পুরো পাশ্চাত্য সভ্যতা যে দার্শনিক সত্তার উপর দাঁড়িয়ে আছে, তাকে বলা হয় হিউম্যান বিয়িং। পশ্চিমা সামাজিক বিজ্ঞানগুলো এই নির্দিষ্ট সত্তাকে নিয়েই কাজ করে। সামাজিক বিজ্ঞানগুলোর মত ব্যক্তির এই নির্দিষ্ট ধারণা এবং সংজ্ঞাও এনলাইটেনমেন্টের ফসল। হিউম্যান বিয়িং নিছক কোনো মানুষ না। সে এক নির্দিষ্ট চিন্তার, বিশেষ ধরণের মানুষ। হিউম্যান বিয়িং এমন কেউ, যে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে স্বতঃসিদ্ধ সত্য হিসেবে মেনে নেয়। যে নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অমুখাপেক্ষী মনে করে। বিভিন্ন জীবনব্যবস্থা ও দর্শনকে সে মূল্যায়ন করে কেবল একটি মাপকাঠি দিয়ে। সেটা হলো মানবিক চাহিদা। মানবিক চাহিদা ও কামনা-বাসনার সীমাহীন পূর্ণতাই এই হিউম্যান বিয়িং-এর জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।
হিউম্যান বিয়িং হলো পাশ্চাত্যের ক্রীতদাস। সে পাশ্চাত্যের দাসত্বকেই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে। সে নিজেকে সব জায়গায় একজন পশ্চিমা দাস হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করে। চেতনে কিংবা অবচেতনে সে পুঁজিবাদের গোলামি করে।
গভীর দৃষ্টি লাগবে না, সাধারণ দৃষ্টি মেললেই দেখা যাবে আপনার আশেপাশে সব হিউম্যান বিয়িং-এর বসবাস। আল্লাহ তাআলা যে সত্তা দিয়ে আমাদের প্রেরণ করেছেন দুনিয়ায়, তারা সে সত্তা প্রত্যাখ্যান করে বসে আছে। আমাদের ভাইবোন, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব আশ্চর্যজনকভাবে সবাই হিউম্যান বিয়িং সাজতে চাচ্ছে। আর আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় পলিসি ও মিডিয়ার আয়োজন সবকিছুই হিউম্যান বিয়িং-এর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনা তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
নিশ্চিতভাবেই এই মানবসত্তা রবের “উবুদিয়্যাত”কে প্রত্যাখ্যান করে। আর পাশ্চাত্যের দাসত্বকে বরণ করে নেয়। এমন সত্তাকে আদর্শিকভাবে মুসলমান বলা যায় না। আলী মিয়া নদভী রহ.-এর ভাষায়, তাকে চেতনাগতভাবে মুরতাদ বলা যেতে পারে। পুরো মুসলিম বিশ্ব আজ আদর্শিকভাবে এই রিদ্দাকে গ্রহণ করে নিয়েছে। আজ উম্মতের মাঝে আবু বকরদের খুবই প্রয়োজন। যারা মুসলিম সমাজ ও মনন থেকে এই রিদ্দার মূলোৎপাটন করবেন। এই গোটা ব্যাপারটি স্পষ্ট করেছে হিউম্যান বিয়িং : শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব।
