নববি মাত্র ৩৫ বছরের জীবন পেয়েছিলেন, অথচ এর মধ্যে তিনি সহিহ মুসলিমের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যাগ্রন্থ রচনা করেছেন। ‘রিয়াদুস সালেহিন’-এর মতো জগদ্বিখ্যাত হাদিসের কিতাব সংকলন করেছেন। জীবনে বিয়ে করেননি; ছিলেন চিরকুমার। ফকিহ, মুহাদ্দিস, জীবনীকার, শাফিয়ি মাজহাবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার—তাঁর পরিচয়ের শেষ নেই। প্রবলভাবে শাসকের দরবারবিমুখ, জাহিদ ও মুত্তাকি হিসেবে তাঁর অনেক সুনাম ছিলো। সিরিয়ার নাওয়া নামক স্থানে (১২৩৩ খ্রিষ্টাব্দে) জন্ম নেওয়ায় তাঁকে ‘নাওয়াউয়ি’ (আরো সহজ করে ‘নববি’) বলা হয়।
.
❖ বইয়ের পরিচিতি ও বিষয়বস্তু:
ইমাম নববির অন্যতম সুপরিচিত গ্রন্থ ‘আল আজকার’-এর ‘হিফজুল লিসান’ অংশের বাংলা তরজমা হলো ‘জবানের হেফাজত।’ আলোচ্য বইটিতে জবান দ্বারা যেসব কবিরা-সগিরা, শির্কি-কুফরি, বিদ‘আতি গুনাহ হয় এবং বিভিন্ন মাকরুহ তথা অপছন্দনীয় কাজ করা হয়, সেগুলোর দালিলিক আলোচনা করা হয়েছে।
.
❖ পর্যালোচনা ও গুরুত্ব:
প্রথমে ইমাম নববির সংক্ষিপ্ত জীবনী উল্লেখের পর ‘জবানের হেফাজত’ শিরোনামে বইয়ের মূল আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। এতে জবান হেফাজতের গুরুত্ব সম্পর্কিত দুটো আয়াত, পনেরোটি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস ও সালাফের একাধিক উক্তি আলোচনা করা হয়েছে।
.
অতঃপর ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী শুধু গিবতের আলোচনাই করা হয়েছে, যা অত্যন্ত সমৃদ্ধ, গোছানো ও দালিলিক। গিবতের আলোচনার উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো তুলে ধরছি—
.
• গিবত যে কত রকমের হতে পারে, তা একটি একটি করে উল্লেখ করা হয়েছে এবং গিবতের পরিধি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। সমাজের অধিকাংশ মানুষই তা জানে না।
• মোট ৬ টি ক্ষেত্রে গিবত করা বৈধ; বরং কখনো কখনো জরুরিও বটে। এই প্রসঙ্গে দালিলিক আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়া গিবত শুনলে কী করণীয়, মনে মনে কারো গিবত করা এবং গিবতের কাফফারা ইত্যাদি নিয়েও সুন্দর আলোচনা এসেছে।
.
বইয়ে যেসব টপিক আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে অভিনব কয়েকটি তুলে ধরছি: বিভিন্ন হারাম ও মাকরুহ শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার, বিভিন্ন বাতিল শব্দ ও বাক্যের সম্বোধন, কারো ব্যাপারে ঈমানহারা হওয়ার বদ-দু‘আ করা, কুফরি বাক্য উচ্চারণে বাধ্য হওয়া, বিভিন্ন সৃষ্টি ও অসুখকে গালি দেওয়া ইত্যাদি। সব টপিক উল্লেখ করা সম্ভব নয়।
.
সর্বশেষ অংশে মিথ্যা, এর প্রকারভেদ, যেভাবে মিথ্যা বলা বৈধ, যেভাবে কথা ঘুরিয়ে দ্ব্যর্থবোধক করে বলা বৈধ ইত্যাদি ব্যাপারে চমৎকার আলোচনা করা হয়েছে।
.
❖ অনুভূতি ও মূল্যায়ন:
জবানের গুনাহের উপর এতো উঁচুমানের বই আমার চোখে পড়েনি। প্রতিটি পরিবারে অন্তত একটি কপি থাকা উচিত এই বইটির। মাঝেমধ্যেই রিমাইন্ডার হিসেবে কাজে লাগবে। এটি একবার পড়ে রেখে দেওয়ার বই নয়। নিজের আমলের হিসাব নেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই চোখ বুলানো দরকার। বইয়ের হাদিসগুলো রেফারেন্সসহ উল্লেখিত হয়েছে এবং হাদিসের মানও তুলে ধরা হয়েছে, ফলে বইটি যথেষ্ট সুখপাঠ্য হয়েছে। বিশেষ করে, গিবত ও মিথ্যার অংশটি পাঠককে বেশ তৃপ্ত করবে; পাঠক অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, এটি ইমাম নববির লেখা বই, যাঁর ইলমের স্বীকৃতি দিয়েছেন উম্মাহর সকল ইমাম। বইয়ের অনুবাদ ও সম্পাদনার কাজটিও সুন্দর হয়েছে।
.
❖ বইয়ের একটি নেতিবাচক দিক:
বইটি বাংলাভাষীদের জন্য অনূদিত, সেহেতু আরবি ব্যাকরণগত দু’একটি টপিক না আনলেও চলতো। এছাড়া আরবদের মাঝে প্রচলিত কিছু ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ত্রুটি-বিচ্যুতির আলোচনা বাদ দেওয়া যেতো। এগুলো যদিও কোনোটা আকিদার ত্রুটি আবার কোনোটা বড় গোনাহর ব্যাপার, তবুও এসবের প্র্যাকটিস আমাদের দেশে নেই, আলহামদুলিল্লাহ।