তোমাকে ভালবাসি হে নবী! (হার্ডকভার)

📚 বই নিয়ে আলোচনা 📚

বই – তোমাকে ভালোবাসি হে নবী!
লেখক – গুরুদত্ত সিং
অনুবাদ – মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ

কিছু বই পড়ার পর অনুভূতি ব্যাখ্যা করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। মানুষ একটা ঘোরের মাঝে চলে যায়। আমিও তেমন ঘোরের মধ্যে থেকেই, এই বইটিকে নিয়ে লিখছি। তবে, এটুকু বলতে পারি, এই বই নিয়ে যা বলব তা-ই কম বলা হবে।

বহু দেশের বহু মাওলানা, আলিম তো নবীজির জীবনী লিখেছেন। কখনো কোনো হিন্দুর( পরে জানতে পেরেছি, উনি শিখ) লেখার কথা শুনেছেন? হয়তো শুনেছেন, হ্যাঁ এই গুরুদত্ত সিংয়ের বইটির কথাই শুনেছেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত এর গভীরতা; এর মাহাত্ম্য বুঝতে সক্ষম হবেন না, যতক্ষণ না আপনি বইটা পড়ছেন।

লেখক তার মনের মাধুরী মিশিয়ে লিখে গিয়েছেন। অনুবাদকও যে সেই মাধুরী ধরে রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, আপনি কোন বই পড়ে কেঁদেছেন, আমি বলব ‘তোমাকে ভালোবাসি হে নবী!’ আমরা যারা জেনারেল লাইনের শিক্ষার্থী তাদের ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’বইয়ে প্রতি শ্রেণিতে মুহাম্মদ (সা.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী থাকে। আমরাও একদম সাল, নাম, হিজরী সব মুখস্থ করে পরীক্ষা দিতে চলে যাই। কিন্তু আমাদের সবার প্রিয় মানুষটির জীবনকে উপলব্ধি করার জন্য ওই লেখাগুলো যথেষ্ট ছিল না।

পৃথিবীর সবচেয়ে মোটা বইটা কিন্তু মহানবী (সা.) এর জীবনী। অন্যান্য জীবনীগুলোও অনেক বড়। তাই, যারা সীরাত পড়তে ছোট বই খুঁজছেন তাদের জন্য বইটি একদম যথার্থ। ছোট হলেও অনেক বড় বড় বইকেও হারিয়ে দেয়ার যোগ্যতা রাখে এ বই, সে ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

লেখকের কলমের ইশক আমাকে বার বার অবিশ্বাস করায়, যে না, এ তো গুরুদত্ত সিং নয়, এ যেন এক ‘আশেকে রাসুল’। আমি জানি না এই লোক পরলোক-গমনকালে কি অবস্থায় ছিলেন, তবে তিনি যে ইসলামের প্রতি একজন অনুরাগী ব্যক্তি ছিলেন তা যারা এই বইটি পড়েছেন খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন।

খুব ভালো বই। সবার প্রতি পড়ার অনুরোধ রইল। এখন থেকে ইনশাআল্লাহ প্রতিবছর অন্তত একটা হলেও সীরাত পড়ার চেষ্টা করব।