জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুরদের উপর কমিউনিস্ট রাষ্ট্র চীনের দমনপীড়নের অভিযোগ বেশ পুরোনো। বর্তমান শতাব্দীতেও জাতিগত পরিচয়ে নিপীড়নের শিকার তারা। কথায় কথায় নিষিদ্ধ আর সন্দেহ হলেই গ্রেপ্তার। দুনিয়ার অদ্ভুত সব বৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞা হয়তো এখানেই খুঁজে পাওয়া যাবে। গোঁফ ছাড়া দাড়ি রাখা নিষেধ । ১৮ বছরের নিচে পুরুষের মসজিদে প্রবেশে আছে নিষেধাজ্ঞা। মানা আছে নারীদের হিজাব পরার উপরেও। কিন্তু বলা হয়ে থাকে হিজাব উইঘুর নারীদের যতটা না ধর্মীয়, তার থেকে বেশি সাংস্কৃতিক উপাদান। এ ছাড়াও রাস্তায় দলবদ্ধ হয়ে হাঁটা কিংবা টুপি পরতেও মানা এখানে। এমন কি বাচ্চাদের ধর্মীয় নাম রাখার ক্ষেত্রেও আছে নিষেধাজ্ঞা। নিষিদ্ধ ২৯টি ধর্মীয় নাম।
উইঘুরদের ধর্মীয় সকল কাজ দেখা হয় সন্দেহের দৃষ্টিতে। তাই রোযা রাখা কিংবা নামায পড়া এখানে বিশাল সন্ত্রাসী কাজ। ফলে নামায পড়লে কিংবা রোযা রাখার অপরাধে এখানে গ্রেফতার করা হয় নাগরিকদের। চীনা ভাষায় কুরআন অনুবাদের অপরাধে সালিহ হাজিম নামে উইঘুর নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল; যিনি কিছুদিন আগে কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন। আবার আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে দেখা যায় জিনজিয়াংয়ে উইঘুর সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি লম্বা দাড়ি রাখায় তাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে চীনের একটি আদালত। তার স্ত্রীকে দেওয়া হয় দুই বছরের কারাদণ্ড কারণ দাড়ি রাখার বিষয়টি জেনেও কর্তৃপক্ষকে জানায়নি সে! মনে হতে পারে নিজ দেশে পরবাসী এক জাতির গল্প বলা হচ্ছে। কিন্তু এত কিছুর পরেও তারা ভুলে যাননি নিজেদের পরিচয়। বরং শত অত্যাচারের মধ্যেও সব সময় সরব থেকেছেন নিজেদের অধিকার নিয়ে। প্রতিবাদ করেই যাচ্ছেন। লড়াই করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। উইঘুরদের ইতিহাস, সংগ্রাম আর নির্যাতন সম্পর্কে জানতে ডুব দিতে হবে উইঘুরের কান্না বইয়ে।
Reviews
There are no reviews yet.