Din Muhammad Sheikh –
পাশ্চাত্যের সংজ্ঞানুযায়ী ‘হিউম্যান বিয়িং’ বলতে আমরা যদি এমন এক শ্রেণির জীবকে বুঝে থাকি, যারা স্ব-স্ব সিদ্ধান্ত নিতে পূর্ণ স্বাধীন, স্ব-স্ব ভালো-মন্দ বুঝতে পূর্ণ সক্ষম, তাহলে এ বুঝের ফলও তাই হবে, যেমনটা হয় পাশ্চাত্যে। এ বুঝের ফলে আমরাও ওদের চাতুর্যময় পরিভাষাগুলোর (স্বাধীনতা, সমতা, উন্নতি, মানবতাবাদ ইত্যাদি) সংজ্ঞা এমনটাই ধরে নেবো, যেমনটা ওরা বুঝিয়ে থাকে। অথচ ইসলামের অবস্থান ওসবের ঠিক বিপরীত। ‘হিউম্যানিজম’ এর সংজ্ঞায় পাশ্চাত্য ‘হিউম্যান বিয়িং’কে নিজ ইচ্ছাপুরণে স্বাধীন জীব সাব্যস্ত করে। অপরদিকে ইসলাম ‘হিউম্যান বিয়িং’কে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পিত দাস হিসেবে পরিচয় দেয়।
মূলত আমরা নিজেদেরকে ভৃত্য মনে করি, আর ওদেরকে ভাবি মনিব। ভৃত্যের মতো ‘আজ্ঞাবহ’ হয়ে ওদের সব কথা মেনে নিই। ওদের কথা-কাজকে অলঙ্ঘনীয় মনে করি। আর এ পরাজিত মানসিকতা থেকেই আমাদের মুসলমানদের মধ্যে জন্ম নেয় ইরতিদাদ-ইলহাদ-নাস্তিক্যবাদ।
আসলে ওরা আমাদের চিন্তাশক্তিকে বিকলাঙ্গ করে দিয়েছে, আমার বোধশক্তিকে শেকলাবদ্ধ করে রেখেছে, আমাদের চোখে পরিয়ে দিয়েছে ওদের রঙিন চশমা, যে চশমায় পাশ্চাত্যের সবই দেখা যায় রঙিন ও স্বপ্নিল আর ইসলামকে মনে হয় অগ্রহণীয় বা অপ্রযোজ্য। তাই তো ইসলামকে আমরা মূল থেকে বুঝতে পারি না।
পাশ্চাত্য এবং ইসলামের বিরোধটা একদম মূলেই – আকিদার জায়গায়। এ বিরোধ বুঝতে হলে প্রথমেই চিন্তাশক্তিকে এ পথে চালিত করতে হবে, বোধশক্তিকে উন্মুক্ত করতে হবে এবং চোখ থেকে খুলে ফেলতে হবে ‘পাশ্চাত্যের চশমা’। ইসলামের বিরুদ্ধে ওদের অভিযোগগুলোর ব্যাপারে কেবল ডিফেন্সিভ জবাবই মুক্তির পথ নয়, বরং ওদের ‘উন্নতির’ প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে অফেন্সিভ জবাবই কাম্য। তবে এ কাজটা কঠিন, এ পথটা বন্ধুর। আর এ বন্ধুর পথে আমাদের ‘গাইড’ হিসেবে সহায়তা করবে ইফতেখার সিফাত ভাইয়ের ‘হিউম্যান বিয়িং : শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব’ বইটি, ইনশাআল্লাহ।
▪️ যা যা আছে বইটিতে :
