অ্যামেরিকায় তেরো সংখ্যাটিকে অশুভ মনে করা হয়। একারণে অনেক বহুতল ভবনের ১৩তম তলাকে বলা হয় ১৪তম তলা । ১৩ তারিখের শুক্রবারকে বিশেষভাবে অশুভ বিবেচনা করা হয় এবং অনেক মানুষ এই দিনে ভ্রমণ কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকেন। এদিনে কোনো অঘটন ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে এই দিনটিকেই দায়ী করা হয়।
অনেকেই ভাবতে পারেন, এই ব্যাপারটি শুধু সাধারণ লোকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ব্যাপারটি আসলে মোটেই তা নয়। যেমন : ১৯৭০ সালে চন্দ্রাভিযানে পাঠানো মহাকাশ যান অ্যাপোলো ১৩ অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। মহাকাশ যানটি পৃথিবীতে ফিরে আসার পর তার ফ্লাইট কমান্ডার দুর্ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, তার আগেই বোঝা উচিত ছিল যে, কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।
তার এ মন্তব্যের কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটি উৎক্ষেপণ করা হয় শুক্রবার গ্রিনিচমান ১৩০০ ঘণ্টার সময়, সেদিনটি ছিল ১৩ তারিখ, আবার নভোযানটির নামও ছিল এ্যাপোলো ১৩।
বাইবেলে বর্ণিত যীশুখ্রিস্টের শেষ নৈশভোজ থেকেই এই বিশ্বাসের উৎপত্তি হয়েছে। এই নৈশভোজে যোগ দিয়েছিল ১৩ জন লোক। এই ১৩ জনের একজন হলো জুডাস, যে যীশুখ্রিস্টের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বলে মনে করা হয়।
কমপক্ষে, দুটি কারণে ১৩ তারিখের শুক্রবারকে বিশেষভাবে অশুভ মনে করা হয়। প্রথমত, এই শুক্রবারেই যীশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল বলে তাদের ধারণা। দ্বিতীয়ত, মধ্যযুগীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, ডাইনীরা শুক্রবারেই তাদের সভা আয়োজন করে থাকে।
এই ধরনের বিশ্বাসের দ্বারা ভালো এবং মন্দ ঘটানোর ব্যাপারে আল্লাহর একচ্ছত্র ক্ষমতায় তাঁর সৃষ্টিকে অংশীদার করা হয়৷
২.
খ্রিস্টান ধর্মে কিছু ব্যক্তিকে কথিত সিদ্ধি লাভের কারণে অতিমাত্রায় ভক্তি ও প্রশংসা করার ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। তারা বিশ্বাস করে যে, এসব লোকেরা অলৌকিক ঘটনা ঘটানোর ক্ষমতা রাখে।
তাদেরকে সাধকের (saint) মর্যাদা দেওয়া হয়। খ্রিস্টান ধর্মের পূর্বে হিন্দু এবং বৌদ্ধ রীতিতে যেসব আধ্যাত্মিক গুরুদেরকে উৎকর্ষের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেছেন বলে ভাবা হতো এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী মনে করা হতো, তাদেরকেও তাদের আধ্যাত্মিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন উপাধি দেওয়া হয়েছে, যেমন, গুরু, সাধু ও অবতার ইত্যাদি।
এসব উপাধি সাধারণ মানুষকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, তারা এসব গুরু, সাধকদেরকে স্রষ্টা ও মানুষের মাঝে সুপারিশকারী বানিয়ে নিয়েছে; এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেবতা হিসেবে তাদের পূজা করার দিকে ঠেলে দিয়েছে।
এ কারণে এসব ধর্মে সাধুসন্তদের কাছে সাধারণ মানুষ ভক্তিভরে প্রার্থনা করে থাকে। পক্ষান্তরে, ইসলাম স্বয়ং নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেরও মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করার বিরোধিতা করে। এ ব্যাপারে তিনি নিজেই বলে গেছেন, ‘আমার মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা করো না, যেভাবে খ্রিস্টানরা ঈসা ইবনে মারইয়ামের ক্ষেত্রে করেছে। নিশ্চয়ই আমি কেবলই একজন বান্দা, তাই আমাকে বরং আল্লাহর বান্দা এবং রসূল বলেই ডেকো।’
৩.
পৃথিবীর সব ধর্মের লোকেরাই ‘উপরওয়ালা’ একজন আছে বলে কমবেশ বিশ্বাস করে। কিন্তু কী তাঁর নাম, কেমন তাঁর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য। কীভাবে তা জানা যাবে, তাঁকে জানা যাবে; কীভাবে তাঁকে মানতে হবে এখানেই যত দ্বন্দ্ব আর সংঘাত। উৎপত্তি ধর্মের নামে অনেক অধর্মের।
এ সংঘাতের পরিণতিতে খোদ ইসলাম ধর্মের অনুসারী দাবিদারদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে নানান মত। কিন্তু এটি এমন কোনো হাল্কা বিষয় নয় যে, যেকোনো একটি মত মেনে চললেই হলো; বরং এক্ষেত্রে সত্য একটিই এবং কেবল সেই একটি সত্যকেই মানতে হবে।
এ বিষয় নিয়েই গবেষক ও লেখক ড. বিলাল ফিলিপসের বই এক।
মুহাম্মদ রুবেল মিয়া –
বইয়ের নাম : এক
লেখক : ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস
অনুবাদক : আব্দ আল-আহাদ
সম্পাদক : আবু তাসমিয়া রফিক আহমদ
শার’ঈ সম্পাদক : ড. মুহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
প্রকাশনায় : সিয়ান পাবলিকেশন
মুদ্রিত মূল্য : ৪৫০ টাকা
বিষয় : ঈমান আকিদা ও বিশ্বাস
তাওহিদ অনেক বড়ো এক সম্বল। একমাত্র তাওহিদে বিশ্বাসীরাই জান্নাতে প্রবেশ করবে। অবশ্য সে তাওহিদ হতে হবে ভেজালমুক্ত, বিশুদ্ধ। বিশুদ্ধ তাওহিদের জ্ঞানই মানুষকে তার ঈমান আমল ঠিক রাখতে অনুপ্রেরণা জোগায়। ইহকালীন এবং পরকালীন সফলতা লাভ করতে হলে বিশুদ্ধ তাওহিদের বিকল্প নেই। আমার তাওহিদে বিশ্বাস ভেজালমুক্ত এবং বিশুদ্ধ কিনা, তা জানার জন্য প্রয়োজন তাওহিদের জ্ঞান, যা প্রত্যেকটি মুসলিমের মধ্যে থাকা অপরিহার্য।
পারিভাষিক অর্থে তাওহিদ মানে হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদের বিশ্বাস। যুগে যুগে নবি-রাসুলদের দাওয়াতের মূলকথা এটাই ছিলো যে আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরীক নেই।
পৃথিবীতে আমরা প্রায় দেড়শো কোটির উপর মুসলমান থাকলেও আমাদের শতকরা ৭৫ জনেরই তাওহিদের জ্ঞান নেই। যাদের আছে তাদের মধ্যেও রয়েছে বিশুদ্ধ তাওহিদের অভাব। আমাদের এই ভেজাল বিশ্বাস দিয়ে জাহান্নাম পার হওয়া কি আদৌ সম্ভব?
সেজন্যই প্রয়োজন তাওহিদ সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞানলাভ করা। যেনো আমার তাওহিদে বিশ্বাস ভেজালযুক্ত না হয়ে পড়ে, আমি যেনো জান্নাত থেকে দূরে সরে না যাই। মুসলিম সমাজে বিশুদ্ধ তাওহিদে বিশ্বাস প্রচারের উদ্দেশ্যে বিশিষ্ট দায়ী ড. আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস রচনা করেছেন “এক” বইটি।
বইটিতে ঈমান আকিদা, বিশুদ্ধ তাওহিদ ও ভেজাল শির্ক নিয়ে রয়েছে বিস্তারিত আলোচনা। যা আমাদের জ্ঞানের পরিধিকে বৃদ্ধি করবে এবং আমাদের তাওহিদে বিশ্বাসকে করবে ভেজালমুক্ত।
বইয়ের আলোচ্য বিষয় :
ঈমান আকিদা ও বিশ্বাস নিয়ে রচিত “এক” বইটিতে রয়েছে এগারোটি অধ্যায়। বইয়ের এগারোটি অধ্যায়েই আলোচনা করা হয়েছে তাওহিদ, ঈমান, আকিদা, তাওহিদের বিপরীত শির্ক, বিভিন্ন শির্কি বিশ্বাস, সুলক্ষণ-কুলক্ষণ, যাদুটোনা, জ্যোতিষশাস্ত্র, ভাগ্য গণনা ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোচনা। এছাড়াও আলোচনা করা হয়েছে আল্লাহ তাআলার উর্ধ্বে থাকা, তারপরও দর্শন লাভ, পীরপূজা-মাজারপূজাসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর।
বইটি মুসলমানদের তাওহিদে বিশ্বাসের বিশুদ্ধতা আনতে এবং ভেজাল দূর করতে রচিত হয়েছে। মুসলমানদের তাওহিদে বিশ্বাস কেমন হবে, কোন কোন বিষয় কিভাবে তাদের তাওহিদের ক্ষতি করে এবং ধ্বংস করে দেয় ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করাই বইটির মূল বিষয়বস্তু।