বলা যায়, যেকোনো বইয়ের সূচীপত্রই উক্ত বইয়ের আদর্শ প্রিভিউ। এ বইটির সূচীপত্রে নজর বোলালেই আমরা বুঝতে পারবো, কী কী বিষয়কে কেন্দ্র করে বইটির আলোচনা এগিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বইটি আমাদেরকে পশ্চিমা সভ্যতার অসারতা বুঝতে, আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্বের স্বরূপ উন্মোচিত করতে এবং ওদের প্রণীত বিভিন্ন পরিভাষা ও মতবাদের ইসলামি দৃষ্টিকোণ পরিস্কার করতে সাহায্য করবে।
পাশ্চাত্য সভ্যতার শেকড় – গ্রীক ও রোমান সভ্যতা ও এদের সংস্কৃতি আলোচিত হয়েছে এ বইয়ের শুরুর দিকে; পরিভাষার মারপ্যাঁচে ফেলে ওরা কীভাবে আমাদেরকে বোকা বানিয়ে ওদের স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছে, তাও উপস্থাপিত হয়েছে যৌক্তিকভাবে।
এছাড়াও বইটিতে ফুটে উঠেছে মধ্যযুগ ও এর পরবর্তী রেনেসাঁ আন্দোলন, ফরাসি বিপ্লব, উনবিংশ শতাব্দী ও বিংশ শতাব্দীর চিত্র।
‘হিউম্যানিজম’ এর বস্তুবাদী সংজ্ঞার ওপর ভিত্তি করে পশ্চিমারা যেসব ‘মুখরোচক’ ও ‘শ্রুতিমধুর’ পরিভাষা ব্যবহার করে থাকে এবং এসবের বস্তুবাদী সংজ্ঞা দাঁড় করায়, সেসবের প্রকৃত সংজ্ঞা-স্বরূপ এবং সেগুলোর ইসলামি দৃষ্টিকোণও উন্মোচিত হবে অত্র বইয়ে – যেমন : স্বাধীনতা, সমতা, উন্নতি।
পাশ্চাত্য সভ্যতা সরাসরি নিজেকে ‘ধর্ম’ হিসেবে ঘোষণা দেয়নি। তবে বিভিন্ন ‘ইজম’ বা মতবাদ-মতাদর্শের ছদ্মাবরণে তা স্বতন্ত্র ধর্ম হিসেবেই আত্মপ্রকাশ করেছে, যদিও পশ্চিমারা তা স্বীকার করে না। তেমনই কিছু মতবাদ – ফেমিনিজম, হিউম্যানিজম, ইন্টারফেইথ, ফ্রিথিংকিং, সেক্যুলারিজম, টলারেন্স, ল’ অভ পিপলস ইত্যাদির মুখোশও উন্মোচন করা হয়েছে এ বইটিতে; পাশাপাশি দেখানো হয়েছে ইসলামের সাথে এগুলোর প্রকৃত সংঘাত।
মুসলিমদের মনস্তত্ত্ব বোঝার জন্য, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে আমাদেরকে পরাজিত করার জন্য এবং আমাদের মধ্যকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির মুসলিমদের সাথে ওদের আচরণের ভিন্নতা নিরূপণের জন্য র্যান্ড কর্তৃক মুসলিমদের ৪টা শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। সেই ৪ শ্রেণি সম্পর্কেও আলোচনা আছে বইটির শেষের দিকে।
▪️ বইটির বিশেষত্ব :
বইটিতে লেখক তাঁর লেখনীর পরতে পরতে এনেছেন তথ্যসূত্র, সংযোজন করেছেন প্রয়োজনীয় টীকাটিপ্পনী। এতে করে এর আলোচ্য বিষয় হয়েছে আরো গ্রহণযোগ্য, বইটি হয়েছে আরো মানসম্মত।
প্রচ্ছাদটা বেশ প্রাসঙ্গিক। বইটির বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রচ্ছদে। পৃষ্ঠামান বেশ। তবে বাইন্ডিং আরেকটু ভালো হতে পারতো।