বইটি পড়ার প্রয়োজনীয়তা :
আমরা মুসলিম। আমরা এজন্যই মুসলিম যে, আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরীক নেই। তিনি অবিনশ্বর ও চিরঞ্জীব সত্তা। ইবাদাত একমাত্র তাঁর জন্যই করতে হবে, কারণ তিনিই আমাদের মা’বুদ।
কিন্তু অনেক মুসলিম সমাজে এমন অনেক বিষয় বিশ্বাস করা হয়, যেগুলো তাওহিদে বিশ্বাসের বিপরীত, যা মুসলিমের তাওহিদকে দুমড়ে-মুচড়ে দেয়। এসকল বিশ্বাস থেকে তাঁরা বেরোতে পারেনা, কারণ যুগ যুগ ধরে তাঁরা এসকল বিশ্বাস লালন করে আসছে। উপরন্তু তাদের কাছে তাওহিদের মূল জ্ঞান কেউ পৌঁছিয়েও দেয়নি। ফলে মুসলিমসমাজ দাবি করা সত্ত্বেও এ সমাজে এমন অনেক বিষয় চোখে পড়ে যেগুলো সুস্পষ্ট শির্কের লক্ষণ।
এজন্যই তাওহিদের সঠিক জ্ঞান লাভ করে সেগুলো প্রচার করা আমাদের কর্তব্য। কারণ, তাওহিদের জ্ঞান শিক্ষা করা যেমন আমার জন্য ফরজ তেমনি মুসলিম ভাইদের জাহান্নামের হাত থেকে বাঁচানোও আমার উপর ফরজ। সে উদ্দেশ্যেই লেখক আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের “এক” বইটি রচনা করা। এবং আমাদের সবার উচিত বইটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে মানুষের কাছে তা প্রচার করা।
মন্তব্য :
সিয়ানের বইগুলো বরাবরই হয় মাস্টারপিস এবং চোখধাঁধানো। যেমন তার প্রচ্ছদ, তেমনি তার পৃষ্ঠা সজ্জা। কিন্তু এতোসব সাজসজ্জার ভিতরে বইয়ের মূল্য এতো বেশি রাখা হয় যে আমার মতো ছাত্র এবং সাধারণ মানুষের জন্য তা ক্রয় করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। “এক” বইটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বই। প্রকাশনীর উচিত ছিলো বইটির অধিক প্রচারের জন্য স্বল্পমূল্য রেখে বইটিকে আম করে দেয়া। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বই শুধু দামের কারণে মানুষ কিনে পড়েনা। একই কথা খাটে “কুরআন বুঝার মূলনীতি” এবং “হাদিস বুঝার মূলনীতি” বইদুটিতেও।
সিয়ান পাবলিকেশনের কাছে অনুরোধ থাকবে গুরুত্বপূর্ণ এই বইগুলোর মূল্যহ্রাস করে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়ার সুযোগ করে দিন।
আল্লাহ তাআলা আপনাদের কাজে বারাকাহ দান করুন, আমিন।
Meher Afroz –
📔বুক রিভিউ📗
বইঃ এক
লেখকঃ ড. বিলাল ফিলিপস
অনুবাদকঃ আব্দ আল- আহাদ
সম্পাদনাঃ আবু তাসমিয়া আহমদ রফিক
শার‘ই সম্পাদনাঃ ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
প্রকাশনায়ঃ সিয়ান পাবলিকেশন
মুদ্রিত মূল্যঃ ৪৫০ টাকা
ড. আবু আমীনাহ বিলাল ফিলিপস রচিত ‘Fundamentals of Tawheed’— এর চতুর্থ ‘বাংলা অনুবাদ গ্রন্থ হলো— ‘এক’। আল- কুরআনের‘ পর এই
‘তাওহীদ বিষয়ক বইটা’ই হলো একটি; যা এতগুলো ভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এ বইটিতে আলোচিত হয়েছে– তাওহীদ ও শির্কের পরিচয় এবং প্রকারভেদ সম্পর্কে।আরো আলোচিত হয়েছে আদম আঃ এর সাথে আল্লাহর করা অঙ্গীকার গুলো।যেমন: বারযাখ, সৃষ্টির পূর্বাবস্থা, ফিতরাহ্ ইত্যাদি। তাছাড়া জাদুটোনা, শুভ অশুভ লক্ষণ, ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষশাস্ত্র, কবরপূজা, পির- আউলিয়া পূজা সহ বিভিন্ন বিষয়ে সংক্ষিপ্ত অথচ অকাট্য দলিল- প্রমাণের মাধ্যমে যৌক্তিক আলোচনা।এই বইটি একজন পাঠকের তাওহীদ বিষয়ক ভ্রান্ত ধারণাগুলোর জট খুলতে সহায়ক হবে।ইন শা আল্লাহ।
বই থেকে কিছু অংশঃ—
‘ জ্যোতিষশাস্ত্রের কোনো শাখায় যে জ্ঞান অর্জন করল, সে যেন জাদুবিদ্যারই একটি শাখায় জ্ঞান অর্জন করল।তার এই জ্ঞান সে যতই বাড়াবে, তার পাপও সে ততই বাড়াবে।’
পৃষ্ঠা নং— ১১৮.