ইতোমধ্যেই নাশাত পাবলিকেশন পাঠকমহলে বেশ সুনাম কুড়িয়ে ফেলেছে। এ বইটি তাদেরকে নিয়ে গেছে জনপ্রিয়তার শীর্ষ স্তরে।
▪️ বইটি কেন সংগ্রহ করবেন :
আপনি কি পাশ্চাত্য সভ্যতার অসারতা বুঝতে চান? ওদের প্রণীত মুখরোচক পরিভাষা বা মতবাদের স্বরূপ দেখতে চান? মুসলমানদের মনস্তাত্ত্বিক-বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্বের কারণ ও করণীয় জানতে চান? তাহলে বইটি আপনার সংগ্রহ করা জরুরি।
বইটি লিখেছেন ইফতেখার সিফাত ভাই। সম্পাদনায় শাইখ আফসারুদ্দীন এবং সহ-সম্পাদনায় ডা. শামসুল আরেফীন শক্তি ভাই। সচেতন পাঠক মাত্রই এ নক্ষত্রত্রয় সম্পর্কে অবগত। সুতরাং পাঠকের নির্দ্বিধায় এ বইটি সংগ্রহ করতে কোনো বাধা নেই।
▪️ একনজরে বইটি :
বই : হিউম্যান বিয়িং : শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব
লেখক : ইফতেখার সিফাত
সম্পাদক : শাইখ আফসারুদ্দীন
সহ-সম্পাদক : ডা. শামসুল আরেফীন
প্রকাশনী : নাশাত পাবলিকেশন
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১৬০
প্রচ্ছদ মূল্য : ২২০/-
Farzana Ashrafi –
রং করা পুরনো দেয়ালে নতুন আরেকটা রং ঠিকমত বসতে চায় না। হয় নতুন রংটা ঠিকমত ফুটে ওঠেনা নতুবা পুরনো আর নতুন রংয়ের মিশেলে বিদঘুটে কোন ‘শেড’-এর সৃষ্টি হয়। আর তাই নতুন রংয়ে দেয়ালটাকে রাঙানোর জন্য কিছু ঘষা-মাজার পর সাদা চুন দিয়ে পুরো দেয়ালটা লেপে দেয়া হয়। এর ওপর নতুন রং করলে তবেই সেটা পারফেক্ট হয়। পুরনো রংধরা দেয়ালকে নিউট্রাল করার এই প্রক্রিয়াটাকে রংয়ের কারিগররা বলেন ‘হোয়াইট ওয়াশ’।
আমাদের মনটাও তেমন। পাশ্চত্য ভাবধারা পুষ্ট শিক্ষাব্যবস্থার ‘প্রোডাক্ট’ হিসেবে পশ্চিমের ঠিক করে দেয়া নীতি-নৈতিকতা আর জীবনদর্শনের স্ট্যান্ডার্ড দিয়ে যখন আমরা ইসলামকে মাপতে যাই তখনই তৈরি হয় সমস্যা। মনের মধ্যে বিজবিজ করতে থাকে নানা অবিশ্বাস আর বিদ্রোহের বুদ্বুদ। ইসলামের নানা সমস্যা আর সীমাবদ্ধতা চোখে পড়তে শুরু করে। ফলাফল হিসেবে কেউ একেবারেই ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়। কেউবা ইসলামের বিধি-বিধান গুলোকে ‘রিফর্ম’ করতে উঠে পড়ে লাগে। এই বিষাক্ত চেতনার বিষবাষ্প থেকে ‘জেনারেল লাইন’ বা মাদ্রাসা পড়ুয়া কেউ-ই আজ আর মুক্ত নয়।
তাহলে এ থেকে মুক্তির কি কোন উপায় নেই?
উপায় একটাই। আমাদের মননে -মগজে ‘ধ্রুব সত্য’-র মাপকাঠি হিসেবে গেঁথে দেয়া পশ্চিমা সমাজ এবং জীবন দর্শনের রোমান্টিক-মিথ্যা ‘বুদ্বুদ’ টাকে ফাটিয়ে দেয়া। আর এজন্য প্রয়োজন দুনিয়াকে সুখের স্বর্গ বানানোর দাওয়া হিসেবে ওরা যেসব ‘ইজম’ গুলো প্রচার করে তার নৈতিক এবং যৌক্তিক অসাড়তা গুলো চিহ্নিত করে মূলে কুঠারাঘাত করে ছিন্ন-ভিন্ন করে দেয়া।
আমাদের পশ্চিমা চিন্তা-চেতনায় ধোয়া মগজটাকে ‘হোয়াইশ ওয়াশ’ দিতে ‘নাশাত পাবলিকেশন নিয়ে এসেছে ‘হিউম্যান বিয়িং: শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব’। লিখেছেন ইফতেখার সিফাত। লেখক স্যোশাল মিডিয়াতে ইসলাম সচেতন মানুষের কাছে বেশ পরিচিত মুখ। সম-সাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গে লেখালেখি করেন। পূর্বে প্রকাশিত তার ‘ইসলামী ব্যাংক: ভুল প্রশ্নের ভুল উত্তর’ বইটি আগ্রহী পাঠকের দৃষ্টি কেড়েছে।
কী নিয়ে লেখা ‘হিউম্যান বিয়িং: শতাব্দীর বুদ্ধিবৃত্তিক দাসত্ব’ ? বইটির সম্পাদক মুহাম্মাদ আফসারুদ্দিন এর কলম থেকে জানা যাচ্ছে, “মুহতারাম ইফেতখার সিফাত এই বইয়ে পশ্চিমা সভ্যতার ভেতর-বাহির নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের আকিদা, বিশ্বাস, দর্শন, পরিভাষাগত জটিলতা এবং ইতিহাস ও তার উৎস গুলো বেশ চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। পশ্চিমা সভ্যতার বুনিয়াদি বিশ্বাস কেন ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সে বিষয়ে দলিল পেশ করেছেন দ্বীনি ইলমের উৎস ও বাস্তবতার নিরিখে। একই সাথে তিনি পশ্চিমা সভ্যতার ভিত হিউম্যান বিয়িং ও তার ইতিহাস থেকে জন্ম নেওয়া স্বাধীনতা, সমতা ও উন্নতির স্বরুপ ও এ বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন। দেখিয়েছেন এই সভ্যতার মানবিক হয়ে ওঠার পেছনের অসারতাগুলো। তিনি খুব সুক্ষভাবে পশ্চিমা সভ্যতার বেঁধে দেওয়া মানদন্ডকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে সব কিছুকে মূল্যায়ন করার; বিশেষত ইসলামের আহকাম ও বিধানেক মূল্যায়ন করার প্রবণতাকে চিন্হিত করেছেন। খুব গভীর থেকে দেখিয়েছেন কীভাবে একটি মুসিলম মানস পশ্চিমা সভ্যতা দ্বারা প্রতারিত হয় এবং আখেরে নিজের ঈমান-আমল হারিয়ে বসে। পাশাপাশি হাজারো বাহ্যিক উন্নতির পরেও বিশ্বাস ও বিকৃতির ফলে একটি সভ্যতা কীভাবে মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় সেদিক নিয়েও পেশ করেছেন পূর্ণ দিকনির্দেশনা।”
অর্থাৎ বলা যেতে পারে, আমাদের মুগ্ধতায় আচ্ছন্ন মগজ থেকে পাশ্চত্য প্রেমকে শিকড়-বাকড় সহ উপড়ে দিতেই এই বইয়ের অবতারণা।
বইটি কেন পড়তে হবে? ঔপনিবেশিক প্রভুত্বের সুযোগে বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে পাশ্চত্য সভ্যতা। স্বাধীনতা, সমতা, উন্নয়ন, বিজ্ঞানের ফাঁকা বুলি আওড়ে নিজেকে চাপিয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে। তাদের এই তথাকথিত শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে শুধুমাত্র ইসলাম। তাই ইসলামের সাথে পাশ্চত্যের দ্বন্দ্ব পরিণত হয়েছে পশ্চিমা সভ্যতার টিকে থাকার লড়াইয়ে। এই মন:স্তাত্ত্বিক যুদ্ধে জিততে হলে প্রতি আক্রমণ করতে হবে। আর সেই আক্রমণের প্রথমেই যদি তাদের ‘সেক্যুলার লিবারেল হিউম্যানিজম’ ধর্ম বিশ্বাসটাকে ধ্বসিয়ে দেয়া যায় তাহলে বাকি কাজটা সহজ হয়ে যাবে। সেই কাজের প্রস্তুতি হিসেবেই বইটি সবার পড়া উচিৎ।