‘জ্যোতিষশাস্ত্র বিশ্বাস এবং রাশি পরীক্ষা করা সুস্পষ্টভাবে ইসলামি চেতনা ও আদর্শের পরিপন্থী। ঈমানের প্রকৃত স্বাদ পায়নি এমন অন্তঃসারশূন্য আত্মার লোকেরাই কেবল এইসব পথ খুঁজে ফেরে। মূলত এসব পথ ও পন্থা হলো আল্লাহর নির্ধারিত নিয়তি থেকে পালিয়ে বাঁচার এক ব্যর্থ চেষ্টা। ’
পৃষ্ঠা নং—১২৫
‘ যেসব জিন সাপ এবং কুকুরের রূপ ধারণ করে থাকে তারা ব্যতীত জিনদের অন্যান্যরা সবাই মূলত অদৃশ্য। তবে তাদের কেউ কেউ মানুষের আকৃতিসহ যেকোনো রূপ ধারণ করতে পারে।’
পৃষ্ঠা নং—১৩৪.
‘ সত্যিকার জিনের আসর এবং এ থেকে উদ্ভূত অন্যান্য অসুস্থতার জন্য ঝাড়ঁফুক একটি বৈধ চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ইসলাম স্বীকৃত। শর্ত হলো- এই ঝাড়ঁফুক হতে হবে কুর’আন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী।’
পৃষ্ঠা নং—১৩৮.
‘মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসার উপর ভিত্তি
করেই মূর্তিপূজা আরম্ভ হয়েছিল।’
পৃষ্ঠা নং—২২৬.
পাঠ্যনুভূতিঃ
প্রকাশক যখন বলেন, ‘মিশনারি স্কুলে পড়ুয়া গিটারপ্রেমী বালক এই বইটি পড়ে নিজেকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে ফেলতে সক্ষম হন।তখনই বুঝে যাই বইটি কতটা যুক্তিতর্ক এবং সত্য স্বাক্ষী বহণ করছে।
গতবছরের কথা। এক ফ্রেন্ডের মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসে রাতের আকাশে উঠা ‘ওরিয়েন/কালপুরুষ’ সম্পর্কে জেনেছিলাম।তারপর থেকেই রাতের জ্বলজ্বলে তাঁরাদের প্রতি কেমন যেন একটা আকর্ষণ কাজ করত।ইউটিউব/ গুগুলে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম[আল্লাম্মাগফীরলি ]। চার-পাঁচটা পিডিএফ বই নামিয়েও ফেললাম।কিন্তু পিডিএফের প্রতি অনিহা থাকার কারণে সেসব আর পড়া হয়ে উঠেনি[আলহামদুলিল্লাহ]।
হঠাৎ, ‘এক’ বইটি পড়ে জানতে পারলাম জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা ইসলামে হারাম।শুধু তাই’ই নয় এ বিষয়ে বইপুস্তক কেনা- এসব পড়াও এক প্রকার সীমালঙ্ঘন, কুফুরি।
এছাড়াও বইটি পড়ে আরো খুঁটিনাটি বিষয় বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ।
মন্তব্যঃ
⊕ বইয়ের আভ্যন্তরীন দিক থেকে আমার চোখে কোনো খুঁত ধরা পড়েনি।তবে বাহ্যিকভাবে মনে হলো প্রচ্ছদের ডিজাইনটা আরো একটু সুন্দর করলে ভালো হত।
রিভিউ দাতাঃ Meher Afroz
Umme Suraiya –
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
বই: এক
লেখক :ড.আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপস
প্রকাশনী:সিয়ান পাবলিকেশন
মুদ্রিত মূল্য :৪৫০ টাকা
★প্ররম্ভিকা:
———————–
যুগে যুগে মহান সত্ত্বার এককত্ব থেকে আামাদেরকে সরিয়ে দিতে ষড়যন্ত্রের অন্ত নেই। কালের পরিক্রমায় কূটকৌশল, উপায়-উপকরন কিংবা রূপরেখা বদলায়।কিন্তু শয়তানের লক্ষ্য স্থীর। আামাদেরকে জাহান্নামে তার সঙ্গী বানানো। তাই নিজেকে তার ফাঁদ থেকে বাঁচাতে হলে জানতে হবে আল্লাহর এককত্ব বলতে কী বোঝায়?কিভাবে তা অক্ষুণ্ন রাখা যায় বলনে-করনে-মননে?
★লেখক পরিচিতি :
——————————-
আবু আমিনা বিলাল ফিলিপ্স (জন্ম ডেনিস ব্র্যাডলি ফিলিপ্স, ৬ জানুয়ারি ১৯৪৬) হলেন একজন কানাডীয় সালাফি মুসলিম শিক্ষক, বক্তা, লেখক এবং ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও আচার্য যিনি কাতারে বসবাস করেন।
★পাঠপর্যালোচনা ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা সমূহ :
———————————————————–
বইটি সর্বমোট এগারোটি অধ্যায় রয়েছে। যার প্রতিটি পাতায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং বিস্তারিত আলোচনা। নিচে সংক্ষেপে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরা হলো-
(১)তাওহীদের প্রকারভেদ
(২)শির্কের প্রকারভেদ
(৩)জাদুবিদ্যা
(৪)ভাগ্য গননা করা
(৫)কবর পূজা ও পীর পূজা
★পাঠ প্রতিক্রিয়া:
—————————-
বইটি পড়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলাম।বারবার মনে পড়ছিল প্রিয় রাসূলের সেই হাদিস খানা-“যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ইমান থাকবে সে জান্নাতে যাবে”।অথচ এই ফিতনার যুগে সত্যিকারের সরিষা পরিমাণ ইমান ধরে রাখাও ভীষণ কঠিন।
★আমার মতামত :
————————–
ড.আবু আমিনা বিলাল ফিলিপস স্যার হচ্ছেন অনলাইন ইসলামিক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা।তার লেখা বই যে অতি মাত্রায় গভীর জ্ঞান সম্পূর্ণ একটি বই হবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।বইটি না পড়লে হয়তো জানতেই পারতাম না মানুষ ঠিক কত উপায়ে, কত ভাবে নিজের অজান্তে ও শির্ক করে। বইটি বাস্তব জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
★শেষ কথা:
———————
বইটি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া সকলের জন্য যারা এই বইটি আমাদের হাত পর্যন্ত সাহায্য করেছেন।
রিভিউ দাতা:Umme Suraiya
Mahbuba Islam Disha –
প্রত্যেক মুসলিমের তাওহীদ (আল্লাহর একত্ববাদ) সম্পর্কে জানা আবশ্যক। কারণ তাওহীদ সম্পর্কে না জানলে আমরা সহজেই শির্কে জড়িয়ে যাবো।শির্ক কাকে বলে, শির্ক এর প্রকারভেদ গুলো কি কি। শির্ক থেকে বেচেঁ থাকার একমাত্র উপায় হলো তাওহীদ সম্পর্কে জানা। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন” নিশ্চয়ই শির্ক চরম জুলুম”। শির্কের চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের যে কোন গুনাহ আল্লাহ তা‘আলা ইচ্ছে করলে ক্ষমা করে থাকেন। কিন্তু শির্ক ক্ষমা করেন না।
তাই শির্ক এর ব্যপারটি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বইটিতে তাওহীদের প্রকারভেদ, শির্কের প্রাকারভেদ,অশুভ লক্ষণ, ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষশাস্ত্র, জাদু বিদ্যা, পীর পূজা ও কবর পূজা সহ আরো বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
লেখক অত্যন্ত সার্থকভাবে অল্প কথায় তবে ভীষণ অর্থবহ এই ব্যাপার গুলো বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
এতটা সাবলীল ভাষায় লেখা যা সহজেই সকলের বোধগম্য।
সিয়ান পাবলিকেশনও যথেষ্ট সুন্দর করে সবার সামনে সেটা উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।
একবার পড়ে শেষ করে রেখে দিলাম এটা সেই ধরণেরর বই না। বইটা পড়ে আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে কোথায় কোথায় শির্ক এর শিকড়। খুঁজে বের করে তা উপড়ে ফেলতে হবে আর সেক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দেবে এই বই ।ইনশাআল্লাহ।